ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : শুক্রবার, ১৩ আগস্ট, ২০২১ , আজকের সময় : রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

দশমিনায় আউশের বাম্পার ফলনে কৃষক খুশি

মোঃবেল্লাল হোসেন: পটুয়াখালীর দশমিনায় আউশ ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফুটেছে তৃপ্তির হাসি। এবার আউশের ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে আউশ চাষের আগ্রহ বেড়েছে। উপজেলার কৃষকরা উন্নত ফলনশীল জাতের ব্রি-৪২, ব্রি-৪৮ ও নতুন ব্রি-৮২ আউশ
ধান চাষ করে ভাল ফলন পেয়েছে।

এসব জাতের আউশ ধান চাষে ব্যাপকভাবে সফল হয়েছেন উপজেলার কৃষকরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সদর ইউনিয়নসহ রণগোপালদী, আলীপুরা, বেতাগী সানকিপুর, বহরমপুর, বাঁশবাড়িয়া ও চরবোরহান ইউনিয়নে সর্বমোট ২৬১০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষাবাদ করা হয়েছে।

তাতে উপজেলায় ৮,৮৪০ মেট্রিকটন আউশ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে আউশের বাম্পার ফলন হওয়ায় আউশ চাষে কৃষকরা আগামীতে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে আরও জানা যায়, রবি মৌসুমে মুগডালসহ অন্যান্য রবি শস্য তোলার পরবর্তী সময় থেকে রোপা আমন ধান রোপনের পূর্ববর্তী মধ্যবর্তী সময়টুকুতে বেশির ভাগ জমিই পতিত থাকে।

এ সময়কালীন আউশ আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, সভা, গ্ররুপ মিটিং এবং সরকারী প্রনোদণা বীজ, সার ও কীটনাশক প্রদানের মাধ্যমে কৃষকদের আউশ আবাদে উদ্বুদ্ধকরণ করা হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর আউশের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভাল হয়েছে।

বাজার দরও ভাল। বর্তমানে প্রতি মণ আউশ ধান ৯৮০ টাকা থেকে ১১০০ টাকার মধ্যে উঠানামা করছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পরিদর্শনে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেতের আউশ ধানই আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাটার উপযুক্ত হবে। কিছু কিছু এলাকায় ইতোমধ্যে কাটা হয়ে গেছে।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের দশমিনা গ্রামের বাসিন্দা ও ২২নং মধ্য গুলি আউলিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবদুর রহমান জানান, শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি কৃষি কাজ করা আমার শখ। করোনাকালীন সময়ে দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকায় কাজের চাপ কম থাকায় উপজেলা কৃষি অফিসারের পরামর্শ, সার্বিক দিকনির্দেশনা ও সহযোগিতায় আমি প্রায় দেড় একর জমিতে ব্রি-৪২ প্রজাতির আউশ ধান রোপন করে সফল হয়েছি এবং অনেক ভাল ফলন হয়েছে।

আশা করি আমি অনেক লাভবান হবো। উপজেলার আলীপুরা ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের কৃষক ফোরকান বয়াতী জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনায় আমি দেড় একর জমিতে নতুন প্রজাতির ব্রি-৮২ আউশ ধান চাষ করে অনেক সফল হয়েছি। এক সপ্তাহের মধ্যে আমার ধান পাঁকবে।

আমি আগামীতেও এ প্রজাতির আউশ ধানের চাষ করবো। উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর বাঁশবাড়িয়া গ্রামের কৃষক নেছার উদ্দিন জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও উৎসাহে আমরা কয়েকজন কৃষক একত্রে পৌনে ১০ একর জমিতে ব্রি-৪৮ ও নতুন প্রজাতির

ব্রি-৮২ আউশ ধান চাষ করেছি। কৃষি অফিস থেকে বীজ ও সার দিয়েছে।তুলনামূলক কম খরচে ভাল ফলন হয়েছে। তারা মাঠে এসে খোঁজ খবর নিয়েছে। দশমিনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ জাফর আহমেদ জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ও কৃষি মন্ত্রীনালয়ের পরামর্শ অনুযায়ী করোনাকালীন সময়ে কৃষি কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এবং সরকারী প্রনোদণা ও মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টার ফলে এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আউশ ধানের আবাদ হয়েছে। ফলে আউশ চাষে কৃষকরা লাভবান হবে।