ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫ , আজকের সময় : সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫

বোয়ালমারীতে আওয়ামী সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু আমিন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন বিএনপির সংবাদ সম্মেলন

বোয়ালমারীতে আওয়ামী সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু আমিন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন বিএনপির সংবাদ সম্মেলন

  বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর আওয়ামী সন্ত্রাসী, দখলবাজ, ভূমিদস্যু আমিন বিশ্বাসের মিথ্যা, ভিত্তিহীন প্রপাগাণ্ডা, দখলদারত্ব ও বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে দাদপুর ইউনিয়ন বিএনপি।

রবিবার (১৫ জুন) সকাল সাড়ে দশটার দিকে দাদপুর ইউনিয়নের চিতারবাজারে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক বকুল বিশ্বাসের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে লিখিত বক্তব্য রাখেন বোয়ালমারী  উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল হক বিশ্বাস। লিখিত বক্তব্য তিনি দাবি করেন- বিএনপির প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে তার পরিবার জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। শুধু মাত্র বিএনপির রাজনীতি করার কারণে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দাদপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ভূমিদস্যু, দখলবাজ বাজিতপুর গ্রামের আমিন বিশ্বাসের রোষানল ও আক্রোশ,হামলা- মামলা, নিপিড়ন, নির্যাতনের শিকার হয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তার পরিবার।

কৃষকদল নেতা রেজাউল হক আরও দাবি করেন – আমার ছোট ভাই দাদপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি সালিমুল হক এবং আমার চাচা দাদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক বকুলসহ আমার পরিবার দীর্ঘ সতের বছর যাবত ফ্যাসিস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার দোসর এই আওয়ামী লীগ নেতা তার সন্ত্রাসী বাহিনীর কর্মকাণ্ড অত্যাচারে ব্যাপকভাবে ব্যবসা বাণিজ্য, ভূসম্পত্তি ও শারীরিক -মানসিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।

সে আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে। বাধা দিতে গিয়ে হামলা মামলার শিকার হয়েছি। এই দখলবাজ আমার পৈত্রিক সম্পত্তি মোবারকদিয়া মৌজার ৩৮৬ নং দাগের ২৯ শতাংশ জমির একটি অংশ ৬ শতাংশ জমি আমাদের শরিকগণের নিকট থেকে ক্রয় করে। পরবর্তীতে সে তার ক্রয়কৃত জমির সাথে আমাদের ভাগের ৭ শতাংশ জমি জবর দখল করে নেয়। একই ভাবে বাজিতপুর মৌজার ৩৫ নং দাগে ০.৫ শতাংশ জমি আমার চাচাতো বোনের নিকট থেকে  ক্রয় করি, এই দাগে তারও একটি অংশ রয়েছে সেই সূত্রে আমার ক্রয় কৃত জমিটিও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সে দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করে। আমাদের বাড়ির ২৮৭ নং দাগের তিন শতাংশ জমি তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের আওয়ামী লীগ নেতাদের যোগসাজশে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের হাত করে দখল করে ভবন নির্মাণ করে সে।

৫ আগস্ট স্বৈরশাসক পালিয়ে যাওয়ার পর আমরা আমাদের সম্পত্তি উদ্ধারে সচেষ্ট হলে বর্তমানে সে নানাবিধ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।  সম্প্রতি সে উপজেলার বাইরে থেকে  কয়েকটি অখ্যাত নিউজ পোর্টালের সাংবাদিক ও ইউটিউবার এনে মিথ্যা, ভিত্তিহীন প্রপাগাণ্ডা চালিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। শুধু আমাকে ব্যক্তিগত ভাবেই নয় আমার দল বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এই আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী উঠেপড়ে লেগেছে।

সংবাদ সম্মেলন আরও বক্তব্য রাখেন রাজধানীর পল্টন থানা কৃষক দলের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জাকু, ফরিদপুর মহানগর ওলামাদলের আহবায়ক মো. আকরামুজ্জামান,  দাদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক বকুল, দাদপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি  সালিমুল হক প্রমুখ।

ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি সালিমুল হক বলেন- এই সতের বছর আওয়ামী দোসর আমিন বিশ্বাসের  দাপটে আমি ও আমার পরিবার মুখ খুলতে সাহস পাই নাই।  আমার পরিবারের মূল্যবান সম্পত্তি জবরদস্তি দখল করলেও তৎকালীন থানা পুলিশ আমাদের মামলা গ্রহণ করে নাই। পরে আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে আদালত জমিটির উপর ১৪৪ ধারা নিষেধাজ্ঞা জারি করে।  সে আদালতের নির্দেশনা  ভঙ্গকরে  দখল জারি রেখে ও জমি গুলোর উপর স্থাপনা নির্মাণ করে। এই সন্ত্রাসী টঙ্গীপাড়ার মেয়র মীর্জা মামাকে এনে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাদের প্রাণনাশের হুমকি ধামকি ও বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে।  মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাদের জেলে পাঠায়।  আমরা জেলে থাকা কালিন সে জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করে।   তার অত্যাচারে আমরা এলাকা ছাড়া হয়ে মাঠে ঘাটে রাত্রি যাপন করতে বাধ্য হই। আমার চাচাতো ভাই ব্রাদার তার অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে দেশের বাইরে প্রবাসে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

দাদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক বকুল বিশ্বাস বলেন-  ৫ আগস্টের পর আমরা আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তিসহ ক্রয়কৃত জমি উদ্ধার করতে চেষ্টা করলে সে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ভিত্তিহীন প্রপাগাণ্ডা চালিয়ে আমাদের পরিবার ও বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তার প্রতিটি কথা মিথ্যা ভিত্তিহীন। যা এলাকার প্রতিটি মানুষ জানে। পল্টন কৃষক দলের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জাকু বলেন- বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে সে প্রচার করে বেড়াচ্ছে তার বিরুদ্ধে আমার দল একাধিক মামলা করেছে, সে নাকি জুলাই বিপ্লবে ছাত্র জনতার আন্দোলনের হামলার মামলার আসামি। যদি তাই হয় তাহলে সে বুকচিতিয়ে ঘুরে বেড়ায় কী ভাবে? প্রশাসন তাকে গ্রেপ্তার করেছে না কেনো? আমি আহবান জানাই প্রয়োজনে এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করে সত্য উদ্ঘাটন করে প্রকৃত সত্য দেশের মানুষের নিকট তুলে ধরুন। আর এই দখলবাজ, ভূমিদস্যুর, সন্ত্রাসীর মুখোশ উন্মোচন করুন।  তার মিথ্যা প্রপাগাণ্ডার তীব্র নিন্দা জানাই।  সংবাদ সম্মেলন দাদপুর ইউনিয়ন বিএনপির নানাস্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তারা বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য  এই আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী আমিন বিশ্বাসের বিচার দাবি করেন।