ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , আজকের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৫

ভেড়ামারাতে লোন দেওয়ার নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা

ভেড়ামারাতে লোন দেওয়ার নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা

হেলাল মজুমদার কুষ্টিয়া ঋণের জালে বন্দি কয়েক শত পরিবার। জড়িয়ে পড়েছেন সুদি ব্যবসায়ী চক্রের ফাঁদে। চড়া সুদে নেওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ করছে। শিলার ঋণ চক্রে আটকা পড়েছে বেশিরভাগ মানুষ। কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলায় ধরমপুর ইউনিয়নে উত্তর ভবানীপুর এলাকায় ঋণ নিয়ে প্রতারণা শিকার হয়েছেন অনেকে। ঋণ বোঝা সইতে না পেরে তাদের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব পরিবারের মধ্যে অনেকে সাংবাদিকদের শরণাপন্ন হন। শিলা থেকে ঋণ নেওয়া মালেকা বলেন, শিলার কাছে থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। তার সাথে ২৫ হাজার টাকা সুদ বাবদ মোট ৭৫ হাজার টাকা ১ বছরে পরিশোধ করতে হবে এই শর্তে ঋণ নেয়। কিন্তু আমি ১ বছরে মাত্র ২৫ হাজার টাকা ঋণ শোধ করতে পারি। পরের বছরে বাকি ৫০ হাজার টাকা ঋণ পরিশোধ করি। কিন্তু তারপরও থেমে যাননি ঋণ ব্যবসায়ী শিলা। এরপর তৈরি করেন স্ট্যাম্প। সময় মত ঋণের টাকা পরিশোধ না করার কারণে অতিরিক্ত সুদ ধরে প্রতি বছর জোর করে বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন তুলেন শিলা। সেই লোনের টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য করেন মালেকাকে। আর এইভাবে চলতে থাকে ৬-৭ বছর ধরে। মাত্র ৫০ হাজার টাকার কারণে প্রতি বছরে ১ লক্ষ টাকা করে আদায় করেন শিলা। না দিতে চাইলে জোরপূর্বক ভয়-ভীতি দেখিয়ে আদায় করতেন। সাবিনা নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, শিলার কাছে থেকে আমি ৩০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। কিস্তি দিতে না পারায় বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন তুলেন শিলা। তারপরে মাসে ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করে প্রায় ৫-৬ বছর ধরে কিস্তি দিতে বাধ্য করায় আমাকে। এরপর আমি এলাকা ছেড়ে অন্যথায় পালিয়ে যায়। তারপরে রক্ষা হয়নি সেখান থেকেও ধরে নিয়ে এসে ৬ লক্ষ টাকার জোরপূর্বভাবে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। ডলি খাতুন নামে আর একজন বলেন, শিলার কাছে থেকে ছেলেকে অটো কিনে দেবে বলে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। সেই ঋণের টাকা পরিশোধ হওয়ার পরেও আমার কাছে টাকা চাই। এবং টাকা না দিতে চাইলে অত্যাচার করে ভয় ভীতি দেখাতে থাকে। সেই কারণে আমি আমার ছেলের সাথে বাসা নিয়ে কুষ্টিয়াতে থাকতে শুরু করি। একপর্যায়ে আমি বাসা ছেড়ে আবার আমার নিজের বাড়িতে চলে আসি। তারপরও তারা জেনে ফেলাই আমাকে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে দেখা করতে বলে আমি দেখা না করাই আমাকে বেঁধে মারবে হুমকি ধামকি দেখায়। এক পর্যায়ে আমার কাছ থেকে তিনটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। আমার ছেলে কুষ্টিয়াতে পড়াশোনা করে তাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে এসে স্ট্যাম্প এর কথা বলি। ছেলেকে স্ট্যাম্পে কি লেখা আছে পড়তে বলি ছেলে বলে এই ৩ টা স্টাম্পে ৫ লক্ষ টাকা তুমি লোন নিয়েছো এটা লেখা আছে। কোহিনুর নামে আরেকজন বলেন, শিলার কাছে থেকে ২০ হাজার টাকা লোন নিয়েছিলাম। কিছুদিন পরে বাড়িতে এসে আমার কাছে স্ট্যাম্প নিয়ে এসে স্বাক্ষর করতে বলে আমি স্ট্যাম্পে ৮০ হাজার টাকার কথা লেখা থাকাই আমি ওই স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে রাজি না হওয়ায় আমাকে এই মুহূর্তে টাকা ফেরত দিতে হবে। আমি টাকা ফেরত দিতে না পারায় স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এই শিলা বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন তুলে আর আমাকে ওই লোনের কিস্তি টানতে বাধ্য করায়। আমার সাথে ৬ বছর যাবৎ এই ভাবে চলতে থাকে। এই পর্যন্ত আমি প্রায় ৬ লক্ষ টাকা দিয়েছি। আমি এই শিলার হাত থেকে বাঁচতে চায়। শিলা বলেন আমি স্ট্যাম্পের মাধ্যমে টাকা দিয়েছি এক বছরে ৬০ হাজার টাকায় ২৫ হাজার টাকা লাভ নিয়েছি। এর বেশি কারোর কাছ থেকে টাকা নেয় নাই। আমি যাদের টাকা দিয়েছি তাদের সাথে কোন জোর জুলুম করি নাই আমার নামে যেসব কথা বলছে সব কিছু মিথ্যা।।