ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২১ , আজকের সময় : শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

পটুয়াখালীর দশমিনা থানার দু’এএসআই সাময়িক বরখাস্ত

দশমিনা(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: থানা হেফাজতে বিষপানে আসামী মৃত্যুর ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলা অভিযোগে দু’এএসআইকে সাময়িক বরখাস্তর নির্দেশ দিয়েছেন পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মাইনুল হাসান। বুধবার সাময়িক বরখাস্ত দু’এএসআই মামুনুর রসিদ ও মাসুম বিল্লাহ জেলা পুলিশ লাইনে যোগদান করেছেন। ঘটনাসূত্রে জানা যায়, জেলার দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া রজ্জবিয়া দাখিল মাদরাসার অখন্ড ভোগদখলীয় জমির অংশ হিস্যায় দখল নিতে স্থানীয় লিটন খানের সাথে বিরোধের সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনায় মাদরাসার সুপার মাওলানা শিহাব উদ্দিন দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোসাঃ তানিয়া ফেরদৌস অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে দশমিনা থানাকে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। ওই ঘটনায় গত বছরের ৬ ডিসেম্বর এএসআই মামুনুর রসিদ ও মাসুম বিল্লাহ অভিযুক্ত লিটনকে আটক করে দশমিনা থানা হেফাজনে আনেন। একই দিনে থানা হেফাজতে থাকা লিটন খান বিষপান করে। অসুস্থ্য লিটন খানকে প্রথমে দশমিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।

ঘটনার দিবাগত রাত সোয়া ১টায় শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিষক্রিয়ায় চিকিৎসারত লিটনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। লিটন খানের বাবা আলাউদ্দিন খান, শশুর মতলেব গাজী, স্ত্রী মাসুদা বেগম, তিন শিশু সন্তান মামুন, রহমান ও জাবেদ স্থানীয় সংবাদকর্মীদের দেয়া বক্তব্যে দাবী করেন, আটকের দিন দুপুরে পরনে লুঙ্গী ও খালি গায়ে ভাত খাওয়া অবস্থায় লিটন খানকে এএসআই মামুন গ্রেফতার করে। খাওয়া শেষ করাতে দেয়ার অনুরোধ করলে এএসআই মামুন লিটনের স্ত্রীকে বলেন থানায় নিয়ে ভালভাল খাওয়ানো হবে।

এ সময় পুলিশি প্রহরায় গোলগলা টিশার্ট ও প্যান্ট পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় লিটন খানকে। থানা হেফাজতে নেবার সময় তল্লাশী করা লিটন খান বিষের বোতল নিয়ে হেফাজতে প্রবেশ অসম্ভব। তাছাড়া বিষপান ঘটনায় মুমূর্ষু অবস্থায় বরিশালে প্রেরণের পরে সন্ধ্যায় পরিবারে খবর দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় সংবাদ প্রকাশিত হলে এএসআই মামুনুর রসিদ ও মাসুম বিল্লাহ একটি মিথ্যা ও জালজালিয়াতি সৃষ্টি সুইসাইডাল নোট উদ্ধারের ঘটনা ঘটায় বলেও পরিবার ও স্বজনদের দাবী। আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়া থানা পুলিশের গ্রেফতারী ঘটনার যথাযথ জবাব পেতে উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের তদন্ত দাবী করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদটি প্রকাশিত হলে পুলিশ সদর দফতর পটুয়াখালী জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুর রহমানকে প্রধান করে সহকারী পুলিশ সুপার শেখ মোঃ বেল্লাল হোসেন ও দশমিনা-গলাচিপা সার্কেল ফারুক হোসেন সহ তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পরে অভিযুক্ত এএসআই মামুনুর রসিদ ও মাসুম বিল্লাহকে সাময়িক বরখাস্তর নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার। দশমিনা থানার ওসি মোঃ জসীম দু’এএসআই সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে জানান, মঙ্গলবার পুলিশ সুপার নির্দেশ দেয়ার পরে বুধবার এএসআই মামুনুর রসিদ ও মাসুম বিল্লাহকে দশমিনা থানা থেকে অবমুক্ত করা হয়েছে।