গ্রাম অঞ্চল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বন্য প্রাণী শিয়াল
তৈয়বুর রহমান কিশোর, বোয়ালমারী (ফরিদপুর): গ্রাম অঞ্চল থেকে দিনি দিন হারিয়ে যাচ্ছে বন্য প্রাণী শিয়াল। আগের মতো এখন আর দেখা মিলে না শিয়ালের। দেশে জনসংখ্যা বাড়ার ফলে বিভিন্ন গাছের বাগান, ঝোপ ঝাড় কেটে ঘর বাড়ি নির্মাণের কারনে এই বন্য প্রাণী বিলপ্তির পথে আজ। এক সময় গ্রাম গঞ্জের মানুষগুলোর ভোর রাতের ঘুম ভাঙ্গতো শিয়ালের ডাকে। শিয়ালের কাছ থেকে হাঁস মুরগি রক্ষা করতে রাতে মুরগির খোপে তালা পর্যন্ত দিত। বর্তমানে যে এলাকায় গোরস্থান আছে সেই গোরস্থানের কাছে মাঝে মধ্যে দুই একটি শিয়ালের দেখা মিলে।
কালিনগর গ্রামের বিনয় বিশ্বাস ও মাফি মোল্যা বলেন, এক সময় রাত ভোর হলেই বাড়ির চারিকে শুধু শিয়ালের ডাক শুনা যেত। আর সন্ধ্যা লাগলেই বাড়ির পাশে, রাস্তায় দেখা মিলতো শিয়ালের। বহু বছর ধরে শিয়ালের ডাক শুনি না। তাদের দেখা মিলা কষ্ট সাধ্য। তবে যে এলাকায় গোরস্থান রয়েছে ওই গোরস্থানের কাছে মাঝে মধ্যে দুই একটা শিয়াল দেখা যায়। তারা আরো বলেন, বাগানে বসবাস করতো শিয়াল। আগে গ্রামগঞ্জে প্রচুর বাগান ছিল তাই শিয়ালও ছিল প্রচুর। মানুষ বাগান উজাড় করে ঘর বাড়ি নির্মাণ করার কারণে এই বন্য প্রাণী শিয়াল, বন বিড়াল, বেজি, নাফারু, বাগদাসা সহ সব ধরণের বন্য প্রাণীই আজ বিলপ্তির পথে। এখন যা দুই একটা দেখা যায় মাঝে মধ্যে, ভবিষ্যতে বন্য প্রাণীর দেখা মিলবে না।
শেখর ইউনিয়নের চাপখন্ড গ্রামের বিন্দু বিশ্বাস বলেন, দোপ এলাকায় বসবাস করি। আগে পাটের মৌসুমে শিয়ালের উৎপাতে রাতে ঘুম আসতো না। আর রাত ভোর হলে তাদের ডাকে কেউ ঘুমাতে পারতো না। এখন আর শিয়ালের ডাক শুনি না। যখন বন্যা হতো তখন বন্য প্রাণীরা উচু ভিটের বাগানগুলোতে আশ্রয় নিত। বন্যা চলে গেলে মাঠে এসে বসবাস করতো। এখন তো বন্য কোন প্রাণীর দেখা মিলে না। প্রায় সকল বন্য প্রাণীই বিলপ্তির পথে।
বোয়ালমারী উপজেলা বন কর্মকর্তা দিন মোহাম্মদ বলেন, গ্রাম অঞ্চল থেকে ঝোপ ঝাড় কমে যায়ায় বন্য প্রাণী কমে গেছে। বন্য প্রাণী তো ঝোপ ঝাড়ে বসবাস করে। যার কারণে এখন আর তেমন শিয়ালসহ বন্য প্রাণীর দেখা মিলে না।