বিধান মন্ডল (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার (২০শে এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে নিহতের বাড়ির পাশে বাগানে রাস্তার সাথে এই ঘটনা ঘটে। নিহত ওই ব্যাক্তির নাম মো. অলিয়ার শেখ (৫০)। তিনি উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের সাধুহাটি গ্রামের শিংগিপাড়া এলাকার মৃত আদম শেখের ছেলে। অলিয়ার বিবাহিত এবং তার চার মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে।
নিহত অলিয়ারের স্ত্রীর আলেয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমরা গরীব, আমাদের বাড়ির জমি ছাড়া কোনো জমি নেই। আমার স্বামী বাড়ির পাশে ৩ শতক জমি লিজ নিয়ে বেগুনের আবাদ করছে। আমাদের বেগুন ক্ষেতের পাশে প্রতিবেশী ইসহাক শেখের পানের বরজ রয়েছে।
ওই পানের বরজে যাওয়া-আসার জন্য ইসহাক আমার স্বামী কাছে বেগুন ক্ষেতের ভিতর দিয়ে একটি পথ বের করে দিতে বলেন। আমার স্বামী রাজি না হলে তার উপর ক্ষিপ্ত হয় ইসহাক। এছাড়াও আমার মেয়ের বিয়ে নিয়েও ইসহাক শেখের সাথে আমার স্বামীর পূর্ব শত্রুতা ছিল।
তিনি আরও বলেন, এই পথ দেওয়া নিয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েক দফা সালিশ হয়েছে। এর আগে আমার স্বামীর উপর হামলাও করেছে ইসহাক ও তার ছেলেরা। সবশেষ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাধুহাটি গ্রামের একটি চায়ের দোকান থেকে চা খেয়ে এবং ডিম কিনে নিয়ে বাড়ির ফেরার পথে ইসহাক শেখ ও তার দুই ছেলে এবং আরও কয়েকজন আমার স্বামীকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।
মৃত্যুর আগে আমার স্বামী ওদের নাম বলে গেছে। তবে এই ঘটনায় ইসহাক শেখসহ তার ছেলেদের বাড়িতে না পাওয়ায় এই অভিযোগের বিষয়ে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানান অলিয়ার এলাকায় একজন ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত। তিনি নিতান্তই গরীব। নিজের জমির উপর একটি ছাপড়াঘর ছাড়া আর কিছুই নেই। তাকে কেন এমন নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হলো তা বুঝতে পারছি না।
সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসিকুজ্জামান বলেন, অলিয়ার ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ৩ শতক জমি লিজ নিয়ে সবজির চাষ করেছিল। ওই সবজি ক্ষেতের ভিতর দিয়ে পথ বের করাকে কেন্দ্র করে অলিয়ারের সাথে ও পার্শ্ববর্তীর জমির মালিক ইসহাকের বিরোধ সৃষ্টি হয়।
এই বিরোধের জেরধরে ওলিয়ারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে তার পরিবাররের অভিযোগ। ওলিয়ারের শরীরের একাধিক কোপের দাগ রয়েছে। তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।