পুঠিয়া প্রতিনিধঃ দেশের প্রত্যান্ত গ্রাম বাংলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা কেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। যা অসহায় হতদরিদ্র গ্রামীন সমাজের সবচেয়ে বড় চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত। অথচ এই চিকিৎসা সেবা নিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
বিশ্বের চলমান করোনা যুদ্ধে, অনেক দেশ লন্ডভন্ডো হলেও বাংলাদেশের বর্তমান সরকার তথা জননেত্রী শেখ হাসিনা শুরুতেই অনেক সাহসীকতা ও কঠোর হাতে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। যেখানে দেশের জনগন প্রশংশায় পঞ্চমুখ। আর এই দুর্দিনে চিকিৎসা সেবার নামে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে ব্যাস্ত দিন পার করছে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
গোপনসূত্রে জানাযায়, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা অসহায় সাধরণ রেগীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। এছাড়াও ঐ দপ্তরের কর্মরত পিয়নের (আউট সোর্সসিং) দাপটে রোগীদের ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়তই বলে অভিযোগ রয়েছে। রোগীদের দূর্ভোগ নিরসন ও সেবা নিশ্চিত করার মত কাউকেই কাছে গোড়ে পাচ্ছে না দুর-দুরান্ত থেকে আসা অসহায় রোগীরা।
বিষয়টি নিয়ে সরেজমিনে যায় রাজশাহীতে কর্মরত মিডিয়াকর্মীরা, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জানা গেছে, উক্ত হাসপাতালে ২৮ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও কর্মরত ডাক্তার রয়েছেন ২২ জন। এর মধ্যে ৭ টি সাব-কেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মী, ৭ জন হাসপাতালের দায়িত্বরত ডাক্তার, আর ১৫ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নাজমা আকতার তার ইচ্ছে মত রেজিষ্টার তৈরি করে যান।
বর্হির বিভাগের দায়িত্বে আছেন দুই জন মেডিকেল অফিসার, শিশু ও অর্থোপেডিক্স দুইজন, এই ৪ জন। হাসপাতালে একজন রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) এবং জরুরী বিভাগে একজন ডাক্তার উপস্থিত থেকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন। আর বাঁকি ডাক্তাররা উপস্থিত নাই।
কয়েকজন রোগী সাথে কথা বলে জানাযায়। তারা বলেন, আমরা অনেক দুর থেকে চিকিৎসা সেবা নিকে এসেছি অথচ এসে দেখছি ডাক্তার নাই।ডাক্তাররা তাদের ইচ্ছেমত হাসপাতালে আসেন আবার নিজের খেয়াল খুশি মত চলে যান। এর মধ্যে দায়িত্বরত গাইনী ডাক্তার হাসপাতালে ঠিকমত আসেন না।
করোনা কালীন পরিস্থিতিতে গর্ভবর্তী মায়েরা কোথায় গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিবে। যদি রাজশাহী শহরে যেতে হয় তাহলে আবার কষ্ট করে শহরে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হবে। এখন সকলের প্রশ্ন তাহলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ কি, যদি শহরে গিয়েই চিকিৎসা নিতে হয়? অপরদিকে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন মেডিসিন, গাইনী, শিশু, অর্থোপেডিক্স এবং এনেসথেশিয়া এই ৫ জন কনসালটেন্ট প্রতিদিন অফিস করার নিয়ম থাকলেও তারা সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন হাসপাতালে এসে দায়িত্ব পালন করেন। আর বাকি দিনগুলো তারা হাসপাতালে না এসে প্রাইভেট ক্লিনিকে সময় দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া সরকারী নিয়ম অনুযায়ী একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে ২৪ ঘন্টা কর্মস্থলে থেকে দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও সেই নিয়মকে অমান্য করে বর্তমান আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আব্দুর রাজ্জাক রাজশাহী শহর থেকে আসেন। এবং দায়িত্ব পালনের কিছুক্ষনের মধ্যেই আবার শহরে চলে যান বলে জানা যায়।
আরও অভিযোগ রয়েছে, ডাক্তাররা উপস্থিত না থাকার সুবাদের আউট সোর্সসিং-এ কর্মরত পিয়নরা নিজেই ডাক্তার সেজে রোগীদের বিভিন্ন টেষ্ট করা সহ বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রেরণ করে থাকেন। বিশেষ করে গাইনী ডাক্তার উপস্থিত না থাকলে তার আউট সোর্সসিং পিয়ন চিকিৎসা নিতে আসা গর্ভবর্তী মায়েদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে থাকেন।
তবে সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল মতিন বলেন, যে টাকা আদায় করা হয় সেটা রোগীদের কল্যান ফান্ডে যায়। আর ডাক্তাররা রেজিষ্টার অনুযায়ী ডিউটি করেন। আর আউট সোর্সসিং দের হাসপাতালের ফান্ড থেকে বেতন দেওয়া।
এবিষয়ে রাজশাহীতে সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ কাইয়ুম তালুকদার এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আপনার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল মতিন এর সাথে যোগাযোগ করেন। কারন আমি এতদুর থেকে দেখভাল করা সম্ভব না। তবে কোন অভিযোগ থাকলে আমি দেখবো।