ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : সোমবার, ৭ জুন, ২০২১ , আজকের সময় : শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

নাগরপুরে ভুল চিকিৎসায় শেয়ালে কামরানো শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতি‌নি‌ধিঃ টাঙ্গাই‌লের নাগরপু‌রে হাতুড়ে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায়, শেয়ালে কামরানো ৬ বছরের শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শিশু‌টির প‌রিবার দা‌বি তুলেছে পল্লী চি‌কিৎসকের ভুল চি‌কিৎসায় শিশু‌টির মৃত্যু হ‌য়ে‌ছে। এব‌্যাপ‌া‌রে ভুয়া ডাক্তার শামছুজ্জামান শাহীন‌ এর বিরু‌দ্ধে নাগরপুর থানায় এক‌টি অ‌ভি‌যোগ ক‌রে‌ছে শিশুটির পিতা।

শিশু‌টির প‌রিবার ও অ‌ভি‌যোগ সূ‌ত্রে জানা যায়, উপ‌জেলার দ‌প্তিয়র ইউ‌নিয়‌রের ধুনাইল গ্রা‌মের উজ্জ্বল সরকা‌রের মে‌য়ে প্রতিমা সরকার‌ (৬) বাড়ির পাশে খেলার সময় ১৫ এপ্রিল বিকেলে শিয়া‌লে কামড়ে দেয়। চি‌কিৎসারত অবস্থায় ১০ মে  শিশু‌টির মৃত্যু হয়।

শিশু‌টির পিতা অ‌ভি‌যো‌গ ক‌রে ব‌লেন, রোজার মাসে আমার মে‌য়ের ডান কব‌জি‌তে শিয়া‌লে কামড়ায়। তাৎক্ষ‌নিকভা‌বে আমার পূর্ব প‌রি‌চিত সারুটিয়াগাজীর মন্তাজ মিয়ার ছে‌লে শামছুজ্জামান শাহী‌নের ভাদ্রা বাজারের ফা‌র্মেসী‌তে নিয়ে যাই পরামর্শের জন্য। তখন সে আমা‌কে ব‌লেন, হাসপাতা‌লে নেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই, আ‌মিই চি‌কিৎসা কর‌তে পারব। আমি সরল বিশ্বা‌সে চি‌কিৎসা করা‌তে রা‌জি হ‌লে, সে পর্যায়ক্রমে ৪‌টি ইন‌জেকশন দেয় এবং কিছু ঔষধ দেয়।

শেষ ইন‌জেকশন দেওয়ার প‌রে আমার মে‌য়ে গুরুতর অসুস্থ হ‌য়ে প‌ড়ে। তখন শাহীন আমা‌কে ব‌লে, আ‌মার পক্ষে আর চি‌কিৎসা দেওয়া সম্ভব না, মেয়েকে মহাখালী হাসপাতা‌লে নি‌য়ে যে‌তে। হাসপাতা‌লে নি‌য়ে যাওয়ার প‌থে উপ‌জেলার ভাদ্রা ইউনিয়নের মু‌চি বাড়ীর মোড়ে পৌছা‌লে আমার মে‌য়ে‌টি মারা যায়। ডাক্তার শাহরনের ভুল চি‌কিৎসায় আমার মে‌য়ে মারা গে‌ছে, আ‌মি এর বিচার চাই।

শিশু‌টির পিতা আরো বলেন, প্রভাবশালী একটা মহল বিষয়‌টি ধামাচাপা দেওয়ার জন‌্য আমা‌কে বি‌ভিন্নভা‌বে ভয়ভী‌তি প্রদর্শন কর‌ছে।  থানায় অ‌ভি‌যোগ দেওয়ার পরও কোনও বিচার পা‌চ্ছি না।

অ‌ভি‌যো‌গের সত‌্যতা যাচাই‌য়ের জন‌্য সরেজমিনে ডাক্তার শামছুজ্জামান শাহীন এর মা‌লিকাধীন জয়নব ফা‌র্মেসী‌তে গি‌য়ে বন্ধ পাওয়া যায়। দোকানের কোন সাইবোর্ড পাওয়া যায়নি। তখন শাহীনের মোবাই‌লে যোগা‌যোগ কর‌লে, তি‌নি অভি‌যোগ অস্বীকার ক‌রে ব‌লেন, আ‌মি শুধু ইন‌জেকশন দি‌য়ে‌ছি, আর কিছু ব্যথার ঔষধ দিয়েছি।

আ‌মি কোন ব‌্যবস্থাপত্র দেয় নাই। তার মালিকানাধীন জয়নব ফার্মেসীর সাইনবোর্ড ও ড্রাগ লাইসেন্স আছে কি না, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো এখনো নেয়া হয়নি। এছাড়াও তিনি কোন মেডিক্যাল কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছেন, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি পল্লী চিকিৎসক।

এভাবেই গত ৮-৯ বছর যাবৎ এভাবেই ব্যবসা করছি। তবে, অনুসন্ধানে শিশুটির পিতাকে দেয়া ডা. শাহীনের দেয়া ব্যবস্থাপত্র পাওয়া যায়। যেখানে তার নামের আগে ডা. লেখা দেখা যায়।

এ বিষয়ে নাগরপুর থানার অ‌ফিসার ইনচার্জ মো. আ‌নিসুর রহমান ব‌লেন, আমরা শিশুর পিতার একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটির তদন্ত এখনও চলমান রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।