বিধান মন্ডল (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের সালথায় আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব ২০২২িং উদযাপন উপলক্ষে পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোছাঃ তাসলিমা আকতার। শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন। এ বছর উপজেলায় ৮টি ইউনিয়নে মোট ৪১টি পূজা মন্ডপে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এসময় তার পরিদর্শনে সঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ সালাহউদ্দিন আইয়ুবী। এছাড়াও আনসারের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত।
উল্লেখ, হিন্দুধর্মাবলম্বীদের উৎসব প্রধান দূর্গা পূজা। শারদীয়া দুর্গাপূজাকে অকালবোধন বলা হয়। কালিকা পুরাণ ও বৃহদ্ধর্ম পুরাণ অনুসারে, রাম ও রাবণের যুদ্ধের সময় শরৎকালে দুর্গাকে পূজা করা হয়েছিল। হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে, শরৎকালে দেবতারা ঘুমিয়ে থাকেন। তাই এই সময়টি তাদের পূজা যথাযথ সময় নয়। অকালের পূজা বলে তাই এই পূজার নাম হয় অকালবোধন।
এই পূজার উধভব সম্পর্কে নানা মুনির নানা মত। দুর্গার কাঠামোয় আর একটি রহস্যময় ব্যাপার হলো নব পত্রিকা। পত্রিকা মানে পাতা হলেও আসলে নবপত্রিকা হলো ৯টি গাছ। এগুলি হলো কদলী বা কলা, হরিদ্রা বা হলুদ, জয়ন্তী, বিল্ব বা বেল, দাড়িম্ব বা ডালিম, অশোক, মান, কচু এবং ধান। একটি পাতাযুক্ত কলাগাছের সঙ্গে অপর আটটি গাছ মূল ও পাতাসহ একত্র করে একজোড়া বেল সহ সাদা অপরাজিতা গাছের লতা দিয়ে বেঁধে লালপাড় সাদা শাড়ি জড়িয়ে ঘোমটা দেওয়া বধূর আকার দেওয়া হয়। তারপর তাতে সিঁদুর দিয়ে দেবীপ্রতিমার ডান দিকে দাঁড় করিয়ে পূজা করা হয়। প্রচলিত ভাষায় নবপত্রিকার নাম কলা। আর না জেনে আমরা এটাকেই মনে করে আসছি গনেশের বউ।
শ্রী রামচন্দ্র দেবীকে বোধন করে রাবণ বধের জন্য বর লাভ করেছিলেন। বসন্তকালেই এই পূজা বিধি সম্মত।
ভারতীয় সংস্কৃতিতে দুর্গা পূজা একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য বহন করে চলছে। দেবী দূর্গা তিনি একদিকে যেমন দুর্গতি নাশিনী, জগৎজননী, আধ্যাশক্তি, অন্যদিকে তেমনি তিনি কন্যা, স্নেহের দুলালী গৌরী। এই দ্বিভাবের রূপের মধ্যেই বাঙালি দেবী দুর্গা সংস্কৃতিকে আবহমান কাল ধরে ঐতিহ্যের ধারায় বহন করে চলছে।
হিন্দু মতে শুক্রবার ৩০ সেপ্টেম্বর পঞ্চমী, শনিবার ১ অক্টোবর ষষ্ঠী, রবিবার ২ অক্টোবর সপ্তমী, সোমবার ৩ অক্টোবর অষ্টমী, মঙ্গলবার ৪ অক্টোবর নবমী, বুধবার ৫ অক্টোবর বিজয় দশমীর মধ্যে দিয়ে শেষ হবে ২০২২ইং এর শারদীয় দুর্গাৎসব।