1. zillu.akash@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@dailynewsbangla.com : Daily NewsBangla : Daily NewsBangla
অধ্যাপক তাহের হত্যার আসামীদের ফাঁসি কার্যকর - dailynewsbangla
বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন

অধ্যাপক তাহের হত্যার আসামীদের ফাঁসি কার্যকর

ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৮ জুলাই, ২০২৩

অধ্যাপক তাহের হত্যার আসামীদের ফাঁসি কার্যকর

রাজশাহী ব্যুরো: দীর্ঘ ১৭ বছর বিচারাধীন শেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদকে হত্যার দায়ে দণ্ডিত দুই আসামি মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এবং জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। রাজশাহীর কেন্দ্রীয় কারাগারে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) রাত ১০টা ১মিনিটে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ তথ্য নিশ্চিৎ করেন। দুই আসামীর ফাঁসি কার্যকরের সময় উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক কামাল হোসেন, রাজশাহী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক শামিম আহমেদ, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আব্দুর রকিব, রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. আব্দুল জলিল, জেলার নিজাম উদ্দিন, রাজশাহী কারা হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. মো. মিজানুর রহমান, ডা. মো. জুবায়ের আলম, ডেপুটি জেলার মুহাম্মদ আবু সাদ্দাত। দুই আসামির মধ্যে জাহাঙ্গীর ছিলেন অধ্যাপক তাহেরের বাড়ির কেয়ারটেকার। আর মহিউদ্দিন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগে তাহেরের সহকর্মী। মামলা সূত্রে জানাযায়, গবেষণা জালিয়াতির কারণে মহিউদ্দিনের পদোন্নতি আটকে দিয়েছিলেন তাহের। সেই ক্ষোভে মহিউদ্দিনের পরিকল্পনায় ২০০৬ সালে তাহেরকে হত্যা করে লাশ ম্যানহোলে ফেলে দেওয়া হয় বলে এ মামলার বিচারে উঠে আসে। ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর রাতে অধ্যাপক তাহেরের মেয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী সেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আজকের এই কার্যক্রমে সত্যের জয় হল। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞত সবাইকে। ১৭ বছর ধরে আমি ও আমার ভাই, বাবাকে বাবা বলে ডাকতে পারিনি। এই কষ্ট কেমন, যার বাবা নাই সেই জানে!! ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পশ্চিমপাড়া আবাসিক কোয়ার্টার থেকে অধ্যাপক তাহের নিখোঁজ হন। ওই বাসায় তিনি একাই থাকতেন। কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর তার দেখাশোনা করতেন। পরদিন বাসার পেছনের ম্যানহোল থেকে অধ্যাপক তাহেরের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ৩ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। অধ্যাপক তাহেরের করা একটি জিডির সূত্র ধরে বিভাগের শিক্ষক মহিউদ্দিন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী, কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীরসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে তিনজন আদালতে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা বলেন, অধ্যাপক এস তাহের ঐ বিভাগের একাডেমিক কমিটির প্রধান ছিলেন। একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মহিউদ্দিন অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য কমিটির সুপারিশ চেয়ে আসছিলেন। কিন্তু গবেষণা জালিয়াতির কারণে অধ্যাপক তাহের তা দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মহিউদ্দিন, তাহেরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। বালিশ চাপা দিয়ে খুনের পর বাড়ির ভেতরে থাকা চটের বস্তায় ভরে অধ্যাপক তাহেরের লাশ বাসার পেছনে নিয়ে যায়। লাশ গুমের জন্য জাহাঙ্গীররের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুলের শ্যালক আবদুস সালামকে ডেকে আনা হয়। তাদের সহায়তায় বাসার পেছনের ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে তাহেরের লাশ ফেলে দেওয়া হয়। ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ শিবির নেতা মাহবুব আলম সালেহীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে এ মামলার চার্জশিট দেয় পুলিশ। বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চারজনকে ফাঁসি ও দুজনকে খালাস দেয়। দণ্ডিত অন্যরা হলেন জাহাঙ্গীরের ভাই নাজমুল ও নাজমুলের শ্যালক সালাম। তবে ছাত্রশিবিরের নেতা সালেহী ও আজিমুদ্দিন মুন্সি বিচারে খালাস পান। পরে দণ্ডিতরা হাই কোর্টে আপিল করেন। হাই কোর্ট মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের রায় বহাল রাখলেও নাজমুল ও সালামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।তাদের দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাই কোর্ট বিভাগের রায়ই বহাল রাখে। এরপর আসামিদের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনও খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট। শেষ ধাপে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন আসামিরা। ছয় মাস আগে রাষ্ট্রপতি সে আবেদনও নাকচ করে দিলে ২৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) দণ্ড কার্যকর হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ