মোহাম্মদ আককাস আলী : বরেন্দ্র অঞ্চলে চাষিরা এখন মাচা পদ্ধতিতে নানান জাতের লাউ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। কৃষিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে এখন বারো মাসই উৎপাদন হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির লাউ। সহজ পদ্ধতি এবং গাছের গুনগত মান ভালো থাকায় ফলন বেশি পেয়ে চাষিদের কাছে এখন মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এক চাষির দেখে অন্য চাষিরাও মাচায় লাউ চাষ শুরু করেছেন। অল্প সময়ে বেশি লাভ হওয়ার কারণে নানান জাতের লাউ চাষ এখন সনাতন পদ্ধতির বদলে মাচায় চাষ করে অধিক লাভের স্বপ্ন দেখছেন স্থানীয় চাষিরা। প্রতিদিনই পাইকারী এবং খুরচা দরে জমিতে থেকে লাউ বিক্রি হওয়ায় এবং বাজারে দেয়ার ঝামেলা না থাকায় এটা আরও ভালো দিক দেখছেন চাষিরা।
দামও ভালো পাওয়ায় চাষীরা খুব খুশি। স্থানীয় কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শে উন্নত জাতের বীজ চাষিরা হাতে পাওয়ায় মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রায় প্রতি মাসেই গাছের ডগায় ডগায় নানান ওজনের লাউ ঝুলতে দেখাযায়। জেলার উত্তর ঈশ্বরপুর গ্রামের লাউ চাষী মাসুদ রানা জানান, একটু বাড়তি আয়ের আশায় প্রতিবেশি কৃষকের কাছ থেকে দেখে মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ করেছি। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে গাছগুলো ঠিক রাখায় গাছের ডগায় ডগায় প্রচুর পরিমাণে ছোট বড় মাঝাড়ি ওজনের লাউ ধরেছে। কৃষক ফরিদুল ইসলাম জানান, আমি মূলত ব্যবসা করি। বাড়ির পাশে নানান জাতের সবজি চাষের পাশাপাশি মাচা পদ্ধতিতে উন্নতমানের বীজ দিয়ে লাউ চাষ করি।
প্রায় পাঁচ মাস বয়সের মধ্যে ছোট বড় ও মাঝাড়ি মিলে প্রায় এক হাজার পিস লাউ বিক্রি করেছি। বাজার মূল্য শুরুতে ভালো পেলেও শেষ মহুর্তে আশানূরুপ দর পাইনি। ফলে যে পরিমাণ লাভের আশা করছিলাম তার চেয়ে কিছুটা কম হয়েছে। সব মিলে আমি দিনদিন সবজিসহ লাউ চাষের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি।
এব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুণ কুমার রায় জানান, মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ লাভজনক হওয়ায় বরেন্দ্রঞ্চলে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আমরা সরাসরি চাষিদেরকে আগ্রহী করে তোলার লক্ষে সার্বদা পরামর্শসহ উন্নত জাতের বীজ দিয়ে সহযোগিতা করছি। এই পদ্ধতিতে লাউ চাষে রোগবালাই কম ও ফলন বেশি হওয়ায় চাষিরা লাভবান হচ্ছে। প্রায় বারো মাসই এই লাউ গাছে ধরে। কীটনাশকমুক্ত হওয়ায় অতিদ্রুত বাজারে বিক্রি হয় এটি।