বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : পরিচ্ছন্নতার নাম করে ফরিদপুরের বোয়ালমারী সরকারি কলেজের মেহগনি গাছের বড় বড় ডালপালা কেটে ফেলা হয়েছে। শুধু গাছের মূল কান্ডটা দাঁড়িয়ে রয়েছে। শুক্রবার ও শনিবার গাছের ডালপালা ছাঁটাই দেওয়া হয়।
শনিবার কলেজে গিয়ে দেখা যায়, কমপক্ষে ২৫টি গাছের বড় বড় ডালপালা কেটে ফেলা হয়েছে। তখনও কয়েকটি গাছের ডাল কাটা চলছিল। পরে স্থানীয় জনতা গিয়ে গাছের ডাল কাটা বন্ধ করে দেয়। কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী বাবলু, লাল মিয়া, এনায়েত হোসেন এ সময় কলেজ চত্বরে উপস্থিত ছিল। বড় বড় ডাল কেটে লগ বানানো হচ্ছে। সেই লগগুলি নসিমনে করে নেওয়া হয়েছে। এনায়েত হোসেন জানান, কলেজের অধ্যক্ষ সারের নির্দেশ অনুযায়ী গাছের ডালপালা ছাঁটাই দেওয়া হচ্ছে। আপনারা স্যারের সাথে কথা বলতে পারেন। যারা ডালপালা কাটছে তারাই ডালপালা নিয়ে বিক্রি করে শ্রমিকদের মজুরি দিচ্ছে। এ সময় একজন শ্রমিক জানান গতকাল (শুক্রবার) নেওয়া দুই নসিমন ডালপালা ১৪ হাজার ৪০০ টাকা বিক্রি করা হয়েছে।
পূর্বকামারগ্রামের মৃণাল মোল্যা বলেন, ছুটির দিনে কলেজের গাছ কেটে বিক্রি করে দিচ্ছে। বিষয়টি একেবারে অমানবিক। যেভাবে গাছের বড় বড় ডাল কেটে নেওয়া হয়েছে তাতে গাছগুলি ভবিষ্যতে বাঁচবে কি না সন্দেহ হচ্ছে। কলেজের সাবেক ছাত্র প্রিন্স বলেন, শিক্ষার্থী একটু গাছের ছায়ায় বসতে পারতো। কিন্তু যেভাবে গাছ ছাঁটাই করেছে তাতে গাছের ছায়ায় কারো বসার উপায় থাকলোনা। কলেজ রোডের বাসিন্দা মো. মশিউর রহমান মাছুম বলেন, সরকারি কলেজের গাছ বা গাছের ডাল কাটার কোন এখতিয়ার নেই। যেভাবে গাছ ছাঁটাই করা হয়েছে তাতে গাছগুলি ভবিষ্যতে মারা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, গাছের গুড়ি বা লগ বাইরে নিয়ে বিক্রি করার সুযোগ নেই। কলেজে নিলাম ডাকের মাধ্যমে বিক্রি করে সরকারি তহবিলে টাকা জমা দিতে হবে।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুস সাত্তার মিয়া মোবাইল ফোনে বলেন, আমি কলেজে গিয়ে দেখলাম গাছপালায় কলেজ ঘিরে গেছে। বাইরে থেকে কলেজ চেনা যায় না। কলেজের ভিতরের মাঠে পানি বেধে থাকে। পানি নিষ্কাশনের জন্য পাইপ বসিয়েছি। গাছের জন্য মাঠ শুকাতে পারেনা। তাই ওদেরকে বলেছিলাম ছোট ছোট ডাল, পাতা ছাঁটাই করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু ওরা কিভাবে কি করেছে আমিতো দেখি নাই। খবর পাওয়ার পর আর কাটতে নিষেধ করেছি। কাল (রোববার) কলেজে গিয়ে বিষয়টি দেখবো। কলেজে ভালো কোন সাবজেক্ট নেই। ছাত্রও নেই। কলেজের কোন ফান্ড নেই।