1. zillu.akash@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@dailynewsbangla.com : Daily NewsBangla : Daily NewsBangla
রাজশাহী কারাগারে বন্দিদের জিম্মি করে চলছে ব্যবসা - dailynewsbangla
বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৪:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
রাজশাহী কারাগারে বন্দিদের জিম্মি করে চলছে ব্যবসা কক্সবাজারের টেকনাফে সাংবাদিকসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা আত্রাইয়ে অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন নওগাঁয় ২৩৮ টন ধান-চালসহ মিল সিলগালা মালিকের বিরুদ্ধে মামলা মোহনপুরে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রোগ মুক্তিতে দোয়া মাহফিল ও ইফতার ঠাকুরগাঁওয়ে রমজানজুড়ে চলবে যুবদলের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ভেড়ামারাতে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত ভেড়ামারা উপজেলা আইন-শৃংখলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত দৌলতপুর জামায়াতের উদ্যোগে ১৬০মন ইফতার সামগ্রী বিতরণ ফারুকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

রাজশাহী কারাগারে বন্দিদের জিম্মি করে চলছে ব্যবসা

ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫

রাজশাহী কারাগারে বন্দিদের জিম্মি করে চলছে ব্যবসা

 

রাজশাহী ব্যুরো “রাখিবো নিরাপদ, দেখাবো আলোর পথ” এটি বাংলাদেশ কারাগারের স্লোগান। স্লোগানটি শুনে বোঝা যায়, বন্দিদের নিরাপদ রাখতে একটি কারাগার রাষ্ট্রের কাছে কতটা দায়বদ্ধ। অথচ সেখানে দুর্নীতির তকমা দেখিয়ে উল্টো পথ দেখানো হচ্ছে বন্দিদের। প্রতিটি পদে পদে অনিয়ম দুর্নীতি ও ভোগান্তিতে জর্জড়িত রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার। আর এসকল দুর্নীতির সাথে জড়িত রয়েছেন রাজশাহীতে দ্বায়িত্বরত সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায়, জেলার আমান উল্লাহ, সুবেদার বদর উদ্দিনসহ অনেকেই। এক কথাই বলা যেতে পারে সকলে মিলে দুর্নীতি নামক পাহাড় তৈরি করেছে রাজশাহী কারাগারে। সেখানে দুর্নীতির মাধ্যমে যে অর্থ আয় করা হয়, তাতে সকলের পদ অনুযায়ী ভাগবন্টন করা হয়। কারাগারের অভ্যন্তরে একটু নজর দিলে মিলবে দুর্নীতির নানা তথ্য। প্রথমে একজন নতুন বন্দি কারাগারে প্রবেশ করার সময় শরীরে থাকা পোশাক খুলে দেহ তল্লাশি করা হয়। এরপর সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করা হয়। যেন কোন প্রকার অবৈধ দ্রব্য নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে। শুরুতেই একজন নতুন বন্দিকে রাখা হয় বেহাল দশায় পড়ে থাকা আমদানি নামক ওয়ার্ডে। এরপর শুরু হয় পদে পদে ভোগান্তি। প্রথম দিনে বন্দিদের যে খাবার খেতে দেয়া হয় তা মুখে তোলার মত নয়। সেখানে এক রাত থাকার পর তাকে অন্য ওয়ার্ডে বদলি করা হয়। এতে একটু ভাল ওয়ার্ডে থাকলে হলে বা পছন্দ মত ওয়ার্ডে থাকলে গেলে দিতে হবে দুই প্যাকেট ব্যনসন সিগারেট। আর এটি করে থাকেন কেস টেবিলে থাকা সুবেদার বদর উদ্দিন। তবে বদর উদ্দিন সরাসরি দেন-দরবার করেন না। সে রাইটারের মাধ্যমে লেনদেন করে থাকেন। এই বদর উদ্দিন শুধু সিগারেটেই সন্তুষ্ট থাকেন না, কারাগারে ভাল থাকতে হলে তার পার্সোনাল বিকাশ নাম্বারে দিতে নগদ টাকা। তার এই বিকাশের স্টেটমেন্ট দেখলে বোঝা যাবে সে প্রতিদিন কি পরিমান আয় করেন। অবৈধ ইনকামের জন্য প্রতিদিন কোননা কোন মামলা তৈরি করেন। বিশেষ করে ভিতরে মাদক বানিজ্য তার একটি বড় অংশ। ভিতরে মাদক প্রবেশের অন্যতম কারিগর কারারক্ষি (হাবিলদার) আ: রহমান। সে জয় ও শান্ত নামের দুই হাজতিকে মাদক সাপ্লাই করে থাকেন। মাদক প্রবেশের আরেকজন হচ্ছে কারারক্ষি সম্রাট। সে বিপ্লব ও মজনুকে সাপ্লাই করেন। এছাড়াও কারা প্রশাসনের সুযোগে রনি, তুহিন ও ডাকা সোহেল মাদকের ব্যবসা করে। এরকম অসংখ্য মাদকের ব্যবসায়ী রয়েছে। কারাগারে যত গুলো দুর্নীতি রয়েছে এর মধ্যে অন্যতম ক্যান্টিন বানিজ্য। সেখানে প্রতিটি জিনিসের মুল্য এতটাই বেশি যা বলে প্রকাশ করা যাবে না। ১০ টাকার ভাজি ৩০ টা, ৬০ টাকার গরুর মাংস ৮০ টাকা, ২৫ টাকার রান্না ডিম ৩৫ টাকা। এরকম অসংখ্য পন্য রয়েছে যা লিখে শেষ করা যাবে না। সেখানে বাজারের অচল পন্য দিয়ে বন্দিদের সাথে প্রতারনা করছে কারা কর্তৃপক্ষ। যেমন বিড়ি। সেখানে সবচেয়ে বেশি চলে বিড়ি ও সিগারেট। রাজশাহী কারাগারে নাটোরের লালপুর থেকে আমদানি করা হয় তাসিন বিড়ি। যা বাইরে চলে না। আবার কেউ কেউ বলছে, এই বিড়ি বাইরে ৭ টাকা প্যাকেট বিক্রয় হয়। অথচ কারাগারে ২০ প্যাকেট বিক্রয় করা হচ্ছে। রয়েল নেক্সট সিগারেট বাইরে ৬৫ টাকা প্যাকেট হলেও সেখানে বিক্রি হয় ৮০ টাকা করে। দেশের অন্যান্য কারাগারে ফাঁসির আসামীদের জন্য স্টার সিগারেট বরাদ্দ থাকলেও রাজশাহী কারাগারে ফাঁসির আসামীদের দেয়া হয় নিম্নমানের টি-টোয়েন্টি নামক সিগারেট। কারাগারে যার মুল্য ধরা হয় ৩০ টাকা। অথচ এই সিগারেট বাইরে ১০ টাকা প্যাকেট কেউ নিতে চাইবে না। এই ভাবে দুর্নীতির মাধ্যমে প্রতিমাসে কারা ক্যান্টিন থেকে আয় হয় প্রায় কোটি টাকা। আর সেই টাকা বন্টন হয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার কাছে চলে যায়। এই ক্যান্টিন নিয়ন্ত্রণ করেন জেলার আমান উল্লাহ নিজে। সেখানে আরেকটি বানিজ্য মোবাইল ফোন। কারাগারে প্রায় ৪ টি টেবিলে প্রায় ১২ টি ফোন চলে। যার বেশিরভাগ প্রভাবশালীদের দখলে। দুই থেকে তিনটি ফোন দেয়া হয় সাধারণ বন্দিদের জন্য। বাঁকীগুলো চলে প্রভাবশালী ও মাদককারবারিদের জন্য। সেখানে এক হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয় ৩০ মিনিট। এই টাকা লেনদেন করা হয় জামাদারদের (নায়েক পদ মর্যাদা) মাধ্যমে। প্রতিমাসে জামাদার পরিবর্তন হয়। স্বজন, বনি, আজিজুল, হুমায়ুন, আবু দ্বোহা। যারা ব্যক্তিগত ভাবে টাকা লেনদেন করে থাকেন। এরকম অসংখ্য প্রমান হিসেবে বন্দিদের নাম রয়েছে, যাদের থেকে টাকা লেনদেন করা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশ করা হলো না। কারাগারে আরেক বানিজ্য মেডিকেল বেড। সেখানে বন্দিদের গণনার পদ্ধতিকে বলা হয় ‘ফাইল’। সাধারণ ওয়র্ডে একজন বন্দি যেভাবেই থাকুক না কেন, তাকে উঠে বসে গণনায় অংশ নিতে হবে। এছাড়াও একটি বিছানায় ৫-৬ জন থাকতে হয়। যা রীতিমত চরম ভোগান্তি। এসকল দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে অর্থবিত্তরা মেডিকেলে বেড বুকিং করে থাকেন। এর জন্য প্রথম মাসে দিতে হয় ১০ হাজার টাকা। পরের মাস থেকে দিতে হয় ৭ হাজার টাকা করে। এই অবৈধ লেনদেনের সাথে সেখানকার দ্বায়িত্বরত কয়েকজন কয়েদি করে থাকেন। নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশ করা হলো না। এই সকল দুর্নীতির সাথে জড়িত সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায়। তবে এই রত্না রায় নিজে হাতে কোন কিছুই করেন না। এরকম অসংখ্য তথ্য রয়েছে প্রতিবেদকের হাতে যা পর্ব আকারে তুলে ধরা হবে। তবে কারাগারের ভিতরে কোন সাংবাদিক প্রবেশ করলেই তার উপর চালানো হয় মানষিক নির্যাতন। যার উৎকৃষ্ট উদাহরন সাংবাদিক মাজহারুল ইসলাম চপল। তাকে বিনা অপরাধে গাঁজা ও ঘুমের ঔষধ দিয়ে ফাঁসিয়েছে, সেখানকার দ্বায়িত্বরত চীফ রাইটার কামরুল, সুবেদার বদর উদ্দিন ও জেলার আমান উল্লাহ। তবে সাংবাদিককে ফাঁসানোর ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্মকতার হাত রয়েছে বলে অনুসন্ধান বলছে। এব্যাপারে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আমান উল্লাহ’র নাম্বারে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। কিছুক্ষণ পরে হুয়াটসএ্যাপে ফোন ব্যাক করলে কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, আপনি যে অভিযোগ করেছেন তা আমার জানা নাই। পরে প্রতিবেদককে চা খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে ফোন রেখে দেন। এরপর রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি (প্রিজন) কামাল হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নাই। আপনি বললেন, আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো। তবে এধরনের তথ্য প্রমান থাকলে আমাকে দিতে পারেন। কারাগারের বিভিন্ন অসংগতি নিয়ে সরাসরি কথা বলতে চাইলে তিনি ব্যস্ততার অযুহাত দেখান। গত বছরের ২৬ নভেম্বর কারাগারের ভিতরে কিসকো আত্মহত্যা নিয়ে জানতে চাইলে, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে ফোন রেখে দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ