ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫ , আজকের সময় : মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫

বাগমারায় মাড়িয়া কলেজের অধ্যক্ষ ও সভাপতি নিয়ে বিতর্ক, বিভক্ত দুইটি গ্রুপে,

বাগমারায় মাড়িয়া কলেজের অধ্যক্ষ ও সভাপতি নিয়ে বিতর্ক, বিভক্ত দুইটি গ্রুপে

রাজশাহী ব্যুরো: ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার পতনের পর দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের রদবদল লক্ষনীয়। সেই অংশ হিসেবে রদবদল করা হয় বাগমারা উপজেলার মাড়িয়া মহাবিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ ও অধ্যক্ষকে।অধ্যক্ষ আ: রশিদ আওয়ামীলীগের দোষর ছিলেন বলে অভিযোগ ছিল দীর্ঘ দিনের। শুধু তাই নয়, প্রায় ৩০ বছরের চাকরি জীবনে কলেজের নানা অনিয়ম দুর্নীতির ব্যাপারে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ছিলেন তিনি। হাতিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতেও সাহস করেনি। অবশেষে ৫ আগষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর কলেজেটির সাবেক অধ্যক্ষ আ: রশিদ গা ঢাঁকা দেন। এরপর দীর্ঘদিন কলেজে অনুপস্থিত থাকলেও গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হয় চাকরি জীবন। এরপর শুরু হয় অধ্যক্ষের চেয়ার নিয়ে কাড়াকাড়ি। পরে অধ্যক্ষ আ: রশিদ কৌশলে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে গোপনে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দ্বায়িত্ব তুলে দেন আওয়ামী লীগের আরেক দোষর মাহামুদুজ্জামান প্রামানিক’কে। মাহমুদুজ্জামান ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের প্রভাষক। এরপর পরিবর্তন হয় কলেজের সভাপতি। একটি পক্ষের দাবি ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষা বোর্ড থেকে ২৫ মার্চ একটি পরিচালনা কমিটির অনুমোদন করা হয়েছে। যেখানে নতুন সভাপতি করা হয়েছে মাহামুদুজ্জামানের ছোট ভাইয়ের বউ ও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহনাজ বেগম আদুরিকে। এতে চরম আপত্তির মুখে পড়ে আদুরি ও ভাসুর (স্বামীর বড়ভাই) মাহামুদুজ্জামান। শুরু হয় নানা সমালোচনা। অপরদিকে চরম ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে বিএনপি নেত্রী আদুরিকে। কারন তিনি আওয়ামী লীগের হাতে অধ্যক্ষের দ্বায়িত্ব রাখতে চান। অবশেষে ৬ এপ্রিল (রবিবার) কলেজের শিক্ষক কর্মচারীর একটি অংশ ও এলাকাবাসি অনাপত্তি জানালে সেই কমিটি বিলুপ্ত করে সকলের উপস্থিতিতে একটি আহ্বায়ক কমিটি করে কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীরা। সেই সাথে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহামুদুজ্জামানকে পরিবর্তন করে নতুনভাবে দ্বায়িত্ব দেয়া হয় জীব বিজ্ঞানের জেষ্ঠ্য প্রভাষক আরিফুল ইসলামকে। অপরদিকে আহব্বায়ক কমিটির সভাপতি করা বিএনপি নেতা এনামুল হককে। এই নিয়ে কলেজটিতে দুইটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এতে কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম চরম হুমকির মুখে পড়বে বলে ধারনা করছে ঐ এলাকার সচেতন মহল। বিষয়টি নিয়ে বিএনপি নেতা ও কলেজের বর্তমান সভাপতি এনামুল হকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি নিজের ইচ্ছাই হয়নি, সবাই আমাকে দ্বায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছে। আজ (রবিবার) শিক্ষক, কর্মচারী ও এলাকাবাসি মিটিং এ বসে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরে পূর্বের সভাপতি শাহনাজ বেগম আদুরির সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি রাগান্বিত কর্কস কন্ঠে প্রতিবেদকের সাথে কথা বলেন এবং জানান, আজ একদল সন্ত্রাসী কলেজে প্রবেশ করে চরম হট্টোগোল করে। এতে হাতে গুনা কয়েজনকে নিয়ে তারা অধ্যক্ষ পরিবর্তন ও এডহক কমিটি করেছে। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ ও অন্যায়। আমাকে সভাপতি শিক্ষা বোর্ড অনুমোদন দিয়েছে। আমার দ্বায়িত্ব নেয়া মাত্র কয়েকদিন হয়েছে। একটি দুষ্টচক্র এই ধরনের নোংরামি করছে। আমি এখন পর্যন্ত আইনানুযায়ী বৈধ। আশা করি আপনারা সঠিকটা লিখবেন। এসময় অপর পক্ষের নেতাকর্মীদের গালিগালাজ করেন। যার কল রেকর্ড প্রতিবেদকের নিকট সংরক্ষিত রয়েছে। অপরদিকে সাবেক অধ্যক্ষকে বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। পরে বিষয়টি নিয়ে বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ তৌহিদুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, সকালের দিকে মাড়িয়া কলেজ থেকে ফোন করা হয়েছিল। আমি হট্টগোলের খবর পেয়ে কিছু ফোর্স পাঠিয়েছি। পরে শুনলাম পরিবেশ শান্ত এবং সকলের সিদ্ধান্তে একটি এডহক কমিটি করেছে তারা। আপাতত কোন ঝামেলা নাই। একাডেমিক কার্যক্রম নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে প্রতিবেদক ব্যর্থ হয়। কারন তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।