ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ , আজকের সময় : মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪

অফিস পিওন যখন প্রকৌশলী! অসস্তিতে আরডিএ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ

অফিস পিওন যখন প্রকৌশলী! অসস্তিতে আরডিএ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।


মাজহারুল ইসলাম চপল, রাজশাহীঃ রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) কর্মরত এমএলএসএস মোঃ মিলন হোসেন এর দুর্নীতি ও প্রতারণায় অতিষ্ঠ ঐ দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারিরা।

দীর্ঘদিন থেকে রাজশাহীকে পরিকল্পনা অনুযায়ী উন্নয়নের ধারক হিসেবে কাজ করে আসছে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। সেই সুনাম অক্ষুন্ন রেখে উন্নয়ন কাজ করছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু এই সুনাম নষ্ট হচ্ছে একি দপ্তরের এমএলএসএস মিলন এর কারনে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ২০১২ সালে মুরগী ব্যবসা ছেড়ে আরডিএ ভবনের পিওন বা এমএলএসএস পদে চাকরি নেয় মিলন হোসেন। এর পর থেকে মিলন ও তার পরিবারের খুব দ্রুত পরিবর্তন ঘটতে থাকে। কোটিপতি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়ে মিলন।

বুনতে শুরু করে প্রতারণার জাল। এরপর থেকে শুরু হয় তার প্রতারণা। পাশাপাশি দলীয় ভাবেও তিনি জায়গা করে নেন সুকৌশলে। খুব দ্রুত আরডিএ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতির পদটা রপ্ত করে। সেখানেও তিনি টাকা আত্নসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয় কয়েকজনকে সাথে নিয়ে গোপনে লাইসেন্সধারি কর্মচারী ইউনিয়নের নাম পরিবর্তন করে কর্মচারী লীগ করেন।

এরপর থেকে দলীয় সাইনবোর্ডের পরিচয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন পরিচয় দেয় এই মিলন। কখনও এমএলএসএস কখনও প্রকৌশলী আবার কখনও দলীয় নেতাদের কাছের লোক। সাধারণ মানুষও খুব সহজেই বিশ্বাস করে বসে মিলনকে।

বাড়ির প্ল্যানপাশ করার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতানো, চাকরি দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ , এমনকি বড় অফিসার সেজে একাধিক বিবাহ করা হলো মিলনের মুল কর্মকান্ড। এছাড়াও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ যা আগামী পর্বে তুলে ধরা হবে।

উপরের অভিযোগের কয়েকটি তুলে ধরা হলো। ২০১৮ সালে রাজবাড়ি জেলার ইউসুফ আলীর ছেলে সাকিল আহমেদ ( ৩৫ ) এর নিকট থেকে চাকরি দেওয়ার নামে ৫ লক্ষ টাকা নেয় মিলন। চাকরি দিতে না পারলেও আজও টাকা ফেরত দিতে পারেনি এই এমএলএসএস মিলন।

রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) কর্মরত এমএলএসএস মোঃ মিলন হোসেন।


২০১৮ সালে শিরোইল কলোনীর ৪নং গলির ফজর আলী(৪০) নিকট থেকে বাড়ির প্ল্যানপাশ করার নামে প্রায় ৩০ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু এখানেও কোন কাজ করতে না পারাই টাকা ফেরত না দিয়ে আত্নসাৎ করেন। এছাড়াও বড় জালিয়াতি করে বসে নিজের কর্মস্থলে।

১৯৮০ সালে শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধা ও অধিকার নিয়ে কাজ করার জন্য তৈরি হয় প্রানের সংগঠন কর্মচারি ইউনিয়ন। মিলন হোসেন এমএলএসএস পদে যোগদানের পর সেই সংগঠনের রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার জালিয়াতি করে আরেকটি সংগঠন তৈরি করে নাম দেয় কর্মচারী লীগ।

এবং প্রতি মাসের চাঁদার টাকা আত্মসাৎ করেন। এই বিষয়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি মিলনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যরা। সব মিলিয়ে পুরো আরডিএ কর্তৃপক্ষের সকলকেই দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয়।

বিষয়টি নিয়ে কর্মচারী ইউনিয়নের অর্থাৎ বর্তমান কর্মচারী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসরাফ আলীর সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি বলেন, মিলন রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার জালিয়াতি করেছে এবং ৪ মাসের চাঁদার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আমরা সংবাদ সম্মেলন করেছি এবং এর বিচার চাই। আমাদের চাপে মিলন আবার আগের নামে ফিরিয়ে দিবে বলে কথা দিলেও পরে তা অস্বিকার করেন। তবে এর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা ছাড়বনা।

আরডিএ চেয়ারম্যান মোঃ আনওয়ার হোসেন এর সাথে সাক্ষাৎ করে মিলনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মিলনেন বিষয়ে লোক মারফত জেনেছি কিন্তু কারো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।