চাচার বিরুদ্ধে ভাতিজিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ছাগলে ধান খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাচার বিরুদ্ধে ভাতিজীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের দরিহরিহরনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হামিদা ওই গ্রামের ইস্রাফিল মোল্যার মেয়ে ও সালথা উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামের হাসিবুল সরদারের স্ত্রী। নিহতের ৮ মাসের একটি ছেলে রয়েছে।
জানা যায়, সোমবার (১২.০৮.২৪) বিকেলে ইস্রাফিল মোল্যার ছাগল বাড়ির পাশে একটি মাঠ থেকে ধান খেয়েছে অভিযোগ করে। সে ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে চাচতো ভাই শাহাদত ও তাঁর স্ত্রী, ছেলে ও ভাই ভাতিজাদের নিয়ে হামলা চালিয়ে ইস্রাফিলের মেয়ে হামিদাসহ অন্যদের এলোপাথাড়ি ভাবে মারপিট করে মারাত্বক জখম করে। গুরুতর আহত হামিদাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ঞাসপাতালে ভর্তি করলে মঙ্গলবার (১৩.০৮.২৪) বিকেলে সে মারা যায়।
নিহতের ছোট বোন অন্তরা জানায়, আমার ছোট বোন মহিমা সোমবার বিকেলে মাঠ থেকে আমাদের ছাগল আনতে যায়। এসময় শাহাদত চাচার ছাগল পাশের একটি ক্ষেতে ধান খাচ্ছিল। তখন ছোট বোন শাহাদতের স্ত্রী ভানু বেগমকে দেখিয়ে বলছিল চাচি ধান খায় আপনাদের ছাগল, আর দোষ হয় আমাদের ছাগলের। একথা বলার পরে চাচি ছোট বোনকে ছাগলের খুঁটো উঠিয়ে মারপিট করে। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় চাচা ও চাচি লোকজন এনে পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে আমাদের গুরুতর আহত করে এবং আমার বোন হামিদাকে ঘর থেকে টেনে লোহার রড, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় বোনকে উদ্ধার করে ফরিদপুর হাসপাতালে নিয়ে যাই। বুকের হাড় ভেঙে যাওয়া ও মাথায় আঘাত লাগার কারণে আমার বোন মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
নিহতের মা রিজিয়া বেগম জানান, আমার ৬ মেয়ে, ছেলে না থাকায় ওরা আমাদের উপর হামলা চালিয়ে চোখের সামনে মেয়েকে পিটিয়ে মেরে ফেলছে। তিনি অভিযোগ করেন, শাহাদত মোল্যা (৫৫), তাঁর স্ত্রী ভানু বেগম, ছেলে উজ্জল (৩০), একই গ্রামের মকসেদের ছেলে ইউনুস (৪৯), তায়েব মোল্যা (৫০), তাঁর স্ত্রী আনজিরা (৩৯), চাঁন মিয়া (৫৬), তাঁর স্ত্রী জুলেখা, ইউনুসের স্ত্রী রুবিয়া বেগম, ছেলে লাদেন মোল্যাসহ (২২) ৫—৬ জন দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়।
নিহতের স্বামী হাসিবুল সরদার বলেন, আমার স্ত্রী ও ৮ মাসের ছেলেকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে আসি। তবে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ওর চাচারা আমার স্ত্রীকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। এখন ৮ মাসের বাচ্চাকে মা ছাড়া আমি কেমনে বাঁচাবো। স্ত্রীকে হত্যার জন্য থানায় মামলা করা হবে। প্রশাসনের কাছে আমার দাবী যারা আমার স্ত্রীকে নির্মম ভাবে পিটিয়ে মেরেছে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দেওয়া হোক।
হত্যাকান্ডে অভিযুক্তরা সকলে পলাতক রয়েছে। তাদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ফরিদপুর হাসপাতালে ওই মহিলা মারা গেছে। কোতোয়ালী থানা লাশটি মর্গে নিয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আমরা গিয়েছি। তবে এখনো নিহতের পরিবার লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে মামলা করে আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
Print [1]