ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : সোমবার, ১৭ মে, ২০২১ , আজকের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন চালু ২৫ মে, স্বস্থির নিশ্বাস আম চাষীদের

রাজশাহী ব্যুরোঃ গতবারের ন্যায় এবারো চালু হচ্ছে পশ্চিমাঞ্চল রেলের ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। আগামী ২৫ মে থেকে এই ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন বিভাগীয় বানিজ্যিক কর্মকর্তা (পাকশী) নাসির উদ্দিন। ১৭ মে সোমবার দুপুর ১.৩০মি. আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলন ডিসিও বলেন, উৎপাদনকারীরা যাতে ভালো দাম পাই এবং ঢাকাবাসী যাতে ভালো আম খেতে পারেন, সে জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আম ছাড়াও সব ধরনের শাকসবজি, ফলমূল, ডিমসহ কৃষিজাত পণ্য ঢাকায় স্বল্প খরচে নিয়ে যেতে পারবেন কৃষকেরা।
আমের চাহিদা থাকলে ২৫ মে ট্রেনটি চালু হতে পারে, অন্যথায় পহেলা জুন থেকে সরাসরি চালু হয়ে যাবে ট্রেনটি।

বিকাল ৪ টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ট্রেনটি রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। ৫টি ওয়াগনে ট্রেনটিতে আম উঠিয়ে রাত ২ টায় ঢাকায় পৌছাবে। তিনি আরও বলেন, এই ট্রেনের চাহিদা থাকলে আম মৌসুম ছাড়াও স্থায়ীভাবে চলাচল করার ব্যবস্থা করা হবে। বিশেষ ট্রেন চালুর মাধ্যমে রাজশাহী অঞ্চলের কৃষক, ব্যবসায়ীদের সব ধরনের কৃষিপণ্য স্বল্পমূল্যে পরিবহনের সুযোগ হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে কাঁকনহাট স্টেশন, রাজশাহী স্টেশন, সরদহ স্টেশন, আড়ানি স্টেশন থেকে আম তোলা যাবে। আব্দুলপুর স্টেশন থেকে সবশেষ আম তুলে ট্রেনটির লোডিং শেষ হবে।

পশ্চিম রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ এই ট্রেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে যখন ঢাকায় যাবে, তখন ট্রেনটির নাম হবে ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন-২’। আর ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ফেরার পথে নাম হবে ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন-১’।

ট্রেনটি সপ্তাহে প্রতিদিন চলাচল করবে। প্রতিদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বিকেল চারটায় ছেড়ে আসবে। রাজশাহীতে পৌঁছাবে ৫টা ২০ মিনিটে। এখানে ৩০ মিনিট থেমে ৫টা ৫০ মিনিটে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করবে। এরপর ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ২ টায়। ঢাকা থেকে ট্রেনটি রাত ২টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে আসবে।

রাজশাহী পৌঁছাবে সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে। এখানে ২০ মিনিট থেমে ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। পৌঁছাবে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে।ট্রেনটিতে মোট ৫টি ওয়াগন থাকবে। প্রতিটি ওয়াগনে ৩০ টন আম নেওয়া যাবে। তবে শুধু আম নয়; সব ধরনের শাকসবজি, ফলমূল, ডিমসহ কৃষিপণ্য, বাড়ির ফার্নিচার এবং রেলওয়ের আইনে পার্সেল হিসেবে বহনযোগ্য সব সামগ্রী বহন করা হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে এসে ট্রেনটি আমনূরা বাইপাস, কাঁকনহাট, রাজশাহী, সরদহ, আড়ানি ও আব্দুলপুর বাইপাস স্টেশনে থামবে। এসব স্থানে আমসহ পার্সেল পণ্য ট্রেনে তোলা হবে। টাঙ্গাইল, মির্জাপুর, কালিয়াকৈর, জয়দেবপুর, টঙ্গী, বিমানবন্দর, ক্যান্টনমেন্ট, তেজগাঁও এবং কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনটি থামবে।

এই স্থানগুলোতে পণ্যগুলো খালাস করা হবে। ফেরার পথে ট্রেনটি তেজগাঁও, টঙ্গী, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ এম মনসুর আলী, চাটমোহর ও রাজশাহী স্টেশনে থামবে। তবে যাত্রাপথে কোথাও সাধারণ যাত্রী এ ট্রেনে তোলা হবে না। আমসহ অন্যান্য পার্সেল তুলতে কুলিদের জন্য ১ থেকে ২৫ কেজির জন্য ১০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।

ট্রেনটিতে রাজশাহী স্টেশন থেকে এক কেজি আম ঢাকার বিমানবন্দর, তেজগাঁও বা কমলাপুরে নিতে খরচ পড়বে ১ টাকা ১৭ পয়সা। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এক কেজি আমের ভাড়া লাগবে ১ টাকা ৩১ পয়সা। রেলওয়ের নিয়ম অনুযায়ী ট্রেন ছাড়ার আগে যে কেউ তাঁদের মালামাল বুকিং দিতে পারবেন।

ডেপুটি চীফ কমার্সিয়াল ম্যানেজার বলেন, ‘তাঁরা সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে পণ্য পরিবহনের। কৃষক, ব্যবসায়ীরা খুব নিরাপদে ও নিশ্চিন্তে আমসহ কৃষিপণ্য পরিবহন করতে পারবেন। তাঁদের এই আশ্বাসটা আমরা দিতে চাই।’ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ট্রেনটিতে অনেক জায়গা। প্রায় ১৫০ টন মালামাল বহন করবে ট্রেনটি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমাঞ্চলের ডেপুটি চীফ কমার্সিয়াল ম্যানেজার গৌতম কুমার কুণ্ডু, সহকারি চীফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার শেখ আঃ জব্বার, সহকারি বিভাগীয় বানিজ্যিক কর্মকর্তা (পাকশী) মোঃ সাজেদুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেলওয়ে ঈশ্বর্দী (টিসিআই) নুরুল আলম, ষ্টেশন ম্যানেজার আঃ করিম, রেলওয়ে শ্রমিকলীগ কেন্দ্র কমিটি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্তার আলী, ওপেল লাইন শাখার সভাপতি জহুরুল ইসলাম, মমিন হোসেনসহ প্রমুখ।