মো.আককাস আলী,নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার প্রায় সাড়ে ৩ লাখ জনসংখ্যার একমাত্র ৫০ শয্যার সরকারি হাসপাতালটি নিজেই এখন রোগী। বছরের পর বছর হাসপাতালে পানি সরবরাহের ট্যাংকিটি পরিষ্কার না করায় ট্যাংকির ভেতরে জমেছে ময়লার স্তুপ।
পানির ট্যাংকিটি ঘিরে গজিয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির আগাছা, গাছ-গাছালি। আগাছার স্তুপে পানির ট্যাংকি দেখায় যায় না। এই ট্যাংকির পানি খাওয়াসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছে হাসপাতালে ভর্তি রোগী, রোগীর আতœীয়-স্বজনসহ বহিরাগত রোগীরা।
এই ট্যাংকির পানি ব্যবহার করায় রোগীরা সুস্থ্য হওয়ার পরিবর্তে বিভিন্ন
পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীরা বেশী আক্রান্ত হচ্ছে। পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ময়লা আবর্জনা। দুর্গন্ধে রোগী ও রোগীর স্বজনরা টিকতে পারছে না স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধের মধ্যেই রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করছেন ডাক্তাররা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির যেখানে সেখানে পড়ে আছে রোগীর ব্যবহারিত গজ ব্যান্ডেজসহ অন্যান্য উপকরণ। জনবল সংকটের অজুহাতে প্রতিনিয়ত রোগীদেরকে পড়তে হয় বিপাকে।
ভালো চিকিৎসা দিতে না পারায় ভর্তি হওয়া প্রায় রোগীকে নওগাঁ সদর হাসপাতাল বা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে দেওয়া হয়। চিকিৎসা সেবা নিতে আসা মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, এই হাসপাতালের পরিবেশ এত নোংরা যে সুস্থ মানুষ এখানে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। যেখানে সেখানে ময়লা আর্বজনা ফেলে রাখছে এবং সেখানেই রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছে ডাক্তারা।
এই হাসপাতালে আমরা রোগী এনে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। হাসপাতাল অসুস্থ রোগী নিয়ে চিকিৎসার জন্য আমরা যারা রোগীর সাথে আসি দুর্গন্ধের কারণে তারাও অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমরা চাই একটু হাসপাতালটির পরিবেশ সুন্দর হোক। হাসপাতালের নোংরা পরিবেশ ও পানির ট্যাংকির ময়লা-আবর্জনা সম্পর্কে জানতে চাইলে আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরএমও ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, জনবল সংকটের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
ময়লা-আবর্জনায় পরিপূর্ণ পানির ট্যাংকির এ পানিতে রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, স্বাস্থ্যঝুঁকি তো অবশ্যই আছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন মহলকে জানানো হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
দীর্ঘদিন ধরে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সংকট রয়েছে।
এছাড়া করোনার টিকা দেওয়ার কারণে লোক সমাগম বেশি হওয়ায় পরিবেশ একটু নোংরা হচ্ছে। পানির ট্যাংকির ব্যাপারে তিনি বলেন, ট্যাংকির ঢাকনা আছে। পর্যায়ক্রমে এগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে।