রাজশাহী ব্যুরো: শ্রেনী কক্ষের দেয়ালে শিক্ষককে নিয়ে আপত্তিকর কথা লেখা দেখে ক্ষিপ্ত শিক্ষক। কিন্তু কে লিখেছে! বলতে পারছে না কেউ! এমন কান্ডে তৃতীয় শ্রেণীর সকল ছাত্রীকেই বেধড়ক পিটিয়েছেন শিক্ষক। শিশুদের শরীরে বেঁতের আঘাতের দগ দগে চিহ্ন দেখে হতবাক সবাই। এভাবে অন্তত ১৫ ছাত্রীকে পিটিয়েছেন সেই শিক্ষক। তবে তিনি কোন ছাত্রকে মারেননি।
অভিযুক্ত সেই শিক্ষকের নাম আজিজুল হক। তিনি উপজেলার ভাটোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
ঘটনাটি গত ২৪ নভেম্বর (শনিবার) স্কুলে শিক্ষার্থীদের হইচই ও দেয়ালে শিক্ষককে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক লিখা নিয়ে ছাত্রীদের মারধর করা হয়। পরে এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, বিদ্যালয়ের দেয়ালে স্কুলশিক্ষক আজিজুল হককে ব্যাঙ্গ করে কিছু কথা লেখা ছিল। ব্যাঙ্গাত্মক এসব কথা কে লিখেছে তা জানা যায়নি। তাই শ্রেণিকক্ষের সব ছাত্রীকে পিটিয়েছেন তিনি। তবে কোন ছাত্রকে মারধর করা হয়নি। পরে শরীরে এমন আঘাতের চিহ্ন নিয়ে ছাত্রীরা বাড়ি গেলে অভিভাবকেরা তা দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে এক ছাত্রীর বাবা লিখিত অভিযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াতের নিকট। ইউএনও শিক্ষা কর্মকর্তাকে অভিযোগ তদন্ত করতে দেন যথাযথ পদক্ষেদ নেয়ার নির্দেশ দেন।
এঘটনায় সোমবার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আল-মামুন এই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। তবে রোববার তিনি সরেজমিনে অভিযোগের তদন্তও করেন। এতে অভিযোগের সত্যতা পান। আজিজুল হক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছেও অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক আজিজুল হক বলেন, আমি ক্লাস নিলে এই শিক্ষার্থীরা হইচই করে। কিন্তু কয়েকদিন আগে গিয়ে দেখলাম আরেক শিক্ষকের ক্লাসে তারা সুন্দরভাবেই বসে আছে। আমি জানতে চাইলাম আমার ক্লাসে কেন তারা হইচই করে? তখন এক ছাত্রী দাঁড়িয়ে বলে, স্যার আপনি তো একটা গাঁধা স্যার।
অন্য একজন শিক্ষকের সামনে ছাত্রীর মুখে এ কথা শুনে আমার মন খারাপ হয়। পরদিন দেখি শ্রেণিকক্ষের দেয়ালে আমার সম্পর্কে আপত্তিকর কথা লেখা। আমার ধারণা এটা ছাত্রীরাই লিখেছে। তাই ১৫-১৬ জন ছাত্রীকে আমি মেরেছি। এরমধ্যে একজনের শরীরে দাগ বসে গেছে।
এঘটনায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আল-মামুন বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমি গতকাল (রবিবার) স্কুলে গিয়েছিলাম। আমি অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। শিক্ষক আজিজুল হকও লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। তিন দিনের মধ্যে তিনি জবাব দেবেন। তারপর এটি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠাব। তিনিই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।