ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২১ , আজকের সময় : বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

ব্যাপক ঝুঁকিতে দৌলতপুরের নতুন বিদ্যুৎ প্রকল্প

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর-চিলমারী চরঞ্চলে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে খানেকটা স্বস্তির সঞ্চার করেছে। তবে, ৫০ হাজার মানুষের এই ৩৮ গ্রামে দেয়া নতুন সংযোগের একটি প্রবেশদ্বার ভাগজত এলাকায় বিদ্যুৎ প্রকল্পটিকে শুরুতেই ব্যাপক ঝুঁকিতে ফেলেছে রাস্তা নির্মাণের অদ্ভুত এক কৌশল। আর এই ভয়াবহতার সৃষ্টি হয়েছে খোদ সরকারি ব্যবস্থাপনায়।

আলোচ্য অংশে সবেমাত্র স্থাপিত বিদ্যুতের দীর্ঘ লাইনের সবগুলো খুঁটিই রয়েছ ঝুঁকিতে। বিদ্যুৎ উন্নয়নের ওই এলাকায় নতুন আরেকটি উন্নয়ন প্রকল্প একটি মাটির রাস্তা, যেটির দৈর্ঘ্য ক্রমে বাড়বে। নদী পাড়ের চরে মাটি দিয়ে উঁচু করে প্রশস্ত বাঁধ আকৃতির এই রাস্তাটি নির্মাণ করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়। ভাগজত থেকে মূল সড়কের সাথে চরাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের এটিই একমাত্র স্বীকৃত পথ। সংসদ সদস্যের বরাদ্দ খাত থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করছে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়, যেটি নিজেই দেখাশোনা করছেন পিআইও আব্দুল হান্নান, অর্থাৎ রাস্তার প্রকৌশলী, ঠিকাদার ও বরাদ্দ কর্মকর্তা তিনি নিজেই।

প্রকৌশল বিদ্যায় অবহেলা এবং মনগড়া কাজ করায় প্রায় হাফ মাইল দীর্ঘ নতুন এই রাস্তার কারনে রীতিমতো হুমকিতে পড়েছে বিদ্যুৎ সংযোগের অন্তত ৭টি খুঁটি। যে হুমকি আদতে রামকৃষ্ণপুর চরাঞ্চলের পুরো প্রকল্পের জন্যই। সরেজমিনে দেখা যায় উঁচু রাস্তার পাশে নির্দিষ্ট দুরত্ব না মেনেই কোল ঘেঁষে খনন করা হয়েছে রাস্তা নির্মানের প্রয়োজনীয় মাটি, যার কারনে পথের দু’ধারেই সৃষ্টি হয়েছে বড়-বড় খাদ।

যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের স্বার্থে বিনামূল্যে মাটি কাটতে দিয়েছেন ও-ই সকল জমির মালিক। নতুন তোলা বেলে মাটির দু’ধারের খাদে ইতোমধ্যেই ফাটল সৃষ্টি হয়েছে, রাস্তার একপাশ দিয়ে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো আছে চরম অনিরাপদ অবস্থায়। আর স্থানীয়রা তাদের অভিজ্ঞতা থেকে বলছেন– বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তা চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়বে এবং দু’পাশের খাদে রাস্তার মাটি ধ্বসে রাস্তা না টিকে থাকার সম্ভাবনা খুবই বেশি। অপরিকল্পিত খাদ সৃষ্টির কারনে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার উদ্দিন জোয়ার্দার বলেন– রাস্তাটি টেকসই হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই এবং রাস্তার ধারে অপরিকল্পিত ভাবে খোঁড়ার কারনে নতুন বিদ্যুৎ প্রকল্পের খুঁটি গুলো যেকোনো সময় ধ্বসে পড়তে পারে। রাস্তাটির বর্তমান ভিডিও চিত্র দেখে ব্যাপক উদ্বেগ প্রকাশ করেন সরকারি এই প্রকৌশলী।

সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিযুক্ত পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার কে.ই তুহিন জানান, নতুন নির্মান হওয়া মাটির রাস্তার খাদের কারনে ইলেক্ট্রিক পোল ঝুঁকিতে রয়েছে, প্রকল্পটির জন্য এটা খুবই অনিরাপদ হয়ে দাড়িয়েছে। দ্রুত সমাধানের জন্য রাস্তা কর্তৃপক্ষের সাথে তিনি যোগাযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন।

তবে, মনগড়া নিয়মে আগেপিছে না ভেবে নামমাত্র বাস্তবায়নের এই খোঁড়াখুঁড়ি কোন ক্ষতির কারন হবে না বলে একাই মনে করছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান। রাস্তাটি একেবারেই টেকসই নয় স্বীকার করলেও বিদ্যুৎ প্রকল্পের ঝুঁকির কথা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। যদিও রাস্তাটির দু’পাশে সৃষ্টি হওয়া খাদ দৃশ্যমান অনিয়ম বলেই মনে করছেন একাধিক প্রকৌশল সুত্র। সহজবোধ্য ব্যপক ঝুঁকি বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা। ঠিক কি কারনে এমন অদ্ভুত অবকাঠামো নির্মাণ করেছেন পিআইও আব্দুল হান্নান তার উপযুক্ত জবাব মিলেনি। এই কর্মকর্তার অদক্ষতার কারনেই এমন বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে বলে ব্যপক সমালোচনা পাওয়া গেছে।