মো.আককাস আলী,নওগা জেলা প্রতিনিধিঁ: নওগাঁয় চালের বাজার
অস্থির হওয়ায় স্বল্প আয়ের মানুষেরা বিপাকে পড়েছে। দেশে চালের কোনো
ঘাটতি না থাকলে বাজার চড়া। বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় রেকর্ড পরিমাণ চাল উৎ্ধসঢ়;পাদন হয়েছে। এখন মাঠে আছে আউশ ও আমন। বন্যা না হলে আমনেও ভালো ফলনের আশা করছে কৃষি মন্ত্রণালয়।কিন্তু এত ইতিবাচক খবরের পরও অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ৫২ টাকায় উঠেছে।
এই দাম গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অন্য চালের দামও বাড়তি। ফলে এই করোনা মহামারির মধ্যে বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কারসাজি চক্রের কারণেই চালের দাম বাড়ছে। বেশি লাভের আশায় মিলার ও মজুতদাররা ধান, চাল মজুত করে রেখেছে। ফলে চাহিদার তুলনায় বাজারে ধান-চালের সরবরাহ কম।
এই সিন্ডিকেট এতটাই শক্তিশালী যে,তাদের নিয়ন্ত্রন করতে পারছে কর্তৃপক্ষ এমনি অভিযোগ সমালোচকদের। দেশের অন্যতম চাল উৎপাদনকারী উপজেলা ও বৃহত্তর মোকাম নওগাঁর মহাদেবপুর। এখানেও বেড়েছে চালের দাম। একদিকে চলছে কঠোর বিধি-নিষেধ অন্যদিকে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে পাইকারি ও খুচরা বাজারে ঊর্ধ্বোমুখী হচ্ছে চালের দাম।
ফলে বিপাকে পরেছে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যানচালকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নিম্ন আয়ের মানুষ। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি মোকামে ৫০ কেজির বস্তাপ্রতি ২০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাইকারিতে দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। এ নিয়ে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন অজুহাত দেখালেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ ক্রেতারা।
বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোড়ালো করলে সাবেক অবস্থায় চালের দাম ফিরে আসবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সচেত মহল ও ক্ষুদ্র ধানচাল ব্যবসায়ীরা।
চাল ব্যবসায়ীরা বলছে, ‘বাজারে ধানের দাম মণপ্রতি ১৫০-২০০ টাকা বৃদ্ধি
পেয়েছে। অধিক লাভের আশায় ধান কিনে বড় বড় মিলার ও ব্যবসায়ীরা স্টক করেছেন।
তাই বাজার অস্থির।’ খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আদিকাল থেকেই ধান প্রধান অর্থকরী কৃষিপণ্য হিসেবে অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। ছোট-বড় মিলে মহাদেবপুর উপজেলা জুড়ে প্রায় ৬০০টি অটোমেটিক-হাসকিং রাইস মিল রয়েছে। এসব মিলে উৎপাদিত চাল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।
এ কারণে মহাদেবপুর মোকামে চালের দাম বৃদ্ধি পেলে অস্থির হয়ে উঠে সারা দেশের বাজার। উপজেলার খুচরা বাজারের ইউসুফ খাদ্য ভান্ডারের মালিক আলহাজ রুহুল আমিন সাংবাদিকদের বলেন, আগে যে মোটা চাল প্রতি কেজি ৩৮-৪০ টাকায় বিক্রি হতো এখন সেই চাল ৪২-৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। জানতে চাইলে চালকল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি আলহাজ আব্দুল জব্বার সাংবাদিকদের বলেন, ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চালের দাম বেড়েছে।
আগে যে ধান ৯০০ টাকায় বিক্রি হতো এখন সে ধান ১০৫০-১১০০ টাকায়
বিক্রি হচ্ছে। ঈশ^রপুর গ্রামের ভ্যানচালক শুকনা বলেন, লকডাউনের কারণে আগের মত আয় হচ্ছে না। এ অবস্থায় চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন তিনি। একই কথা বলেন- তাহের, ফারুক, লোকমান, তারেকুলসহ ১০-১৫ জন নিম্ন আয়ের মানুষ।
বাজার মনিটরিং এর বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান
মিলন বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসারদের বাজার মনিটরিং করার নির্দেশ দিয়েছেন। অকারণে কেউ দ্রব্যমূল্য বেশি নিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।