মাজহারুল ইসলাম চপল, ব্যুরো চীফঃ ‘লকডাউন নয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা চাই, সাহায্য নয় আয় থেকে ব্যয় করতে চাই’ এই শ্লোগান দিয়ে লকডাউনেও রাজশাহীতে মার্কেট খুলে রাখার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ব্যবসায়ীরা। লকডাউন ভেঙে সোমবার সকালে নগরীর সাহেববাজারে রাস্তায় নেমে পড়েন ব্যবসায়ীরা।
তারা দাবি করেন, সামনে ঈদ। এই সময়ে তাদের মার্কেট বন্ধ থাকলে আর্থিকভাবে তারা চরম ক্ষতির মুখে পড়বেন। বেলা ১১টার দিকে রাজশাহীর বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীরা সাহেববাজারে আরডিএ মার্কেটের সামনে জড়ো হন। তারা মার্কেটের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেন। সাহেববাজার বড় রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
দোকান খুলে দেয়ার দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেন। কেউ কেউ শুয়েও পড়েন রাস্তায়। এছাড়াও নিউমার্কেট, ও থিম ওমর প্লাজার সামনেও ক্ষিপ্ত ব্যবসায়ীদের অবস্থান করতে দেখা যায়। এসময়ে কাউকে স্বাস্থ্য বিধি মানতে দেখা যায়নি। পরে পুলিশসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন।
উপস্থিত হন রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু আসলাম। তিনি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেন। এ সময় ব্যাসায়ীরা তাদের দাবি তুলে ধরেন এবং মার্কেট খোলা না থাকলে তারা আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে জানান। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে মার্কেট খোলা রাখার দাবি করেন নেতারা।
রাজশাহী কাপড়পট্টি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শামিম জানান, গতবছর লকডাউনের কারণে তারা পরিবার নিয়ে ঠিক মতো ঈদ করতে পারেননি। লকডাউন চলছে চলুক, তাদের একটা সময় বেধে দিলে ভালো হবে। সেই সময়ের মধ্যে তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা করতে চান।
ব্যবসায়ীদের দাবীর মুখে এডিএম আবু আসলাম ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মার্কেট বন্ধের সিদ্ধান্ত সরকারের।
এটি স্থানীয় পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অনলাইনের মাধ্যমে মালামাল পাঠানোর কতা বলেন তিনি। তিনি আরো বলেন, দোকান খুলে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করার সুযোগ নেই। এনিয়ে নতুন কোন সিদ্ধান্ত নিতে তারা পারবেন না। আমরা আপনাদের দাবিগুলো নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কথা বলবো।
এর পরই ব্যবসায়ী নেতারা বিক্ষোভ কর্মসূচি সমাপ্ত করেন। এ সময় রাজশাহী ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ মামুদ হাসান সাধারণ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের সাথে কথা হয়েছে। তারা দোকান খোলা বিষয়ে আশ^াস দিয়েছেন। আগামীকাল তারা সিদ্ধান্ত জানাবেন।
তাঁরা যদি মার্কেট খোলার অনুমতি দেন, ভালো। না দিলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজ দায়িত্বে মার্কেট খুলে দেবেন বলে জানান তিনি। এরপরই বিক্ষোভকারীরা রাস্তা থেকে সরে যান। এদিকে লকডাউনের প্রথম দিনে রাজশাহীতে বাস চলাচল করেনি। তবে রাস্তায় রিকশা ও অটোরিকশা চলেছে। যদিও এ সংখ্যা অন্যদিনের তুলনায় কিছুটা কম। রাস্তায় লোকজনের চলাচলও কম রয়েছে। নগরীর বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
তবে পাড়া মহল্লার ছোট দোকানপাট খোলা আছে। গ্রামের দিকে অবশ্য লকডাউনের কোনরকম পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়নি। তবে ওষুধ, কাঁচা বাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান এবং টিসিবি এর লাইনে কোন প্রকার স্বাস্থ্য বিধি মানতে দেখা যায়নি। তবে পুলিশ সারাদিন মাঠে থেকে এবং সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সচেতনামূলক মাইকিং করা হয়।