কারণ দর্শানো নোটিশ ছাড়াই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে করোনা কালিন শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসির ফরম পূরণের শিক্ষার্থীদের ফেরতকৃত টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার দাদাপুর ইউনিয়নের ভারদীর পাশ^বর্তী বঙ্গেরশ^দী সম্মিলনী মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলামকে কারন দর্শানো নোটিশ ছাড়াই সাময়িক বরখাস্তের একটি চিঠি বুধবার (১৯ জুন) সকালে হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. ফিরোজ আহম্মেদ ও প্রধান শিক্ষক আ. মান্নান মল্লিক। কি কারণে তাকে বহিস্কার করা হয়েছে তা তাকে জানো হয়নি এবং বহিস্কারের চিঠিতেও উল্লেখ করা হয়নি।
ছিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে আপনার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্তের স্বার্থে ও ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আপনাকে আগামী (০১.০৭.২০২৪) তারিখ হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, তাকে কোন কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়নি। কি কারণে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে তাও সে জানে না।
তিনি আরো বলেন, ২০২১ সালে করোনা কালিন সময় বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দেয় শিক্ষা বোর্ড। ওই ফেরত দেওয়া টাকা শিক্ষার্থীদের ফেরত না দিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. মান্নান মল্লিক পুরো টাকাই আত্মসাত করেছেন। আমি বিভিন্ন সময় ওই টাকা শিক্ষার্থীদের ফেরত দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে চাপ সৃষ্টি করেছি। ২০২১ সালের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে আমার নিজের মেয়েও ছিল।
এ ছাড়া বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি মো. ফিরোজ আহম্মেদের ভাই আবুল খায়ের মিয়া, এর আগে বিদ্যালয়ের সভাপতি থাকা কালিন সময় আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। ওই ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক চূড়ান্ত বরখাস্তের বিষয়টি ২০১৯ সালে বোর্ডের আপিল এন্ড আরবিট্রেশন অনুমোদন করেনি। বোর্ডের আপিল এন্ড আরবিট্রেশন কিমিটর সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্বপদে পুনবহাল করেন এবং পত্র ইস্যুর থেকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রাপ্য বকেয়া পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত দেন।
তিনি আরো বলেন, সে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৮১ টাকা ৮৩ পয়সা বকেয়ার টাকার জন্য প্রধান শিক্ষককে দিতে বলি। এ ছাড়া চলতি বছরের ৯ জুলাই প্রধান শিক্ষক আ. মান্নান মল্লিক অবসরে যাবে। সভাপতি যাতে অন্য একজনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বানিয়ে যেমন খুশি তেমন ভাবে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দিতে পারে তাই হয় তো আমাকে নিয়ম ছাড়াই সাময়িক বরখাস্ত করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. মান্নান মল্লিক বলেন, করোনা কালিন সময় স্কুলের এসএসসি শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের যে টাকা বোর্ড ফেরত দিয়েছেন সে টাকা ব্যাংকে রয়েছে। সময় সুযোগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। সহকারী প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের বিষয় কমিটিই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সিরাজুল ইসলাম যে, টাকা স্কুলের কাছে পাবে তা দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, সিরাজুল ইসলাম স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে রাজনীতি ঢুকাচ্ছিল। সে অভিযোগ পেয়েছি। তাকে বিধি মোতাবেক সাময়িক বরখাস্ত করেছি। ম্যানেজিং কমিটির তিন সদস্যকে দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামি দুই মাসের ভেতর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত না দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা ছিল না।