রাজশাহী ব্যুরো: একদিকে সরকার ঘোষিত কারফিউ, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের সরকার পতনের ডাকে উত্তাল রাজপথ। সব মিলিয়ে সকাল থেকে রাজশাহী মহানগরীতে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছিল জনমনে।
বেলা বাড়ার সাথে সাথে আন্দোলনকারিদের ঠেকাতে প্রস্তুত পুলিশ, আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। আন্দোলনকারিরা মিছিল নিয়ে নগরীর শাহমুখদুম কলেজের সামনে আসলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে প্রায় শতাধিক (রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত) আহত ও গুলিবিদ্ধ প্রায় অর্ধশত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে প্রায় ১৫ জন আশঙ্কাজনক রয়েছে। তবে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এক শিবির কর্মী জানান ঘটনাস্থলে ৫ জনের মাথায় গুলি লেগেছে এবং সেখানেই তারা মৃত্যকোলে ঢলে পড়ে। আমাদের আরও অনেক কর্মী রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে, আবার অনেকে বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সোমবার (৫ আগষ্ট) সকাল ১১ টার দিকে তালাইমারি এলাকায় সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারিরা৷ আন্দোলনকারিরা নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট মিছিল নিয়ে এগিয়ে আসলে পুলিশ – আওয়ামীলীগ কর্মীদের সাথে তুমুল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসময় নিরস্ত্র বিক্ষোভকারিদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ ও যুবলীগের কর্মীরা। পুলিশের টিয়ারসেল, রাবার বুলেট, তাজা বুলেট ও আওয়ামী লীগের ছুড়া গুলিতে অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত ও নিহত হয়েছে৷ পরে আওয়ামীলীগের অস্ত্রের মুখে টিকতে পারেনি আন্দোলনকারিরা। অবশেষে পিছু হটতে বাধ্য হয় তাদের। পরে তারা পালিয়ে যায়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর শান্ত হয় পুরো এলাকা। তবে ঘটনাস্থলের আশেপাশে একজন আন্দোলনকারীর মরদেহ পাওয়া যায়। তার কাধে হাসুয়ার কোপ দেখা গেছে। প্রাথমিকভাবে মৃত্যের নাম সবুজ জানা গেছে।
এদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন ডা: জানান, আজকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ জনকে আহতাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে অর্ধশতই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়৷ এদিকে এই সংঘর্ষের পর থেকে পুরো রাজশাহী জুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।