মো.বেল্লাল হোসেন, দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: দশমিনা উপজেলায় ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ দুই অর্থ বছরে সরকারের উন্নয়ন মূলক বিভিন্ন কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এলজিইডি প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সাংবাদকর্মীরা এ কাজের তথ্য চাইলে দিতে গড়িমসি করছেন উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী। অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সড়কের সাব বেইজ শেষ না হতেই পরবর্তী ম্যাকাড্যাম পর্যন্ত বিল উত্তোলন করে নিয়েছেন। এছাড়াও প্রায় ২০-২৫টি সড়কের নির্মান কাজ ফেলে রাখায় জনসাধারণের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিছুক সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একটি নির্ভরযোগ্য ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বর্তমান উপজেলা প্রকৌশলী মো. মকবুল হোসেন গত বছরের জুলাই মাসের ২ তারিখ দশমিনায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে দশমিনায় বিভিন্ন কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠতে শুরুকরে।
উপজেলার বহরমপুর ইউনিয়নের নেহালগঞ্জ বাজার থেকে আদমপুর বাজার পর্যন্ত ও বাশঁবাড়িয়া ইউনিয়নের মধ্য গছানী গ্রামীন সড়ক থেকে নিজহাওলা পর্যন্ত দুটি সড়কের সাব-বেইজ শেষ না হতেই ম্যাকাড্যাম পর্যন্ত বিল উত্তোলন করে নিয়েছেন। উপজেলার এলজিইডি দপ্তর থেকে প্রায় ২০ গজ দুরত্বে স্থানীয় সাংসদ এস এম শাহজাদার বাসভবন থেকে তমু হাওলাদার বাড়ি পর্যন্ত ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চরহোসনাবাদ বাজার থেকে দশমিনা সরকারি কলেজ পর্যন্ত দুটি সড়কের নির্মাণ কাজ শুরুকরার কিছুদিনের মাথায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
কাজের শুরুথেকেই মান নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চরহোসনাবাদ বাজার থেকে দশমিনা সরকারি কলেজ পর্যন্ত সড়কে নতুন খোয়ার জায়গায় পুরাতন রাবিস ব্যবহার করছে।দশমিনা-বাউফল আন্তঃজেলা সড়ক থেকে খানবাড়ী হয়ে বাঁশবাড়িয়া বেড়িবাধ পর্যন্ত সড়কটির সাব-বেইজের বিভিন্ন জায়গায় খোয়া না দিয়ে ম্যাকাড্যাম শুরুকরেছে।
এতে ওই এলাকার মো. আলামিন অভিযোগ করেন, ‘বালু আর খোয়া সমপরিমান দেয়ার কথা থাকলেও দেইনি বরং বিভিন্ন জায়গায় খোয়াই দেয় নাই। উপজেলার রনগোপালদি ইউনিয়নের যৌতা বাজার থেকে চান্দার বাধ পর্যন্ত ও চরবোরহান ইউনিয়নের বৌ বাজার থেকে ইদ্রিস মেম্বারের বাড়ির পশ্চিম পাস পর্যন্ত সড়কের নির্মান কাজ প্রায় তিন বছর পর্যন্ত থেমে থাকায় ওই সড়কে শুস্ক মৌসুমে ধূলো বালিতে একাকার হয়ে যায়।
এ ছাড়াও ২০-২৫ টি সড়কের নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রাখা হয়েছে। এতে ক্ষোভ ও অসন্তোাষ দেখা দিয়েছে চলাচলে ভোগান্তির শিকার স্থানীয়দের মাঝে। অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলীর যোগসাজশে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বেশি লাভের আশায় নিন্ম মানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ কাজে সময় ক্ষেপন করেন।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য স্থানীয় সংবাদকর্মীরা এলজিইডি প্রকৌশলীর দপ্তরে বিগত তিন মাস ধরে ধরনা দিলেও তথ্য না দিয়ে দেই দিচ্ছি বলে তিনি কাল ক্ষেপন করেন। উপজেলা সদরের মনির জানান, ‘রাস্তাডা এমনতারা কইরা থুইছে উষ্ঠা খাইয়া অনেকের হাত পাও ভাঙ্গছে।
বহু দিন ধইরা রাস্তাডা এইরহম হালাইয়া থুইছে।’ বাঁশবাড়িয়া কলেজ পাড়ার আব্দুল খালেক মুন্সি জানান, ‘আগে ঢালাই আছেলে রাস্তাায় ওই ডালাই ভাইঙ্গা নতুন খোয়ার পরিবর্তে পুরাতন রাবিস ব্যবহার করছে। তাদের কইলে হেরা কাউর কতা হোনেনা। রাস্তাডা বেশি দিন মোনে হয় টেকবে না। বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের মেম্বার জাহাঙ্গীর আলম মিন্ঠু জানান, খান বাড়ির সামনে থেকে মনোয়ার সিকদারের দোকান পর্যন্ত বিভিন্ন যায়গায় বালুর সাথে খোয়া না দিয়েই ম্যাকাড্যামের কাজ শুরুকরছে।
এ উপজেলায় এ রকম বহু সড়কের কাজ দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রাখা ও অনিয়ম রয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয় তথ্য চাইলেও গড়িমসি করেন উপজেলা প্রকৌশলী মো. মকবুল হোসেন । অনিয়ম ও তথ্য না দেয়ার ঘটনায় মো. মোকবুল হোসেন বলেন, আপনাদের এগুলো দেখার দরকার কি? এগুলো দেখার জন্য আমি আছি।
পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাহাবুদ্দিন জানান, ‘কেন তথ্য দেবেনা, তথ্য দেয়ার জন্য আমি বলে দিচ্ছি।’ এ বিষয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আজিজ মিয়া বলেন, ‘সড়কের কাজে কিছু অনিয়মের কথা শুনেছি, যেমন ইট খারাপ ছিলো, আমি তাৎক্ষনিক ইঞ্জিনিয়রকে ইট সরানোর জন্য বলেছি এবং বিভিন্ন ঠিকাদারকে আমি চিঠি দিয়েছি দ্ররুত কাজ এগিয়ে নেয়ার জন্য কিন্তু ঠিকাদাররা কাজ করছে না।
এ বিষয় স্থানীয় সাংসদ এস এম শাহজাদা বলেন, সাংবাদিকদের তথ্য দেয়ার কথা আইনেই বলা আছে, কি কারনে তথ্য দিচ্ছে না আমি তার সাথে কথা বলে দেখছি।