ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : সোমবার, ২২ মার্চ, ২০২১ , আজকের সময় : রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

পটুয়াখালীতে যৌতুকের বলি হলো ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ

পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর ইটবাড়িয়া ইউনিয়ানের দূর্গাপুর গ্রামে থেকে সকাল ৯ টায় তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা মোসা সুমাইয়া (১৯) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সুমাইয়া মা সাহিনুর বেগম এর দাবী তার মেয়েকে যৌতুকের জন্য হত্যা করা হয়েছে। শ্বশুর বাড়ির লোকেরা জানায় ভূতে মেরেছে।

জানা যায়, পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়ানের খলিশাখালী গ্রামের প্রতিবন্ধী মোঃ কালাম হাং এর মেয়ে সুমাইয়া এর সঙ্গে পারিবারিক ভাবে ৬ মাস আগে একই উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়ানের দূর্গাপুর গ্রামের মুজাই মৃধার ছেলে কাওসার মৃধার বিয়ে হয়। বিয়েতে যৌতুক হিসেবে কাওসার মৃধার গলার চেইন, মেয়র গলার জিনিস, হাতের জিনিস সহ আসবাবপত্র সবই দেয়া হয়।

তার কিছু দিন পরে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন কাওসার । নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে ২০ হাজর টাকাই দেয় সুমাইয়া এর পরিবার। পরে আবারও স্ত্রী ও তার পরিবারের কাছে যৌতুক হিসেবে আটো গাড়ি দাবি করেন কাওসার । না পেয়ে স্ত্রীর উপর চলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।

নিহত সুমাইয়া এর মা সাহিনুর বেগম জানায়, যখন যা চইছে সবই দিয়েছি যাতে মায়েটা সুখে থাকে। আটো গাড়ি চাইছে তাও স্বিকার করছি। টাকা জোগার করে কিনে দিবো বলছি। আমরা গরীব মানুষ চাওয়ার সাথে সাথে কিনে দিতে পারিনা ওর বাবা প্রতিবন্ধী জেলা প্রশাসক ভবনের সামনে বাদম বিক্রি তাতে যে আয় হয় তাতেই আমাদের সংসার চলে। গাড়ির জন্য আমার মেয়েকে অনেক নির্যাতন করতো।

বুঝতে পেরে ধার-কর্জ করে কিছু টাকা জোগাড় করেছি আর কিছু টাকা হলেই কিনে দিতে পারতাম। সময় মতো গাড়িটা কিনে দিতে পারলে আমার মেয়ের মৃত্যু মুখ দেখতে হইতে না। তাছাড়া বিয়ের আগে থেকেই ওই গ্রামের একটা মেয়ের সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে ।এতে সুমাইয়া বাধা দিলে এ কারনেও তাকে নির্যাতন করতো কাওসার। কয়েকদিন ধরে গাড়ির জন্য কাওসার আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

সোমবার দিবাগত রাতে স্বামী- স্ত্রী মাধ্যে ঝগরা হলে কাওসার তাকে গলায় ওরনা পেঁচিয়ে হত্যা করে। সকালে খবর পেয়ে আমার বোন তাদের বাড়িতে গেলে তাদের বাড়ির লোক আমাদের জানায় ভূতে হত্যা করেছে। তারপর আমার বোন গলায় দাগ দেখে এলাকার লোকজন ডাকে। একপর্যায় পুলিশকে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

সুমাইয়ার স্বামী কাওসার বলেন,এবিষয় প্রথমে অস্বীকার করলেও একপর্যায় বলেন গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে সুমাইয়া। কেন করেছে এবিষয় আমি কিছু জানিনা।

এলাকার লোক জানায় , কাওসার মাদকাসক্ত। বিয়ের পর থেকেই কোন কারন ছাড়াই স্ত্রীকে নির্যাতন করতো। সুমাইয়াকে কাওসার হত্যা করছে অথবা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সুমাইয়া আত্মহত্যা করেছে।

পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার মোর্শেদ বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারন বুঝা যাবে।

শম্ভু সাহা পটুয়াখালী প্রতিনিধি