নওগাঁয় ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৩২০টি গবাদীপশু প্রস্তুত ১২ হাজার কোটি টাকা বিক্রির সম্ভাবনা
মোহাম্মদ আককাস আলী: আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে নওগাঁ জেলার ১১টি উপজেলার ছোট-বড় ৩৮ হাজার ৫৭৩টি খামারি তাদের গবাদিপশু প্রস্তুত করেছেন। স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর ১০ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকার পশু বিক্রির আশা করছে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
এ বছর জেলায় কোরবানির জন্য গবাদিপশুর চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৪৩৭টি। আর প্রস্তুত করা হয়েছে ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৩২০টি গবাদীপশু। স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর বাড়তি গবাদিপশু চট্টগ্রাম, সিলেট, ঢাকা ও ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেপারীরা সরাসরি এসে নওগাঁর বিভিন্ন পশুর হাট থেকে গবাদীপশু কিনে নিয়ে যায়। এবারের কোরবানির গরুগুলো খামারে ৫০০-৫৫০ টাকা দরে কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহফুজার রহমান জানান, এবার স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর চার লক্ষাধিক গবাদিপশু উদ্বৃত্ত থাকছে। যা জেলার বিভিন্ন হাটে বিক্রির মাধ্যমে ১০ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা বিক্রির আশা করা হচ্ছে। এবার যেহেতু দেশের বাহির থেকে কোনো গবাদিপশু আমদানি করবে না সরকার, সেহেতু জেলার ছোট-বড় সকল শ্রেণির খামারিরা গবাদিপশুর ভালো একটা দামে বিক্রির মাধ্যমে লাভবান হতে পারবেন। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে যেন কোন ঝামেলা ছাড়াই সুন্দর পরিবেশে নওগাঁর হাটগুলো থেকে গবাদিপশু কিনতে পারেন, সেই লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে প্রাণিসম্পদ দপ্তরও একযোগে কাজ করছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বলেন, পশুর হাটকে কেন্দ্র করে জেলার কোনো সড়ক কিংবা মহাসড়কে যেন কেউ কোনো চাঁদা আদায় করতে না পারে; সেই জন্য জেলা পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া জেলার প্রতিটি হাটের পরিবেশ সুন্দর রাখার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি পোষাকধারী পুলিশের সঙ্গে সাদা পোষাকধারী পুলিশ সদস্যরাও পশুর হাটে দায়িত্ব পালন করবেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল জানান, জেলার হাটগুলোতে যেন কেউ গবাদিপশুসহ সকল পণ্যের অতিরিক্ত খাজনা আদায় করতে না পারে, সেই লক্ষ্যে সারা বছরই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলমান রয়েছে। তবে কোরবানির সময় কোনো চক্র যেন কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়ে কোনো ধরনের অরাজকতার সৃষ্টি করতে না পারে; সেই লক্ষ্যে প্রতিটি হাটে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শুরু করা হয়েছে। এই অভিযান আগামীতে আরও কঠোর করা হবে। কোরবানির পশু ক্রয় ও বিক্রয় সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বিগত সময়ের চেয়ে এবার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা কঠোর পদক্ষেপ হিসেবে মাঠপর্যায়ে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত সব সময় কাজ করবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।