কাজি মোস্তফা রুমি, স্টাফ রিপোর্টার : মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বঙ্গবন্ধুর চার খলিফার একজন, স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক ও প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ শাহজাহান সিরাজের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই)।
এ উপলক্ষে ঢাকা ও টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে কোরানখানি, দুঃস্থ শিশুদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ এবং মসজিদ ও মন্দিরগুলোতে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। শাহজাহান সিরাজের মেয়ে ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দিবসটি উপলক্ষে শাজাহান সিরাজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের পক্ষ থেকে তাঁর জীবন ও কর্মের উপর আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া কালিহাতী শাহজাহান সিরাজ কলেজে বেলা ১১টায় মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
প্রকাশ, বর্নাঢ্য রাজনীতিবিদ শাহজাহান সিরাজ ১৯৪৩ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইলের কালিহাতীর গোহাইলবাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল গণি মিয়া এবং মাতার নাম রাহিমা খাতুন। ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে তার ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ। সেই সময় তিনি টাঙ্গাইলের করটিয়া সাদত কলেজের ছাত্র ছিলেন। শাজাহান সিরাজ স্বাধীনতা পূর্ববর্তী রাজনীতির ‘চার খলিফা’র একজন। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তৈরির পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ৩ মার্চ ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ।
শাহজাহান সিরাজ একজন তুখোড় ছাত্রনেতা হিসেবে ষাটের দশকে বঙ্গের আলীগড় খ্যাত টাঙ্গাইলের করটিয়ার সরকারি সা’দত কলেজের ছাত্রসংসদের ২ বার ভিপি নির্বাচিত হন। স্বাধীনতার পর শাহজাহান সিরাজ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের রাজনীতির সাথে থেকে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন এবং জাসদের সভাপতি নির্বাচিত হন। পরে জাসদ থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিতে যোগদান করে ভাইস চেয়ারম্যান হন। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ শাহজাহান সিরাজ জাসদের প্রার্থী হয়ে ১৯৭৯, ১৯৮৮, ১৯৯১, সালে এবং ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপির প্রার্থী হয়ে মোট ৫ বার টাংগাইল- ৪ (কালিহাতী) আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বিএনপি সরকারের নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী, বন ও পরিবেশ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন।
শিক্ষানুরাগী হিসেবে তিনি কালিহাতী উপজেলা সদরে কালিহাতী শাহজাহান সিরাজ কলেজসহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।
দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর তিনি ২০২০ সালের ১৪ জুলাই ঢাকায় ইন্তেকাল করেন।