ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : বুধবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৫ , আজকের সময় : বুধবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৫

বঞ্চিত বগুড়ার বিমানবন্দর শীঘ্রই আলোর মুখ দেখছে 

বঞ্চিত বগুড়ার বিমানবন্দর শীঘ্রই আলোর মুখ দেখছে 

(বগুড়া) প্রতিনিধিঃ প্রায় দুই যুগ পর এবার বগুড়ায় বিমানবন্দরটি শীঘ্রই আলোর মুখ দেখছে। এটি চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তবর্তীকালীন বর্তমান সরকার। এ বিষয়ে বিমান বাহিনীর প্রধান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মকর্তারা সম্ভাব্যতা যাচাই করে আশ্বাস দিয়েছেন। দীর্ঘদিনের লাল ফাইলে বন্দি থাকা বিমানবন্দরটির চালুর খবরে বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে শুরু হয়েছে আনন্দ-উল্লাস।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বগুড়ায় বিমানবন্দর স্থাপনে প্রথম উদ্যোগ নেয়া হয় ১৯৮৭ সালে। কিন্তু নানা জটিলতায় সেই উদ্যোগে ভাটা পড়ে। এরপর ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে বিএনপি সরকারের শেষ দিকে এখানে বিমানবন্দর স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। সে সময় ২২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। এরপর ১৯৯৫ সালে সদর উপজেলার এরুলিয়া এলাকায় বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ১১০ একরজমি অধিগ্রহণ করা হয়। ১৯৯৬ সালে সেখানে প্রকল্পের আওতায় রানওয়ে, কার্যালয় ভবন ও কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ, রাস্তাঘাট নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করা হয়। ওই প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০০০ সালে। ওই সময় থেকে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান ওঠানামা করে। পর্যায়ক্রমে এখানে বেসামরিক বিমান চলাচলের ব্যবস্থা করার কথা ছিল, জানায় জেলা প্রশাসন। এরপর বেশ কয়েক বছর আগে বগুড়া বিমানবন্দর বাণিজ্যিকভাবে চালু করতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চার সদস্যেও কমিটি গঠন করে বেবিচক। বগুড়া-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. রেজাউল করিম বাবলুর প্রস্তাবনার আলোকে সম্ভাব্যতা যাচাইপূর্বক স্বয়ং সম্পূর্ণ প্রতিবেদনসহ মতামত দিতে বলা হয় কমিটিকে। কমিটির সদস্যরা বিমান বন্দরএলাকা পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদনও দাখিল করেন। কিন্তু বগুড়ায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বাড়ি হওয়ায় সেটি আমলে নেয়া হয়নি। এবার সেটিও আমলে নেওয়া হবে। বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা জানান বগুড়া শিল্প, শিক্ষা, ও ব্যবসা-বাণিজ্যে অন্যান্য জেলার চেয়ে অনেক খানি এগিয়ে। তাই বিমানবন্দর চালু হলে শুধু বগুড়া নয় পুরো উত্তরাঞ্চলে উন্নয়নের পরিবর্তন ঘটবে। বিমানবাহিনীর সূত্র বলেছে বাণিজ্যিক বিমানবন্দর হিসেবে চালুর জন্য যাত্রা শুরু করলেও গত প্রায় দুই যুগ ধরে ফ্লাইং ইন্সট্রাকটর স্কুল হিসেবে বিমান বাহিনীতে ব্যবহার হচ্ছে এ বিমানবন্দরটি। এতে রানওয়ে ৪৫০০ ফুট। যা শুধু ছোট আকারের বিমান ওঠানামার জন্য উপযুক্ত। বাণিজ্যিক ভাবে বিমান চলাচলের  জন্য অন্তত ৬০০০ ফুট রানওয়ে দরকার। বিগত সময়ে বাণিজ্যিকভাবে বিমান ওঠানামা নিয়ে একাধিকবার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বিগত সরকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। সম্প্রতি বগুড়া বিমানবন্দর বাণিজ্যিকভাবে চালু করার সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বগুড়া বিমানবন্দরের রানওয়ে পরিদর্শন করেছেন বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানসহ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সহকারী বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল এএসএম ফখরুল ইসলাম, বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর করিব ভুইয়াসহ আরও উর্ধ¦তন অনেকে। পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকে বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান জানান, এটি একটি এয়ারফিল্ড। এখনও এখানে ছোট বিমান নামাতে পারবো। এখানে বিমান ওঠানামা করাতে রানওয়েটি রিকার্পেটিং করাতে হবে। রানওয়ে ৬,০০০ ফুট পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা গেলে দেড় বছরের মধ্যে ছোট  বিমান ওঠানামার জন্য প্র¯তুত করা যাবে এ বিমানবন্দরটিকে। আমরা সরকারের কাছে বিষয়টি জানাবো।