ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : শনিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২১ , আজকের সময় : শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

দৌলতপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই এর দুর্নীতির অভিযোগ

দৌলতপুর প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া দৌলতপুরে  মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ। দৌলতপুর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে অনুমোদিত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম গেরিলাকে। এনিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছেন এবং ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে অর্থবানিজ্যের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ের বর্তমান বিতর্কিত কমিটির কার্যক্রমকে বন্ধ করার আহবান জানিয়েছেন।

শনিবার সকাল ১০ টার সময় দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই চলাকালে গতকাল শনিবার দুপুরে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে সমবেত বিক্ষুব্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ এ আহবান জানান। ক্ষুব্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ জানিয়েছেন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সুপারিশবিহীন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বেসামরিক গেজেট নিয়মিতকরণের লক্ষ্যে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ সংক্রান্ত যাচাই বাছাই এর জন্য সারা দেশের ন্যায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুরেও একটি কমিটি গঠন করা হয়।

কেন্দ্রীয়ভাবে দৌলতপুর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করা হয় জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার, দৌলতপুর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার ও দৌলতপুর দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম গেরিলাকে। কাউকে না জানিয়ে শুক্রবার রাতে কেন্দ্র অনুমোদিত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম গেরিলাকে বাদ দিয়ে কাউছার আলী নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ওই পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

রাতের আধাঁরে অনুমোদিত সভাপতিকে বাঁদ দেওয়া নিয়ে শনিবার দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে সমবেত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ চরমভাবে ক্ষুব্ধ হোন এবং বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থবানিজ্যের অভিযোগ তুলে এ কমিটির কার্যক্রম বন্ধ করার আহবান জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুক্তিযোদ্ধাগণ জানান, মুক্তিযোদ্ধা যাচাই কমিটির দু’জন সদস্য মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ের নামে এক তালিকায় অর্ন্তভূক্ত সহ যাচাই বাছাইয়ে অংশ নেওয়া সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থবানিজ্য করেছে।

বিতর্কিত সদস্যদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি নির্বচিত করে ওই কমিটির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই করার আহবান জানান। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান জানান, রাতের আধাঁরে কেন্দ্র অনুমোদিত সভাপতি আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম গেরিলাকে বাদ দেওয়া মানে দৌলতপুরে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ের নামে ব্যাপক অর্থ বানিজ্য হচ্ছে। ৬০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

দৌলতপুরে বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির বিতির্কিত ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে নতুন করে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির করার দাবি জানান তিনি।কেন্দ্র অনুমোদিত কমিটি থেকে বাদ পড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম গেরিলা জানান, আমি থাকলে অর্থ বানিজ্য ও দুর্নীতি করা যাবেনা বলে আমাকে ষড়যন্ত্র করে বাদ দেওয়া হয়েছে। শুনছি রাতে আঁধারে ব্যাপক অর্থ লেন দেন হয়েছে, কমিটিতে আমি থাকলে সেটা হতো না।

এরসাথে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জড়িত থাকতে পারে বলে তিনি মনে করেন।দৌলতপুরে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রসঙ্গে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, এখানে কাগজ কথা বলবে। যার কাগজপত্র সঠিক রয়েছে তাকে বাদ দেওয়ারও সুযোগ নেই আবার যার কাগজপত্র ঠিক নেই তাকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করারও সুযোগ নেই। তিনি বলেন, এখানে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমার অফিসের কেউ যদি অনিয়মের সাথে জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে কেন্দ্র অনুমোদিত কমিটি থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম গেরিলাকে বাদ যাওয়ার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে তিনি জানান। যারা মুক্তিযোদ্ধা বানানোর নামে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অবৈধ অর্থের সম্পদ পাহাড় গড়েছেন সেইসব ব্যক্তিদের দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কখনও সুষ্ঠ ও সঠিক হবে না বলে সাধারণ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের অভিমত। উল্লেখ্য, দৌলতপুরে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটিতে রয়েছেন, দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওহাব মোল্লা, হায়দার আলী ও কাউছার আলী।