দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: “কোভিড-১৯ মহামারি লকডাউন না পারছি গাডী চালাতে কিকরে পরিশোধ করবো এমনটিই বলছে দশমিনা উপজেলার ঋনগ্রহীতরা” পটুয়াখালীর দশমিনায় বিভিন্ন এনজিও কমীরা
লকডাউনের মধ্যে কিস্তি আদায়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন নিন্ম আয়ের ঋণগ্রহীতারা।
ঋণের কিস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদী
বেষ্টিত এ উপজেলায় নিন্ম আয়ের মানুষরা এনজিও থেকে সাপ্তাহিক ও মাসিক কিস্তিতে ঋণ নিয়ে ব্যবসা অটো, রিকসা ও ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন কিনে চালিয়ে তা থেকে আয় করে জীবিকা নির্বাহর পাশাপাশি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করে থাকেন।
করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে মৃত্যু ও আক্রান্তের হার বাড়তে থাকায় সরকার দেশজুড়ে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে। ফলে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাস্থ্য বিধি মেনে চালু থাকলেও তেমন লোকসমাগম নেই। অপরদিকে লকডাউনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সড়কে এবং নৌপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রাখা হয়।
ফলে আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যায় এসব ঋনগৃহীতা নিন্ম আয়ের মানুষদের। এমন পরিস্থিতিতে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এমন মহামারিতে ভুক্তভোগী খেটেখাওয়া ঋণগ্রহীতা যখন তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেলেও এনজিওকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিস্তি চাপ সৃষ্টি করে কিস্তি দিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
স্বাস্থ্যবিধি না মেনে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে এনজিওরকর্মীরা
ঋনগৃহীতাদের বাড়িতে টেবিল চেয়ার নিয়ে বসে পাড়ার সব নারী ঋণ গ্রহীতাদের নিকট থেকে কিস্তি আদায় করছেন। এ সময় নারী গ্রহীতাদের মাঝে মাস্ক ব্যবহার বা সামাজিক দূরত্ব মানার কোনো বালাই থাকছে না। সরেজমিনে ঋনগৃহীতাদের সাথে কথা বলে এসব থত্য পাওয়া যায়।
উপজেলার দক্ষিন দাস পাড়া গ্রামের মো. ইউনুচ খাঁ বলেন, সে ব্যাটারি চালিত অটো কিনেছে এ সময় তিনি ব্রাক থেকে তার স্ত্রীর নামে ৫০হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিল এতে প্রতি মাসে তার ৫হাজার ৫শ’ টাকা কিস্তি দিতে হয়। গাড়ি চালিয়ে যে আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালাই আর প্রতিদিন কিছু কিছু জমিয়ে এ কিস্তি দেই। লকডাউনে বাড়ি বসে আছি, কোনো আয়-রোজগার নেই।
ধারদেনা করে সংসার চলছে, কিস্তি কিভাবে দেব ভেবে পাচ্ছি না।
লকডাউনের সময় কিস্তি বন্ধ না করলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। উপজেলার নলখোলা বন্দরের জাহানুর স্বামী আক্কাস বাজারে বস্তা টেনে জীবিকা নির্বাহসহ এনজিও’র কিস্তি দিয়ে থাকেন। তিনি আরও জানান, করোনা লকডাউনে কোন টাকা কামাই নেই, যেখানে জীবন বাচঁতে কষ্ট সেখানে এনজিওরা চাপ দিয়ে টাকা নিচ্ছে। ইউনুছ খাঁ, শিল্পী রানী, আলো রানী ও জাহানুরের মত হাজার হাজার নিন্ম আয়ের মানুষ কর্মহীন পড়ায় জীবন চলে অতি কষ্টে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল-আমিন বলেন, এনজিও কিস্তি আদায়ের বিষয় এবার আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি। তারপরেও মানবিক কারণে জবরদস্তি করে আদায় না করা সমীচিন। যারা দিতে সমর্থ তাদের ক্ষেত্রেও কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।