রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে দুই গ্রুপের মারামারিকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরির চেষ্টা করছে একটি কুচক্রি মহল। সেখানে বলা হচ্ছে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রকি কুমার ঘোষ এর নেতৃত্বে মসজিদে হামলা করা হয়েছে।
১৭ তারিখ ( বৃহস্পতিবার) দুপুরে নগরীর ৯ নং ওয়ার্ডের সিপাহীপাড়া ও ১০ নং ওয়ার্ডের হেতেমখাঁ লিচু বাগান এলাকার ছোটদের মধ্যে ছোট খাট গন্ডগোল বাধে। এরপর সন্ধ্যায় (আনুমানিক ৮.৩০ মিনিটে) লিচু বাগান এলাকার ছেলেরা ঘোষপাড়া মোড়ে গেলে সিপাহীপাড়ার কিছু ছেলেরা তাদের হুমকি ধামকি দেয়। পরে লিচু বাগানের ছেলেরা তাদের বড় ভাইদের জানালে ১০ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন শাওন এর ছোটভাই শিমুল তেড়ে আসে এবং উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘটে। উল্লেখ্য লিচু বাগান এলাকায় রকি কুমার ঘোষের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক চেম্বার রয়েছে।
সেই সুবাদে রকি কুমার ঘোষ পরিবেশ পরিস্থিতি শান্ত করার লক্ষে বেরিয়ে আসে। এবং লিচুবাগান জামে মসজিদের সামনে গিয়ে উভয়কে থামতে বলে। তাতে ঐ এলাকার লোকজন বিরূপ চিন্তা করে উল্টো রকি কুমার ঘোষকে দোষারোপ করতে থাকে। এবং ইট পাটকেল ছুড়াছুড়ি শুরু করে। বাধ্য হয়ে রকি কুমার ঘোষ সেখান থেকে চলে আসে। পরবর্তীতে লিচু বাগান এলাকার লোকজন গুজব ছড়াই যে, রকি কুমার ঘোষ তার দলবল নিয়ে মসজিদে হামলা করেছে। এতে এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে রকি কুমার ঘোষের উপর হামলার পরিকল্পনা করে।
পরে পুলিশ গিয়ে পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
বিষয়টি নিয়ে ১০ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন শাওন এর সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি বলেন, এই লিচু বাগান এলাকায় আমার বাড়ি, এই এলাকায় কেউ অন্যায় করলে আমি প্রতিবাদ করি। এই প্রতিবাদ করার সুবাদে অনেকে কাছেই আমি খারাপ হই। কিন্তু আমি অন্যায়ের কাছে আপস করিনা।
আমার এলাকায় কোন কিছু হলেই এই রকি কুমার ঘোষ মাথা ভরে দেয় কেন? আজকে রকি কুমার ঘোষের নেতৃত্বে আমাদের মসজিদে হামলা করেছে। যা খুবই ন্যক্কার জনক। তাই প্রশাসন ও জনগনের কাছে দাবি এর বিচার চাই। এছাড়াও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলেমুল রাজি মিঠু রকি কুমার ঘোষের বিভিন্ন অপকর্মের কথা তুলে ধরেন।
তবে ঘটনার পর পরই রকি কুমার ঘোষ একটি বিবৃতি দিয়ে বলেন, এখানে আমার ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক কোন ঝামেলা না। এখানে দুই পাড়ার ছোটদের ঝামেলা, আমি এলাকার ভাই হিসেবে তাদের থামানোর উদ্দেশ্য গিয়েছি। কিন্তু তারা আমাকেই দোষারোপ করছে। আমি আমার ধর্ম ও মন্দিরকে যেমন ভালবাসি ঠিক তেমনি মুসলমান ও মসজিদকে শ্রদ্ধা করি।
আমি মুসলমানদের বিশেষ দিনগুলোতে বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকি। যা এই এলাকার মানুষকে জিজ্ঞাসা করলেই পাওয়া যাবে। অথচ এখানে চক্রান্ত করে আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও সম্মান নষ্ট করার জন্য একটি মহল চক্রান্ত করছে। সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে দেখেন আমার কোন সম্পৃক্ততা আছে কি।
যদি আমার দোষ বা সম্পৃক্ততা থাকে তাহলে, আইন যেই শাস্তি দিবে আমি মাথা পেতে নিব। তবে আমার মনে হচ্ছে এখানে জামায়াত বিএনপির ইন্ধন রয়েছে। কারন এখানে দুই মহল্লার ঝামেলায় মসজিদে হামলার কথা অপ্রচার করছে। এই কুচক্রি মহল হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে একটা ইস্যু তৈরি করে আবার দেশটাকে অস্থিতিশীল করতে চাই। এই মিথ্যা অপবাদ বা অপপ্রচার করে যারা উষ্কাচ্ছে, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
এই বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারণ চন্দ্র বর্মন এর সাথা কথা বললে তিনি জানান, ঘটনার পরপরই ঘটনা স্থলে পুলিশ হাজির হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এখানে কোন ধরনের হতাহত হয়নি। শুধু ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটেছে। তবে পুলিশ উভয় পক্ষকে ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করেছে।
পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, প্রয়োজনে সারারাত থাকবে যাতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। তবে যে বা যারা খারাপ কিছু করার চেষ্টা করবে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।