ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই, ২০২১ , আজকের সময় : বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

কাশিয়াডাঙ্গা থানার এসআই তাজের বিরুদ্ধে গ্রেফতার বানিজ্যের অভিযোগ

রাজশাহী ব্যুরো চীফঃ রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কাশিয়াডাঙ্গা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই তাজ এর বিরুদ্ধে গ্রেফতার বানিজ্যের অভিযোগ উঠে এসেছে। রয়েছে বিভাগীয় তদন্ত। সূত্রমতে জানাযায়, কাশিয়াডাংগার সেকেন্ড অফিসার এস আই তাজ উদ্দিন এর বিরুদ্ধে ঘুষ, গ্রেফতার বানিজ্য, জুয়া ও মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে মাসিক মাসোহারা সহ নানান অভিযোগ।

ঘটনা-১। গত ৩১ শে মে ২০২১ ইং তারিখে আদারিপাড়া থেকে জাহিদ নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেন এএসআই সোহেল রানা। তৎক্ষনাৎ ঘটনাস্থলে পৌছায় এস আই তাজ উদ্দিন। জাহিদকে আটকের পর ঐদিন ১২ হাজার টাকা জব্দ ও ৪০ গ্রাম হেরোইন দিয়ে মামলা দেয় থানা পুলিশ।

কিন্তু গোপন ও পারিবারিক সূত্রে জানাযায়, সে সেইদিন গ্রামীণ ব্যাংক ও ব্রাক ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার ও ৪০ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে কাঠ কিনতে বের হয়। উল্লেখ, (জাহিদ ছিলেন একজন কাঠ ব্যবসায়ী)। পথিমধ্যে এ এস আই সোহেল তাকে আটক করেন।

তার কাছে কোন মাদক না থাকলেও টাকা আত্মসাৎ এর ন্যায় ৪০ গ্রাম হেরোইন দিয়ে মামলা দেন এস আই তাজ। আটক জাহিদের কাছে থাকা ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার মধ্যে ১২ হাজার টাকা জব্দ তালিকায় লিপিবদ্ধ করে ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, জাহিদ কোন মাদক ব্যবসায়ী নয়, সে মূলত কাঠ ব্যবসায়ী।

তার টাকা আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। তারা বিষয়টি অভিযোগ আকারে পুলিশের উদ্ধর্তন অফিসারদের জানিয়েছেন। তার বিভাগীয় তদন্ত চলমান। ঘটনা -২। ২০২১ সালের ৪ মে, অপর একটি ঘটনায় দুইজনকে ২০ গ্রাম গাঁজাসহ আটক করেন এসআই তাজ। দুইজনের মধ্যে একজনকে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে আরএমপি ধারায় চালান করলেও টাকা না পেয়ে অপরজনকে ১২০ গ্রাম গাঁজা দিয়ে মামলা দেন।

ঘটনা-৩। অন্য আরেকটি ঘটনায়, ৫০০ গ্রাম হেরোইনসহ একজনকে আটক করে ৩০ গ্রাম হেরোইন দিয়ে মামলা দেন এসআই তাজ । এই ঘটনায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ঘুষ নেন তিনি। অপর আরেকটি ঘটনায়, বিনা কারণে রাস্তা থেকে সুমন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে ২০ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন।

ঘটনা-৪। চলতি বছরের গত ১৪ মার্চ থানা এলাকার বালিয়া থেকে ৫ জনকে আটক করেন এস আই তাজ উদ্দিন। আটকরা হলেন, মামুনুর রশীদ, আমানুল্লা, হালিম, শাহাবুল, নুরুল ইসলাম। তারা সকলেই মাদক সেবনকারী। ঘটনার দিন আটকদের নিকট ১০ হাজার টাকা করে দাবি করেন। পরে তিনজন ৪ হাজার করে ১২ হাজার করে টাকা দেন। তিনজনকে ছেড়ে দেন বাকী দুজনকে ১২ গ্রাম হেরোইন দিয়ে মামলা দেওয়া হয়।

ঘটনা-৫। চলতি বছরের গত ২৫ শে ফেব্রুয়ারী কোর্ট ঢালুর মোড় থেকে ২ জনকে আটক করেন এস আই তাজউদ্দীন। আটকরা হলেন, আরিফুল ইসলাম ও ইমাম হাসান। আটকদের কাছে কোন প্রকার মাদক না পেয়েও থানায় নিয়ে গিয়ে মারধর করে ১ লক্ষ টাকা দাবি করেন। পরে ২০ হাজার টাকায় ছাড়া পান তারা।

ঘটনা-৬। নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক এক নারী জানায়, চলতি বছরের ১৩ জুন লিলি হল এলাকায় বাড়ির কাজ বন্ধ করতে যান এস আই তাজউদ্দীন। এ সময় কাজ বন্ধ করে অর্থ দাবি করেন তিনি। জনতার চাপে সেখান থেকে থানায় চলে আসতে হয় তাকে। এ বিষয়ে কথা বলতে এস আই তাজ উদ্দিনকে ফোন দিলে তিনি বলেন, সব ঘটনা মিথ্যা। নিউজ করলে আমার কিছুই হবে না, কারণ উদ্ধর্তন অফিসাররা সব জানে।

বিষয়টি নিয়ে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ পারভেজ বলেন, আমার ঘটনাগুলো জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিবো। এদিকে আরএমপি’র মিডিয়া মূখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, আমি বিষয়টি জানি না, ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে গোপন সূত্রে জানাযায়, এসআই তাজ এর বিরুদ্ধে চারটি ঘটনার বিভাগীয় তদ্ন্ত চলমান… এখন সুশীল সমাজের প্রশ্ন একজন এসআই এর এতো অপরাধ থাকার পরও কিভাবে পুলিশে টিকে আছে? সঠিক তদন্ত করে, এমন দুর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।