ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ , আজকের সময় : মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করে বেদে সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ

বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করে বেদে সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ।


দশমিনা(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায়র বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করে বেদে সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার নারী-পুরুষ। ভাসমান এ সম্প্রদায়ের লোকেরা প্রতিনিয়িত নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্থানী কোন ঠিকানা পাওয়া না গেলেও নৌকায় তাদের বসবাস। জীবিকার জন্য এক এলাকায় থেকে অন্য এলাকায় নৌকায় করে ছুটে চলাই তাদের কাজ।

ছোট নদী বা খালেরতীরে ১ থেকে ১৫ টি নৌকার সারিবদ্ধ ভাবে বেদেরা এখন সড়কপথের পাশে এসে পথে-প্রান্তরে জনগুরুত্বপূর্ন হাটবাজ সংলগ্ন ছোট ছোট ঝুপড়ি ঘর তুলে বসবাস করে। সাপ খেলার পাশাপাশি বেদেনীরা তাবিজ- কবজ নিয়ে ঘুরে বেড়ায় গায়ের মেঠো প্রান্তরে তবে দিন দিন এ সম্প্রদায় সাপ ধরারনেশা বিলুপ্ত হবার পথে। বেঁচে থাকার নিরন্তর সংগ্রামেই আজ তারা ভিন্নপথ বেছে নিচ্ছেন।

তার পরও যারা এ পেশাকে আগলেরেখেছে তাদের জীবন চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। দশমিনা উপজেলার বিভিন্ন খালে রয়েছে এরকম শতাদিক বেদে সম্প্রদায়ের পরিবার। এ সম্প্রদায়ের সাহায্য-সহয়তায় নেই সরকারি-বেসরকারি কোন উদ্যোগ। তারা সবধরনের নগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। তাদের ভোটের রাজনীতিতে কে হারলো বা জিতল সে খবর তারা রাখেনা।

কয়েক শ’ বছর ধরে যাযাবর চরিত্র নিয়ে সমাজ-সভ্যতায় তাদের অংশ গ্রহন। গ্রাম থেকে গ্রাম ঘুরে সন্ধ্যার দিকে ফিরে আসে বহরে। পুরুষরা সরাদিন সন্তান দেখাশোনা করেন। সরদাররা বংশাক্রমেই সরদার হয়। সরদারের দৃষ্টিতে অপরাধ করলে বেদে সমাজে জুতাপেটা,অর্থদন্ডসহ নানা ধরনের শাস্তির বিধান রয়েছে। বেদে বহরের বস্করা জানান,বেদের মধ্যে রয়েছে অনেক উপস্প্রদায়। যেমন মালবৈদ্য, বাজিকর, শালদার, বন্দরওয়ালা, সওদাগার, কুড়িন্দা, হাতলেহাঙ্গা, মিশ্চিয়ারি, গাড়লী।

মালবৈদ্যরা সাপ খেলা দেখায় ও দাতের পোকাতুলে,বজিকররা ম্যাজিক দেখায় ও জাদুটোনাকরে,শালদার মাছধরে,নদী থেকেঝিনুক তলে মুক্তা সংগ্রহ করে, এবং চুরি বিক্রী করে,তবে বেদের যৌতুকবিহীন বিয়েতে নিকাহ্ধসঢ়; রেজিস্ট্রারের প্রয়োজন হয়না। জন মানবহীন দ্ধীপাঞ্চল সোনারচর, রুপারচর,জাহাজমারা,শীলেরচর,চর-পাতিলায় এদের অনেক সময় দেখাযায়। প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় এদের রয়েছে গুরুত্বপূর্ন অবদান এত সব অবদানের পরেও বেদে নামক এই মানবতা সম্প্রদায় আমাদের এই সমাজে মূলধারার অন্তভূক্ত নয়।

নানা সমস্যা-সংকটে এদের আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রেখেছে। এরা এই ভূখন্ডে কয়েক’শ বছরের পুরানো বাসিন্দা হলেও এদের নেই কোন নাগরিক অধিকার। নাগরিক পরিচয় সংকট এদের প্রবল। নাম স্বাক্ষর করতে
পারে এমন লোকের সংখ্যা কম। শিশুদের স্কুলে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া স্থানীয় ঠিকানা না থাকায় এবং ভূমি সমস্যায় এ সম্প্রদায়ের মানুষেরা মানবেতন জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছে।

এ সম্প্রদায়ের মানুষের মৃত্যু হলে আগেরকার দিনে কলাগাছের ভেলায় লাশ ভাসিয়ে দেয়া হতো। আজকের দিনেও নদীর পাড়ে বা কোন পরিতেক্ত ভিটেয় ঠাই মিলে লাশটির। কালের বিবর্তনে বেদে বা মনতা সম্প্রদায় ধীরে ধীরে হারিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।