1. zillu.akash@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@dailynewsbangla.com : Daily NewsBangla : Daily NewsBangla
ই-জিপি টেন্ডারের নামে চলছে পশ্চিমাঞ্চল রেলের দুর্নীতি - dailynewsbangla
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
নওগাঁয় আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উপলক্ষে  আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত  বগুড়া আদমদীঘিতে উপজেলা নির্বাচনে ১০ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা বাঘা উপজেলার কাদিরপুর উচ্চ বিদ‍্যালয় মাঠে বৃষ্টির জন্য ইস্তেস্কার নামাজ আদায় বগুড়ায় ফেন্সিডিলসহ ২ জন  গ্রেফতার   ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়  তীব্র তাপদাহে নগরীর ১০ টি পয়েন্টে স্যালাইনপানি বিতরণ করবে রাসিক দৌলতপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে  প্রতিপক্ষের উপর হামলা, আহত ৩ বগুড়ায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে পথচারীদের বিশুদ্ধপানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ বোয়ালমারীতে ২০টি মাদক মামলার আসামি মাদকসহ গ্রেপ্তার বদলগাছীতে ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসা শিক্ষকের ১০ বছর  কারাদণ্ড

ই-জিপি টেন্ডারের নামে চলছে পশ্চিমাঞ্চল রেলের দুর্নীতি

ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১২ এপ্রিল, ২০২১

মাজহারুল ইসলাম চপল, ব্যুরো চীফঃ দেশের গণপরিবহন বিভাগের অন্যতম অংশ বাংলাদেশ রেলওয়ে। আর উত্তরবঙ্গের অন্যতম ভরসা পশ্চিমাঞ্চল রেল। কিন্তু পশ্চিমাঞ্চল রেলের দুর্নীতি যেন থামছেই না। একের পর এক দুর্নীতি করে পার পেয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালী ঠিকাদাররা। যদিও সম্প্রতি পশ্চিমাঞ্চল রেলের চারজন অফিসারকে দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

তবে অভিযুক্ত জিএমসহ অন্যান কর্মকর্তারা এখনো বহালতবিয়তে রয়েছে। যে সকল ঠিকাদারকে ঘিরে এই সকল দুর্নীতি, তাদেরকেই ঘুরে ফিরে কাজ দিচ্ছেন রেলের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা। ইজিপি’র নামে কারসাজি করে পছন্দের ঠিকাদারকে দেওয়া হচ্ছে কমিশনভিত্তিক কাজ। সম্প্রতি পশ্চিম রেলে যোগ হয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম ফিরোজী। সেও যোগদানের পর ঠিকাদারের নিকট থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গোপনসুত্র বলছে, রেলের চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ঠিকাদারদের একক দৌরাত্ম নিয়ে ২০ সালে রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সদস্যরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে সাবেক ডিজি শামসুজ্জামানকে নানান কথা শুনিয়েছিলেন। কারণ একটি সিন্ডিকেটকে রেলের শত শত কোটি টাকার কাজ নজিরবিহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে দেওয়ার একাধিক অভিযোগ সংসদীয় কমিটিতে জমা পড়েছিল। ওই সিন্ডিকেট দেওয়া সব টেন্ডার পর্যালোচনা করে কমিটির সদস্যরা দেখতে পান প্রতিটি ক্ষেত্রেই গুরুতর অনিয়ম হয়েছে।

ওই সিন্ডিকেটটি গত কয়েক বছরে বাগিয়েছেন রেলের শত শত কোটি টাকার কাজ। ডিজির বন্ধু পরিচয়ে তার এই দৌরাত্ম নিয়ে সংসদীয় কমিটি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। অনিয়ম বন্ধে ব্যবস্থা নিতে রেল সচিব ও ডিজিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। করেছিলেন তদন্ত উপ-কমিটি। কিন্তু তাতে বিশেষ কিছু হেরফের হয়নি।

অন্যদিকে ব্যালাষ্ট (পাথর) সরবরাহে অনিয়মের দুদকের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে এমন সব প্রতিষ্ঠানকে আবারও একই ধরনের কাজ দেওয়ার অভিযোগ করেছেন রেল ঠিকাদারদের একটি অংশ। তারা বলছেন এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কাজ না করেই বিপুল পরিমাণ টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান আছে দুদকে। এরপরও দুর্নীতিতে জড়িত এইসব প্রতিষ্ঠানকে ৯টির মধ্যে ৬টি গ্রুপের কাজ ভাগাভাগি করে দেওয়া হয়েছে। ইজিপির কারসাজিতে এই কাজগুলো দেওয়া হচ্ছে এই সকল দুর্নীতিবাজ প্রতিষ্ঠান গুলোকে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সম্প্রতি পশ্চিম রেলের ইজিপি টেন্ডারেও গুরুতর কারসাজির মাধ্যমে একটি কনষ্ট্রাকশানকে প্রায় ৪ কোটি টাকার ব্যালাষ্ট (পাথর) সরবরাহের কাজ দেওয়া হয়েছে । আরও প্রায় দুই কোটি টাকার আরেকটি কাজ দেওয়া হয়েছে ওই সিন্ডিকেটের সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে। অথচ ই-জিপি টেন্ডারে, টেন্ডারের আবশ্যিক শর্তাবলী পূরণ করেননি।

মন্ত্রণালয়ের একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তার নির্দেশে পশ্চিমাঞ্চল রেলের রেলওয়ের কর্মকর্তারা কারসাজি করে কাজ দিয়েছে বলে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদাররা অভিযোগে বলেছেন। তারা অভিযোগ করে আরও বলেন এই সকল কাজের নামে নব্য যোগদানকৃত প্রধান প্রকৌশলীকে দেওয়া হয়েছে মোটা অংকের কমিশন।

পশ্চিম রেলের বঙ্গবন্ধু পুর্ব থেকে টাঙ্গাইলের মহেড়া পর্যন্ত রেল ট্র্যাকে বালাষ্ট (পাথর) সরবরাহের ১ কোটি ৯১ লাখ ২৩ হাজার টাকা ( টেণ্ডার কোড নং-৫৩৩৫২৬) এবং লালমনিরহাট-কাউনিয়া রেল ট্র্যাকে বালাষ্ট সরবরাহের ১ কোটি ৬০ লাখ ৮০ হাজার টাকার ( টেণ্ডার কোড নং- ৫৩৩৫২১) দুটি কাজ আফসার বিশ্বাসসকে দেওয়ার সুপারিশ করেছে পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের টেণ্ডার কমিটি।

অন্যদিকে সান্তাহার-তালোড়া পর্যন্ত ট্র্যাক সংস্কারে ব্যালাষ্ট সরবরাহে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকার ( টেন্ডার কোড নং-৫৩৩৫২৩) দেওয়া হয়েছে আফসার সিন্ডিকেটের আরেক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল হাইটেক ইঞ্জিনিয়ারিংকে। অভিযোগ মতে, এসব প্রতিষ্ঠান টেন্ডারের আবশ্যক শর্তাবলী পুরণ করতে না পারলেও অদৃশ্য তদবিরের কারণে এই তিনটি প্রতিষ্ঠানকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সুপারিশ দিয়েছে টেন্ডার কমিটি। এই সুপারিশ পাঠানো হয়েছে রেল মহাপরিচালকের দপ্তরে। এখন সিন্ডিকেটকে কার্যাদেশ দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগে আরও জানা গেছে, ইজিপি টেণ্ডারে কারচুপির সুযোগ না থাকলেও টেন্ডার কমিটি সিন্ডিকেটকে যোগ্য উল্লেখ করে সুপারিশ দিয়েছে। সূত্র অনুযায়ী ইজিপি-টেন্ডারের নিয়মানুযায়ী এসব কাজের জন্য নিম্নদর দিলেও টেন্ডারের আবশ্যিক শর্তানুযায়ী অন্যান্য নথিপত্র ও নির্দিষ্ট টাকার অভিন্ন কাজের অভিজ্ঞতার সনদসহ সহায়ক সার্টিফিকেট অনলাইনে সংযুক্ত করেননি।

বিশেষ করে অনুরূপ কাজের নির্দিষ্ট সময়ে নিদিষ্ট অংকের কাজ সম্পাদনের অভিজ্ঞতা, ব্যাংক সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন নথিপত্র ই-জিপি পদ্ধতির এই টেণ্ডারে এসব নথিপত্র সংযুক্তির কথা বলা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলির মতে, টেণ্ডারের শর্তাবলী অনুযায়ী একটি কোন নথি অনলাইনে জমা না করলেই সেই দরপত্রদাতার প্রস্তাব সরাসরি বাতিল বলে বিবেচিত হবে।

কিন্তু পরবর্তীতে কেউ চাইলেও আর কোনভাবেই অনলাইনে বা সরাসরি মাধ্যমে বাদপড়া নথিপত্র দরপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারেন না। ইজিপির কোড নম্বর দিয়ে অনলাইনে প্রবেশ করে অংশগ্রহণকারী সকল ঠিকাদার পরস্পরের দেওয়া দর ও দাখিলকৃত নথিপত্র চেক করে দেখতে পারেন। ই-জিপিতে একবার নথিপত্র জমা করলে তা দ্বিতীয়বার সংশোধনের সুযোগ থাকে না। কিন্তু টেণ্ডার কমিটি ই-জিপির শর্তাবলী লঙ্ঘন করে তিনটি কাজ আফসার সিন্ডিকেটটে তিনটি কাজের সুপারিশ দিয়েছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম ফিরোজী বলেন, এই টেন্ডারগুলির প্রক্রিয়া তিনি যোগদানের আগেই সম্পন্ন হয়েছে। সুতরাং তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না। তবে কমিশনের বিষয়টি তিনি সুকৌশলে এড়িয়ে যান।

এদিকে টেন্ডার কমিটির সদস্য পাকশীর ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম বলেন, ইজিপি টেন্ডারে কারসাজির সুযোগ নেই। ৯ গ্রুপের এসব কাজ কাগজপত্র দেখেই যারা যোগ্য তাদেরকে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বিশ্বাস কনষ্ট্রাকশানও দুটি গ্রুপের কাজে যোগ্য হয়েছেন। ফলে তাকে সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ