আর কোন সরকার যেন ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে: রাজশাহীতে জোনায়েদ সাকি
রাজশাহী ব্যুরো: গণঅভ্যূত্থানের ৩ মাস পার হয়েছে। স্বৈরাচার চলে গেছে। কিন্তু স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা বদলের খবর কি? দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া, ব্যাংক লোপাট ও বিদেশে টাকা পাচার, বিরোধী সকল দলের ওপর মিথ্যা মামলা, নির্যাতন, খুন-গুম, উন্নয়নের নাম করে কয়েকগুণ বাজেট বাড়িয়ে সরকার দলীয়দের লুটপাট, পুলিশ ও বিচার ব্যবস্থার দলীয়করণ ব্যাপারে জনগণের মধ্যে জমে থাকা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে জনগণ স্রোতের মতো স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে এসেছিলো গণঅভ্যূত্থানে। দেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। এবার সংস্কারের পালা। ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার সরকারের রেখে যাওয়া ভোট ব্যবস্থা সংস্কার করে একজন মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আর কোন সরকার যেন মানুষের ভোটের অধিকার খর্ব করতে না পারে। এমন বক্তব্য দিয়ে রাজশাহীর মঞ্চ কাঁপিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট বড় মসজিদের সামনে গণসংহতি আন্দোলন রাজশাহী জেলা শাখার আয়োজনে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও ভোটের অধিকার বাস্তবায়নে গণসংলাপ করে।
গণসংহতি আন্দোলন রাজশাহীর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুরাদ মোর্শেদ এর সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জননেতা জোনায়দ সাকি। বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জুলহাসনাইন বাবু। কোটা বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে সহস্রাধিক ছাত্র-জনতাকে হত্যাকাণ্ড করেছে ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার হাসিনা সরকার ও তার দোসররা। হাসিনা সরকার নিজেদেরকে টিকিয়ে রাখারও ব্যাপক শেষ চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু জনগণ ১ দফা দাবিতে স্বৈরাচারী হাসিনাকে এদেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। সেই দফায় শুধু হাসিনা সরকারের পদত্যাগই নয়, বরং ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারী ব্যবস্থার বিলোপের দাবি ছিলো।
কিন্তু সেই আকাঙ্ক্ষা কীভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে? কীভাবে তার রোডম্যাপ হতে পারে? ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামরত সকল রাজনৈতিক দলগুলো ১৭ বছরব্যাপী সংগ্রামে নানা নির্যাতন-গুম-খুনের আর মিথ্যা মামলায় ব্যাপক হয়রানিকে থাকার পরেও সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। সাধারণ জনগণও নিজেদের ভোটাধিকার হরণের জাতীয় অপমান, লুটপাট, আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপক নৈরাজ্য, নিরাপত্তাহীনতায় অমানবিক জীবনের মুখোমুখি হয়ে এই গণঅভ্যূত্থানে নিজেদের হিস্যা তৈরি করা হয়েছিল। ছাত্র সমাজের ঐতিহাসিক নেতৃত্বে এই গণঅভ্যূত্থানে বিভিন্ন বিরোধী দলীয় কর্মী-নেতৃত্ব এবং সাধারণ জনগণের ঐক্যবদ্ধ আকাঙ্ক্ষাই তৈরি হয়েছে যে, এই স্বৈরাচারী ব্যবস্থাই যেন আর না থাকে এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের একটি গণতান্ত্রিক রূপান্তর হয়। সেই আশাবাদ তখনই সফল হবে যখন জনগণের মতামতের ভিত্তিতে এই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রূপান্তরের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এসময় গণসংলাপে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষক—ছাত্র, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, শ্রমজীবী, জাতিগত ধমীর্য় প্রতিনিধি ও সাধারণ জনগণ।