ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ১০ আগস্ট, ২০২১ , আজকের সময় : রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

কাঁচা মরিচের দামে পেয়ে চাষিদের মুখে হাসি: ক্রেতারা বিপাকে

মো.আককাস আলী, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: হঠাৎ করে কাঁচা মরিচের
দাম বাড়ায় হাসি ফুটেছে নওগাঁর প্রান্তিক মরিচ চাষিদের মুখে। অপরদিকে ক্রেতার পরেছে বিপাকে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে প্রায় আটগুণ। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ
১৭০ টাকা থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেশি দামে বিক্রি হওয়ায় লাভবান হচ্ছে চাষিরা।

অপরদিকে এক লাফে ২০ থেকে ৩০টাকার কাঁচা মরিচ ১৮০ থেকে ২শ টাকায় বিক্রি হওয়ায় ক্রেতারা চোখে অন্ধকার দেখছেন। কাঁচা মরিচের দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে বাকবন্ডিতা। কেউ কেউ মরিচ না নিয়েই
ফিরছেন বাড়িতে। তবে দাম কমার আপাতত কোন লক্ষণ নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

গতকাল মঙ্গলবার নওগাঁর বদলগাছী ও মহাদেবপুর উপজেলার একাধিক
হাট-বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা যায়, নওগাঁয় নদীবেষ্টিত বদলগাছী ও মহাদেবপুর উপজেলার আত্রাই ও যমুনার নদীর অববাহিকায় ১৫টি ইউনিয়নের বিস্তৃর্ণ জমিতে মরিচের আবাদ করা হয়েছে। এখন চলছে মরিচ তোলার মৌসুম।

দুই উপজেলার ফসলি জমির যত দূর চোখ যায় শুধু মরিচ, আর মরিচ। এবার মরিচের উৎপাদন ভালো হওয়ার পাশাপশি বাজারে উপযুক্ত দাম পেয়ে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষিদের ঘরে যেন খুশির বন্যা বইছে। মরিচ তুলছেন পরিবারের নারী শ্রমিকরাও। মহাদেবপুর উপজেলার সফাপুর কাঁচা মরিচের বৃহৎ বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, চাষিদের কাছ থেকে মরিচ কিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে বিক্রি করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

দিনভর বাজার থেকে মরিচ কিনে রাতে ট্রাকে নিয়ে যান পাইকারি বাজারে।এই বাজারে আষাঢ় মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত হাট বসে। কিন্তু করোনাকালীন দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত বেচাকেনা চলে। গড়ে প্রতিদিন সাত থেকে আট টন কাঁচা মরিচ কেনাবেচা হচ্ছে।

মরিচ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘চলতি মৌসুমের প্রথমদিকে মরিচের অনেক আমদানি ছিল। তখন দাম কম ছিল। বর্তমানে মরিচ শেষের দিকে। যেটুকু বাজারে উঠেছে সেটির দাম বেশি। গতকাল রোববার থেকে মরিচ কিনেছি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। এমন দাম পেয়ে প্রান্তিক মরিচ চাষিরা বেশ খুশি।’

উপজেলার হাতিমন্ডলা গ্রামের প্রান্তিক চাষি ফারুক বলেন, ‘চলতি মৌসুমে এক বিঘা জমিতে কাঁচা মরিচের আবাদ করি। এতে খরচ হয় ১০ হাজার টাকা। বর্তমান বাজারে প্রতি মণ মরিচ সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরও এক থেকে দেড় মাস
ফসল তুলতে পারব। ওই জমি থেকে আরও লক্ষাধিক টাকার মরিচ বিক্রির আশা করছি।’

বাংলাদেশ কৃষি ভান্ডার সত্ত্ধসঢ়;বাধিকারী রাহিনুর ইসলাম রায়হান বলেন, কৃষিপ্রধান জেলা নওগাঁ। এখানে আবহাওয়ার সঙ্গে প্রতিনিয়ত কৃষকদের সংগ্রাম করতে হয়। মরিচের দাম বেশি হওয়ার কারণ- বাজারে আমদানি কম। দেশব্যাপী জেলার মরিচের চাহিদা বেশি কিন্তু আমদানি কম হওয়ায় দাম ওঠানামা করছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুল ওয়াদুদ বলেন, ‘চলতি বছর জেলায় এক হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারদরও ভালো থাকায় বেশ মুনাফা পাচ্ছে চাষিরা। উঁচু অঞ্চলের মরিচ ক্ষেত আরও এক মাস বা আরও অধিক সময় ফলন দেবে।

সব মিলিয়ে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।’ সামছুল ওয়াদুদ আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিটি প্রান্তিক চাষিকে সার বীজসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা করেছি। বেশি করে মরিচ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ চাষিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করায় ব্যাপক সফলতা এসেছে।