ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : বুধবার, ৩ মার্চ, ২০২১ , আজকের সময় : সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪

দৌলতপুরে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছচাষে

কুষ্টিয়া দৌলতপুরঃ বায়োফ্লক প্রযুক্তিকে মাছ চাষের একটি আধুনিকতম টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি বলে মনে করা হয়। বায়োফ্লক হলো প্রোটিন সমৃদ্ধ জৈব পদার্থ এবং অণুজীব, যেমন- ডায়াটম, ব্যাকটেরিয়া, প্রোটোজোয়া, অ্যালগি (শেওলা), ফেকাল পিলেট (মাছের মল হতে পারে), জীবদেহের ধ্বংসাবশেষ এবং অন্যান্য অমেরুদন্ডী প্রাণী ইত্যাদির ম্যাক্রো-এগ্রিগেট বা সমন্বয়।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে কয়েক জন শিক্ষিত বেকার যুবক প্রথম বারের মত শুরু করেছে বায়োফ্লক বা ঘরোয়া পদ্ধতিতে মাছ চাষ। উদ্যোক্তারা নিজ বাড়ীর আঙ্গিনায় আবার কেউ বাড়ীর ছাদে ছোট ছোট ট্যাংক বসিয়ে অল্প সময় ও স্বল্প খরচে অধিক মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হওয়ায় যুবকদের মাঝে এই বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ।

ইউটিউব চ্যানেলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষের আধুনিক পদ্ধতি ‘বায়োফ্লক’ সম্পর্কে জানার স্বল্প পরিসরে শুরু করে চার-পাঁচ মাসেই ভালো সাফল্য পেয়েছেন । তেলাপিয়া, শিং, মাগুর, পাবদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করার পরিকল্পনাও করছেন তারা। পুকুর কেটে বা অন্যের পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ, আর বহু রকমের ঝুট-ঝামেলা কাটিয়ে লাভের অংশ অনেকটায় কম হওয়ায় তারা বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ কাঙ্খিত সাফল্য বয়ে আনতে পারে বলে মনে করেন এই তরুণ উদ্যোক্তারা।

উপজেলার গোলাবাড়ীয়া এলাকার শিক্ষিত যুবক এ্যডভোকেট শিহাব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করে বেকার বসে না থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে নিজ বাড়ীর আঙ্গিনায় দুটি ৭৫ হাজার লিটার ট্যাংকে ৫০ হাজার তেলাপিয়া মাছের পোনা ছেড়ে মাছ চাষ শুরু করেন, আশানুরুপ লাভের পাশাপাশি এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য নানা রকম পরামর্শ দিয়ে আসছেন এই যুবক।

একই এলাকার শাহিনুর রহমানের ৫০হাজার লিটার ট্যাংকে ৪০ হাজার তেলাপিয়া মাছের পোনা ও টেক্্রটাইল ইঞ্জিনিয়ার শ্বপনের বাড়ীর ছাদে ১০হাজার লিটার ট্যাংকে ৩৬ হাজার তেলাপিয়া মাছের পোনা ছেড়ে মাছের চাষ করছেন, তারা বলেন অন্যের অধীনে চাকুরি করে নিজের স্বাধীনতাকে বিলিন নাকরে নিজ বাড়ীর আঙ্গিনায় প্রথম প্রজেক্ট হিসেবে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ, প্রাথমিক অবস্থায় খরচটা একটু বেশি হলেও লাভবান হতে পারবেন বলে জানান এই উদ্যোক্তারা।

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস কর্মকর্তা-দৌলতপুর খোন্দকার শহিদুর রহমান জানান,বায়োফ্লক পদ্ধতিতে বেশি ঘনত্বে মাছ চাষ করা সম্ভব, যেখানে খাদ্য খরচ প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় অনেক কম এবং মাছের উৎপাদন হার পুকুর বা জলাশয়ে মাছ চাষের চেয়ে অনেক গুণে বেশি। তাই তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়ার কথা জানান তিনি।

দৌলতপুরে প্রায় ১০-১২ টি বায়োফ্লক মাছের খামার গড়ে উঠেছে মৎস্য অফিসের পরামর্শ নিয়ে। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে দেশে আমিষের চাহিদা পুরনের পাশাপাশি বেকারত্ব দূরীকরণের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।