দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে জমিজমা সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধের জেরে আপন ভাইয়ের হামলায় বোন ও তার ছেলে গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত আব্দুল্লাহ সাহাবী (২৮) বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে, হামলার ফলে সাহাবীর একটি চোখ সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে।
ঘটনাটি ঘটে গত ১৯ জুলাই (শনিবার) দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের জয়রামপুর গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল নাসিমা খাতুন ও তার ভাই রেজাউলের মধ্যে। ঘটনার দিন ওই বিরোধের জের ধরে রেজাউল, তার স্ত্রী, সন্তানসহ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নাসিমার বাড়িতে হামলা চালায়।
আহত নাসিমা খাতুন ঘটনার পর রাতেই দৌলতপুর থানায় ভাই রেজাউল, ভাবি, ভাতিজাসহ মোট সাতজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করলেও পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
ঘটনার বিচার দাবিতে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুর ২টায় জয়রামপুর বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন আহত পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী। তারা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আহত সাহাবীর মা নাসিমা খাতুন বলেন, “আমি একজন স্বামীহারা অসহায় নারী। একমাত্র ছেলেকে নিয়েই আমার বেঁচে থাকার আশা। আজ সে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি। প্রশাসনের কাছে আমার অনুরোধ দয়া করে দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন।”
তিনি আরও বলেন, “আমার ভাই রেজাউল পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রসহ আমার বাড়িতে প্রবেশ করে নির্মমভাবে হামলা চালায়। আমার ছেলে সাহাবীকে হত্যার উদ্দেশ্যে রামদা দিয়ে কোপ দিতে গেলে সে আত্মরক্ষার্থে হাত তুললে গভীরভাবে কাটা পড়ে। এরপর তার চোখে এমনভাবে আঘাত করা হয় যে সে এখন একটি চোখে দেখতে পাচ্ছে না।”
নাসিমা জানান “ছেলেকে বাঁচাতে গেলে রেজাউল লোহার রড দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করতে আসে। আমি বাঁ হাত দিয়ে রক্ষা করতে গেলে হাত ভেঙে যায়।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, “যেহেতু এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে, আমরা আসামিদের আটকের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ভুক্তভোগী পরিবার যেন সর্বোচ্চ আইনি সহায়তা পায়, তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।