ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : শনিবার, ২৯ মে, ২০২১ , আজকের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

দশমিনা অর্ধশত পূর্বের অক্ষত লাশ উদ্ধার

মোঃবেল্লাল হোসেন, দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে কবর ভেঙ্গে প্রায় অর্ধশত বছর আগের দাফন করা একটি অক্ষত লাশ উদ্ধার নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল। লাশ দেখতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভির জমিয়েছেন শত শত মানুষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে লাশের ছবিটি।

উদ্ধার করার পর পূণরায় দাফনের আগে দোয়া মিলাদের অংশ নিতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে ছুটে আসেন বহু মানুষ। অক্ষত লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার রনগোপালদী ইউনিয়নের চরঘূণি এলাকার বুড়াগৌরঙ্গ নদীর তীরের হাতেম আলী ফকিরের বাড়ির ঘটনা।

তবে মৃত ব্যক্তির পরিচয় নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গল ও বুধবারের ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তান্ডবে উপজেলার বিস্তীর্ন জনপদ ও নদী তীরবর্তী এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। সেই সাথে নদী ভাঙনে উপজেলার রনগোপালদী ইউনিয়নের চরঘূণি এলাকা বড়াগৌরঙ্গ নদীর তীরের হাতেম আলী ফকির বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে।

নদীর ভাঙ্গনে ওই এলাকার ফকির বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান ভেঙ্গে একটি অক্ষত লাশ বেড়িয়ে আসে। এ নিয়ে শুক্রবার বিকালে থেকে ওই এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অক্ষত লাশ পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে দশমিনা উপজেলাসহ পাশর্^বর্তী বিভিন্ন উপজেলা থেকে মানুষ একনজর দেখার জন্য শুক্রবার থেকেই ভির জমাতে শুরু করেন ওই এলাকায়।

এ ঘটনার পর পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় অক্ষত লাশের ছবিটি। বিভিন্ন মানুষ ফেসবুকে ছবিটি আপলোড দিয়ে লাশকে মোমিন বান্দা দাবি করে বিভিন্ন লেখা পোস্ট করেন। শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা হয় ওই বাড়ির রবিউল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, লাশটি তাদের বাড়ির হাশেম ফকিরের।

তার দাবি হাশেম ফকির ৪৫ থেকে ৪৬ বছর আগে মারা গিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, হাশেম ফকির তাদের বাড়ির হাতেম আলী ফকির চিশতিয়া এর ভক্ত ও সম্পর্কে চাচাতো ভাই ছিলেন। অন্যদিকে ওই এলাকার ৯০ বছরের বৃদ্ধা মো. হাবিবুর রহমান (চন্দন মাষ্টার) জানান, মরহুম আইনউদ্দিনের ছেলে হাশেম ফকির।

হাশেম ফকির সত্তরের বন্যার পরে মারা গেছেন। হাশেম ফকিরের বাবা আইনউদ্দিন ফকির সত্তরের বন্যার আগে মারা গেছেন। হাশেম ফকিরের দুই ছেলে খালেক ও বারেক। তবে অক্ষত লাশটি হাশেমের কিনা আমি জানিনা। ওই অক্ষত লাশটি হাশেমের বাবা আইন উদ্দিনের কিনা সেটাও নিশ্চিত নয় বলে তিনি জানান। তার বক্তব্য অনুযায়ী অক্ষত লাশটির পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।

হাশেম ফকিরের ছেলে মো. খালেক জানান, লাশটি তার বাবার। তিনি ১৯৭৫ সালে দিকে মারা গিয়েছিলেন। স্থানীয়রা জানান, জৈনপুরী পীর সাহেবের নির্দেশে অক্ষত লাশটির শরীরের কোন অংশ খুলে না দেখে শুধু মিলাদ দিয়ে শনিবার সকালে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। রনগোপালদী ইউপি চেয়ারম্যান এটিএম আসাদুল হক নাসির সিকদার জানান, লাশ পাওয়ার খবর শোনার পর তিনি পুলিশে বিষয়টি জানিয়েছেন।

অক্ষত লাশটি দেখতে বহু মানুষ ভির জমিয়েছেন। দশমিনা কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা রেজাউল করিম জানান,আল্লাহ্ধসঢ়;’র অলি, আল্লাহ্ধসঢ়;অলা বান্দা, হাফেজ ও ইমানী ব্যক্তি হলে তাদের একটি পশম পর্যন্ত মাটি খায় না। আল্লাহ্ধসঢ়;অলাদের লাশ আল্লাহ্ধসঢ়; রক্ষা করতে পারেন।

এরকম প্রমাণ আমরা আগে বহু দেখেছি। এ নিয়ে কোরআন হাদিসেও বলা আছে বলে তিনি জানান। দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল-আমিন জানান, অক্ষত লাশ উদ্ধার খবর শুনেছি। ইসলামের দৃষ্টিতে বললে এমন হতে পারে। আবার বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে দেখলে মাটির কারণেও হতে পারে।