কোটা বিরোধী আন্দোলনে উত্তপ্ত রাবি- হল থেকে মিললো অস্ত্র
রাজশাহী ব্যুরো: সারাদেশে কোটা বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজশাহীতে আন্দোলন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৬ জুন) দুপুর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে একে একে জড়ো হতে থাকে সাধারন শিক্ষার্থীরা। এসময় পুলিশ বাধা দিতে চাইলেও পরিস্থিতি বুঝতে পেরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে যায়। পরে আস্তে আস্তে বৃহত্তর আন্দোলনে রূপ নেয়। সবাই একত্রিত হয় নগরীর জিরো পয়েন্টে।
এসময় জিরো পয়েন্টে পিকেটিং না হলে, বড় ধরনের পিকেটিং করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাবি আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কম থাকায় তাদের উপর হামলা চালায় রাবি ছত্রলীগের কর্মীরা। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যোগ দিলে পালিয়ে যায় ছাত্রলীগের কর্মীরা। শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমান হলে আশ্রয় নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেখানেও ধাওয়া করে শিক্ষার্থীরা। পরে পরিবেশ বুঝতে পেরে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে ছাত্রলীগ।
এসময় বঙ্গবন্ধু হলে থাকা ১৫-২০ টি মটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়াও হামলাকারি ছাত্রলীগ কর্মীদের বিছানার তোসক, বালিশ, আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পুরো ক্যাম্পাসে লাঠি মিছিল করে এবং মেইন গেটের সামনে অবস্থান নেয়।
এদিকে রাবিতে হামলার খবর পেয়ে জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেয়া শিক্ষার্থীরা রাবি’র দিকে অগ্রসর হয়। এমসয় নগরীর তালাইমারি মোড়ে আবারও ছাত্রলীগ ও পুলিশের সাথে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে দুই জন শিক্ষার্থী আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। আহত সেই শিক্ষার্থীরা হলেন ইসলাম মেডিকেল কলেজের আইএসসি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র মাহিদ ও বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র তৌফিক।
এরপর ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক বন্ধ করে রাস্তার উপর অবস্থান নেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় রাবি’র ইসলামিক শিক্ষা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সালাউদ্দিনের নেতৃত্ব কোটা বাতিলের দাবিতে স্লোগানে মুখরিত রাবি’র মেইন গেট।
আন্দোলন চলাকালিন সময় বঙ্গবন্ধু হল থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি অস্ত্রগুলি রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু’র। কারন মোস্তাফিজুর সেই হলে থাকেন। পরে উদ্ধার করা সেই অস্ত্রগুলি প্রশাসনকে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া করা হয়। আন্দোলন থেকে ছাত্রলীগকে অবান্তর ও নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়।
এসময় কয়েকটি শর্ত দেয় আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া সালাউদ্দন। ১. প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলেছেন, সেই কথা ফিরিয়ে নিতে হবে। ২.কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। ৩. ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। এসময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের পাশাপাশি রাবি ক্যাম্পাসে কয়েক প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।