নাটোরঃ নাটোর জেলার বড়াইগ্রামে বড়লোক হতে গিয়ে পুলিশের কাছে ধরা খেয়েছে কামরুল হাসান(২৫) নামে এক যুবক। অপহৃত প্রতিবন্ধি শিশু আলহাজ্ব প্রামানিক কে ঢাকার রামপুরা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় কামরুল হাসান নামে এক অপহরনকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।আর জব্দ করা হয়েছে অপহরণ কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার।
মঙ্গলবার(২৪শে আগষ্ট) দুপুরে এ নিয়ে নাটোর জেলার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা।
প্রেস ব্রিফিং এ লিটন কুমার সাহা বলেন,গত ২১শে আগস্ট বড়াইগ্রাম উপজেলার বাগডোব গ্রাম থেকে অপহৃত হয় প্রতিবন্ধি শিশু আলহাজ প্রামানিক।পরে অজ্ঞাত একটি ফোন নম্বর থেকে শিশুটির পিতার কাছে ৪০লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করা হয়। এ নিয়ে বড়াইগ্রাম থানায় একটি মামলা দায়ের করে শিশুটির পিতা ফাদিল প্রামানিক।
পরে জেলা পুলিশের ৫টি টিম বগুড়া, ঢাকার রামপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।এ সময় ঢাকার রামপুরা এলাকা থেকে অপহৃত প্রতিবন্ধি শিশু আলহাজ্ব প্রামানিককে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের সময় গ্রেফতার করা হয় একই এলাকার জমিস উদ্দিনের ছেলে কামরুল হাসান নামে এক যুবকে।
তিনি আরও বলেন, অপহরণকারী কামরুল ইসলাম শিশু আলহাজ্ব প্রামানিকের চাচাতো মামা হয়। দুই আড়াই বছর আগে কামরুল ৬ লাখ টাকা নিয়ে এক প্রবাসী মেয়েকে বিয়ে করে। পরে প্রবাসী মেয়েটি আত্মহত্যা করে।আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলায় গত এক মাস আগে জেল হাজতে যায় সে।সেখানেই ডাকাতি সহ ৫টি মামলার আসামী বগুড়ার দুপচাঁচিয়া এলাকার রুবেল হোসেনের সাথে পরিচয়।
এরপর তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠে।পরবর্তীতে কামরুল ইসলাম এবং রুবেলের বাড়িতে আসা যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর কামরুল ইসলাম দ্রুত ধনী হওয়ার জন্য রুবেলের কাছে পরামর্শ দেয়।পরে প্রতিবন্ধী শিশু আলহাজ্ব প্রামানিক অপহরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। কারন শিশুটির পিতার ১০ বিঘা জমি রয়েছে। যাতে বিক্রি করে মুক্তিপণ দিতে পারে।
উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম বলেন, শিশুটিকে কামরুল হাসান অপহরণ করে হাটিকুমরুল পর্যন্ত পৌছে দেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে রুবেল হোসেন শিশুটিকে ঢাকার রামপুর এলাকায় তার শ্যালকের বাড়িতে রাখে। সকল প্রযুক্তির সহায়তা আমরা শিশুটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে পেরেছি। ঘটনার সাথে জড়িত রুবেল হোসেনকে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে।
পরে গ্রেফতারকৃত কামরুল হাসানকে আদালতে সোপর্দ করা হলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন আদালত।প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক যুবায়ের, বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম,বড়াইগ্রাম থানার ওসি নজরুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।