ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : সোমবার, ২২ মার্চ, ২০২১ , আজকের সময় : মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪

রাজশাহীর বাঘায় কাগজের ঠোংগা বানিয়ে স্বাবলম্বি অর্ধ শতাধিক নারী

রাজশাহীর বাঘায় কাগজের ঠোংগা বানিয়ে স্বাবলম্বি অর্ধ শতাধিক নারী।


সাজ্জাদ মাহমুদ সুইট বাঘা ( রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় সমাজের অসহায় নারীরা তৈরী করছেন কাগজের ঠোংগা।  এতে ফিরে এসেছে তাদের সাংসারিক স্বচ্ছলতা। মশিদপুর গ্রামের প্রায় ৫০ জন নারী কাগজের ঠোংগা তৈরী করছে সংসারের কাজের পাশাপাশি। এ সমস্ত হতদরিদ্র মহিলাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে বাবুল হোসেন নামের এক যুবক।

অসহায় জীবনের গল্প শোনালেন বেশ কিছু অসহায় নারী। যারা এখন সকলেই সাংসারিক ভাবে স্বাবলম্বি। এ সকল ঠোংগা তৈরীতে পূর্বে কোন অভিজ্ঞতা ছিল না তাদের।পার্শ্ববর্তী খায়েরহাট গ্রামের বাবুল হোসেন কয়েক বছর আগে এই গ্রামে ছোট একটি রুম ভাড়া নিয়ে নিজেয় তৈরী করত কাগজের বিভিন্ন আকারের ঠোংগা। আস্তে-ধীরে জিনিসটা সারা ফেলে এলাকায়।

আগ্রহী হয় দুই এক জন অসহায় নারী। বাবুলের শেখানো নিয়মে তৈরী করতে থাকেন ঠোংগা। এই গ্রামে এখন প্রায় ৫০ জন নারী ঠোংগা তৈরীর কাজ করছে। এসকল মহিলারা প্রতি মাসে প্রায় ৫-৬ মন ঠোংগা তৈরী করতে পারে সংসারের কাজের পাশাপাশি। তাদের ঠোংগা তৈরীর কাচামাল ( কাগজ, আঠা, দড়ি) সরবরাহ করে ঠোংগা ব্যবসায়ী বাবুল। প্রতি মন ঠোংগা তৈরী জন্য কমিশন দেওয়া হয় ৩৫০ টাকা। যা মাস শেষে প্রায় দুই হাজার টাকায় এসে দারায়। যা দিয়ে তার সংসার চলছে। বাঁচতে পারছেন আত্ম সম্মান নিয়ে।

বিমলা বেগম জানান, এখানে যারা কাজ পেয়েছেন তারা সকলেই অসহায় হতদরিদ্র আগে তাদের মত মহিলাদের কর্মসংস্থানের জন্য ঢাকাসহ দেশের দুরদুরান্তের গার্মেন্টস সহ বিভিন্ন কলকারখানায় যেতে হতো। কিন্তু এখন সংখ্যায় কম হলেও তারা বেশ কিছু মহিলা সাংসারিক কাজের পাশাপাশি এখানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছেন।

সহিদা বেগম জানান, সমাজে তার মত অসহায় মেয়েদের সংখ্যা কম নয়। কিন্তু শত অভাব অনটনের মধ্যেও অনেকে কাজ করতে এলাকা ছেড়ে দুরে কোথাও যেতে পারেন না। যে কারণে সরকারী উদ্যোগে অথবা বিত্তবান লোকেরা যদি এমন মফস্বল পর্যায়ে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তাহলে অসহায় নারীদের কর্মসংস্থান হবে। তাদেরকে অন্যের ঘাড়ের বোঝা হতে হবে না।

ঠোংগা ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন বলেন, এখানে যারা কাজ করেন তাদের কাজ খুব প্রয়োজন ছিল। তারা সকলেই মনে করেন প্রতিষ্ঠান টিকে থাকলে তাদের কাজ থাকবে। ফলে তারা নিজেদের সংসারের কাজের মত যত্নশীলভাবে কাজ করেন। আমি তাদের সারবিক সহায়তা করে থাকি। এছাড়াও এখানে যারা কাজ করে কয়েকজন ছাড়া অধিকাংশই সমাজের অসহায় নারী। তিনি আরো বলেন, প্রতি কেজি ঠোংগা তৈরীতে ৩০ টাকা খরচ হয় আমার, বিক্রি করি ৩২-৩৫ টাকায়। মাসে খরচ বাদে ১০-১২ হাজার টাকা আয় করি যা দিয়ে পরিবার পরিজনদের নিয়ে স্বচ্ছলতার সাথে চলতে পারি।