মাজহারুল ইসলাম চপল, ব্যুরো চীফঃ রাজশাহীর বাগমারায় ঝাড়-ফুঁ আর কুফরি কালাম দিয়ে চিকিৎসার নামে চলছে প্রতারণা। প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এছাড়াও রয়েছে ভয়ভীতির নিদারুন তেলেছমাতি।
দেশ বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে আধুনিক হলেও দেশের অনেক এলাকা এখনও যেন অন্ধকারে নিমজ্জিত। কুফরী কালাম আর কুসংস্কারের মন্ত্র দিয়ে চিকিৎসার নামে প্রতারণার ফাঁদ আটছে এক শ্রেনীর অসাধু চক্র। হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে অনেক পরিবাকে। এমন অসাধু ও প্রতারক চক্রের সন্ধান মিলেছে আজ বাগমারা উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়নের বামনিগ্রামে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়নের বামনিগ্রামের মৃত দবির আলীর ছেলে রমজান আলী (৫০), তার স্ত্রী কহিনুর বেগম (৪২), এমনকি তার ছেলে মোবারক আলী, অলৌকিক ক্ষমতার ফাঁদ সাজিয়ে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে চলেছে দীর্ঘদিন যাবৎ।
এর সাথে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। অসহায় ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য পরিবার। এলাকাবাসির দাবী রোগ ভাল করার নামে রোগী প্রতি পাঁচ হাজার টাকা থেকে বিশ হাজার টাকা করে নেয় এই রমজান ও তার স্ত্রী কহিনুর বেগম। কিন্তু রোগ সারার কোন খবর থাকেনা। ভুক্তভুগী রোগির পরিবার এর প্রতিবাদ করতে গেলে জ্বীন ও অলৌকিক ক্ষমতার ভয়ভীতি দোখান রমজান আলী ও তার স্ত্রী কহিনুর বেগম। যার কারনে কেউ মুখ খুলেনা, কারন যদি তার কোন ক্ষতি হয়।
আবার মাঝে মধ্যেই রাস্তা ও বাড়ির আনাচে কাঁনাচে পড়ে থাকে জ্বীন- ভুতের আলামত। এলকাবাসির দাবী এসকল কাজ রমজান ও তার ছেলে এগুলো করে।
অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩ মে, দুপুরে অনুসন্ধানে যায় একদল মিডিয়াকর্মী। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় চোখ ধাঁধাঁনো সব অলৌকিক কার্যকলাপের নমুনা ও আলামত। এলাকায় সাংবাদিক এসেছে খবর পেয়ে ছুটে আসে রমজান ও কহিনুর বেগমের প্রতারণার শিকার হওয়া অসহায় জনতা।
বলতে শুরু করে তাদের না বলা কথা গুলো। এরই মধ্যে উপস্থিত হয় প্রতারণাকারি ও ভুয়া কবিরাজের শুভাকাঙ্ক্ষী বাবলু সরকার। এই বাবলু সরকার এসেই সাফাই গাইতে শুরু করে ভুয়া কবিরাজ অর্থাৎ রমজানের পক্ষে, এবং এক ধরনের বাধা সৃষ্টি করে। এরপর বাবলু সরকারকে প্রশ্ন ছুড়তেই তিনি মুখে কুলুপ এঁটে দেন নিমেশেই। কুফরির আলামত ও কারসাজি দেখে তিনি সেখান থেকে সটকে পড়েন।
জানতে চাওয়া হয় কহিনুর বেগমের কাছে, তিনি কি কি চিকিৎসা দেন, তিনি বলেন অনেক রোগের চিকিৎসা দিই কিন্তু কোন টাকা নিইনা। কোন কবিরাজি কোর্স বা হেকিমি লাইনে পড়াশোনা করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি সাফ জানান তিনি কোন লিখাপড়া বা কোন কোর্স করেননি। তাহলে তিনি কোন ক্ষমতায় মানব দেহের জটিল কঠিন ও পুরাতন রোগের চিকিৎসা দেন?
এরপর ছুটে আসেন পাশের ইউনিয়নের অর্থাৎ মোহনপুর উপজেলার রায়ঘাটি ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আয়ুব আলী। পরে জানা যায় তিনি ও তার স্ত্রীও এই কার্যকলাপের সাথে জড়িত। অবশ্য তিনি তেমন কোন বাধা দেননি। সেখান থেকে ফিরে ঐ ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি অর্থাৎ আউচপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জান মোহাম্মাদ এর সাথে সাক্ষাৎ এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
কিন্তু সেখানেও প্রতারনাকারি চক্রের ভুয়া কবিরাজের সাফাই গাওয়া, সেল্টার দাতারা আগেই এসে হাজির। তবুও সকলের সামনে ঘটনার বিবরণ নিয়ে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলা হয়। জানতে চাওয়া হয় এই ধরনের কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন কিনা? উত্তরে তিনি বলেন আমি শুনেছি কিন্তু এত টাকা লেনদেন করে এটা আমার জানা নাই। উপরোক্ত সকল কথার অডিও ভিডিও রেকর্ড সংরক্ষিত রয়েছে। আগামী পর্বে ভুক্তভুগীদের বক্তব্য নিয়ে হাজির হবো