1. zillu.akash@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@dailynewsbangla.com : Daily NewsBangla : Daily NewsBangla
গোদাগাড়ীতে কোন ভাবেই থামছেনা বালুর পরিবর্তে অবৈধ মাটি উত্তোলন - dailynewsbangla
বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:১০ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
আজ থেকে কলকাতায় শুরু হয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলন ঢাকা দ‌ক্ষিন সি‌টি ক‌লোনী‌তে  প্রথম বা‌রের মত উদযাপিত হলো হ‌রিজনবাসীর বিদ‌্যা দে‌বির পুজা  বোয়ালমারীতে গরু চুরি করতে গিয়ে ৮ গরু চোর কারাঘরে সিন্ডিকেটের বেড়াজালে বন্দি বরেন্দ্র অঞ্চলের  ধান চাষীরা কম্বিং অপারেশনে ১০লখ টাকার অবৈধ জাল জব্দ মহাদেবপুরে অসহায় দু:স্থদের মাঝে ছাগল বিতরণ করলেন জামায়াত ইসলাম  নিয়ামতপুরে সহকারী কমিশনারের বাসা লক্ষ্য করে গুলি ধামইরহাটে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বাবা মায়ের কবরের পাশে শায়িত: বগুড়া-৩ আসনের সাবেক এমপি মরহুম আব্দুল মোমিন তালুকদারের দাফন সম্পন্ন ভেড়ামারায় কৃষি প্রযুক্তি মেলা-২০২৫ সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান

গোদাগাড়ীতে কোন ভাবেই থামছেনা বালুর পরিবর্তে অবৈধ মাটি উত্তোলন

ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৬ মে, ২০২৩

গোদাগাড়ীতে কোন ভাবেই থামছেনা বালুর পরিবর্তে অবৈধ মাটি উত্তোলন

রাজশাহী ব্যুরোঃ,’নদীর মাঝে পুকুর’ বিষয়টি অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। এমন দৃশ্য দেখা মিলেছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী ফুলতলা ও শেখেরপাড়া (বালুমহাল) ঘাটে। কোনভাবেই থামছেনা বালুর পরিবর্তে মাটি উত্তোলন।

দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত এই অবৈধ কাজটি করছেন টেন্ডার পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স উম্মে রোমান এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্ম আমিন ট্রেডার্স। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পদ্মা নদীর মাঝে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে চলছে বালুর পরিবর্তে অবৈধ মাটি উত্তোলনের কাজ।

বালুমহালের একটি উপজেলার ৬ মৌজার ভাটোপাড়া, উজানপাড়া, মাটিকাটা, মাদারপুর, বারইপাড়া, কেল্লাবারইপাড়া। আরেকটি উপজেলার ৫ মৌজার দক্ষিণ নির্মল চর, শেখেরপাড়া, এলাহীনগর, চরবার্নিশ ও পদ্মানদী। তবে এই বালুমহাল দুটি শেখেরপাড়া ও ফুলতলা ঘাট নামে পরিচিত। এই এলাকায় নদীর বুকে ট্রাক চলাচলের রাস্তা তৈরী করে বালুর পরিবর্তে মাটি তোলা হচ্ছে তীর থেকেই যা সম্পন্ন অবৈধ। এতে ভরা মৌসুমে ঐ এলাকায় নদীভাঙ্গনের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে বলে বলছে ঐ এলাকার ভুক্তভোগী অসহায় মানুষ ।

বালুমহালটিতে ইজারাদারদের কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ এলাকাবাসি। কিন্তু প্রভাবশালী ইজারাদার বা ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায় না এলাকার অসহায় ভুক্তভোগী মানুয়। সরেজমিনে বালুমহালটি ঘুরে দেখা গেছে, পদ্মা নদীর কোল ঘেঁষে রাজশাহী চাপাইনবাবগঞ্জ যাওয়ার হাইওয়ে রাস্তা। অবশ্য পরবর্তীতে বাইপাস রাস্তা হওয়ায় এই রাস্তাটিতে যাত্রীবাহী বাস ও অন্যান্য গাড়ির চলাচল অনেকটায় কমে গেছে। অথচ এমন হাইওয়ে রাস্তা থেকে বা নদীর পাড় থেকে মাত্র ৩০০-৪০০ মিটার দুরত্বে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। আর ট্রাক চলাচলের জন্য নদীর বুকে করা হয়েছে রাস্তা। অথচ এই নদীর চরে কৃষকরা চাষাবাদ করেন। সেখান থেকে শত শত টন বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়। কিন্তু এই মাটি উত্তোলনের কারনে কৃষকের শত শত বিঘা ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে। এছাড়াও নদীর পাড় থেকে মাটি তোলার কারণে নদীভাঙ্গনের আশঙ্কাও করছেন স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, এই বালুমহাল দুটির, একটি মেসার্স উম্মে রোমান এন্টারপ্রাইজের নামে যার সত্বাধিকারি মোঃ আনোয়ার হোসেন। আরেকটি মেসার্স আমিন টেডার্স অর্থাৎ আজিজুল আলম বেন্টুর নামে লীজচুক্তি রয়েছে। তবে বালুমহালগুলো এক প্রতিষ্ঠানের নামে থাকলেও প্রতিটি বালুমহালে পার্টনার বা শেয়ারদার রয়েছে কয়েক জন করে। বালুমহালগুলোর ইজারাদাররা সরকারের দেওয়া নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে বালুর পরিবর্তে মাটি উত্তোলন করছেন। শুধু তাই নয়, মাটি কেটে ইট ভাটাতে বিক্রি করছেন। অথচ বালুমহালের টেন্ডারে মাটি কাটার কথা কোথাও উল্লেখ নেই । স্থানীয়রা জানান, তীরের একটা অংশে এলাকার নারী পুরুষ গোসলের কাজসহ পরিবারের অনেক কাজ সারেন। কিন্তু বালুঘাটের জন্য বসানো টং ঘরের কারণে এলাকার নারীরা নদীতে নামতে পারেন না। এছাড়াও সারারাত দানবীয় বালুর ট্রাক চলার কারণে তাদের ঘুম হয় না।

স্থানীয়রা বলছেন, রাতে বিকট শব্দে পদ্মার তলদেশ থেকে বালুভর্তি দানবের মত ট্রাক সড়কে উঠে আসে। এতে রাস্তা পর্যন্ত কাঁপতে থাকে। এই শব্দে আমাদের ঘুম হয় না। ট্রাকে বালু পরিবহনের সময় ত্রিপল দিয়েও ঢাকা হয় না। স্থানীয় সাংবাদিকদের দাবি, সেখানে বালুঘাটের লোকজনের সাথে কথা বললে তারা সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এবং সাংবাদিকরা এসব বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেন হরহামেশাই।

অভিযোগ গুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে ইজারাদার আজিজুল আলম বেন্টুর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমরা ঠিক জায়গা থেকে মাটি ও বালু উত্তোলন করছি। আর মাটি কাটা যাবেনা এটা আপনাকে কে বলেছে? একপর্যায়ে তিনি সাংবাদিকের চরিত্র তুলে কথা বলেন। তবে সংবাদ প্রকাশ করার কথা বললে তিনি সাংবাদিককে মামলার হুমকি দেন। তিনি আরও বলেন, এর আগে কালেরকন্ঠ ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আর দুরত্বের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সামনা সামনি এসে কথা বলেন।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারীর ১৩ তারিখে একাধিক পত্রিকাতে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ হয় রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে পদ্মা নদীর পাড়ের মাটি যাচ্ছে ইট ভাটায়। অবশ্য ঐ সংবাদে একটি বালু মহালের কথা উল্লেখ ছিল। এরপর নড়েচড়ে বসে উপজেলা প্রশাসন। পরের দিন অর্থাৎ ১৪ ফেব্রুয়ারী সহকারি কমিশনার (ভুমি) সবুজ হাসান ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ৬ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন এবং সরকারের দেওয়া সিমানা অনুযায়ী বালু উত্তোলনের নির্দেশ দেন।

ব্যাপারটি নিয়ে আবারও গোদাগাড়ী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সবুজ হাসান জানান, সরকারি নির্দেশনা রয়েছে নদীর তীর থেকে দেড় থেকে দুই হাজার মিটার বা দেড় থেকে দুই কিলোমিটার দূরে নদীর তলদেশ থেকে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করতে হবে। এই নিয়ম এখনও বলবৎ রয়েছে। এর ব্যতয় হলে সেটা অবৈধ ও বেআইনি হবে। পরে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি এই উপজেলায় নতুন এসেছি, বিয়টি আমার জানা নাই। আপনি বললেন, আমি জেনে সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নিব। উল্লেখ্য, গত বছর অর্থাৎ ১৪২৯ থেকে ১৪৩০ সাল পর্যন্ত বালুমহালের লীজমুল্য ছিল দুই কোটি নব্বই লক্ষ টাকা (ফুলতলা) ও দুই কোটি সত্তর লক্ষ টাকা (শেখেরপাড়া)। এই বছরে লীজমুল্য হয়েছে ১৪৩০-৩১ সাল পর্যন্ত চার কোটি বিশ লক্ষ টাকা (৫ মৌজা-শেখেরপাড়া) ও চার কোটি ত্রিশ লক্ষ টাকা (৬ মৌজা- ফুলতলা বা ভাটোপাড়া)।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ