1. zillu.akash@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@dailynewsbangla.com : Daily NewsBangla : Daily NewsBangla
গ্রামের নাম ইসলামপুর - dailynewsbangla
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
ভারতে বসে শেখ হাসিনা দেশটাকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে – শাহাজান আলী জাল সনদে চাকরি নেওয়া ২০ শিক্ষকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা বাগমারার হাটগাঙ্গোপাড়া মডেল প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক কমিটি গঠন আর কোন সরকার যেন ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে: রাজশাহীতে জোনায়েদ সাকি দৌলতপুরে লাঠির আঘাতে আপেল লস্কর নামে ব্যাবসায়ীর মৃত্যু দৌলতপুরে এসএসসি ব্যাচ ১৯৮৬ এর প্রথম মিলন মেলা অনুষ্ঠিত নওগাঁয় শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু বোয়ালমারীতে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়ার আয়োজন ভেড়ামারায় ভুয়া ডাক্তার আটক, ভ্রাম্যমান আদালতে ৩ মাসের জেল অবসরজনিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

গ্রামের নাম ইসলামপুর

ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১২ মে, ২০২৩
মনিরুজ্জামান মিন্টুঃ
আমাদের গ্রামের নাম ইসলামপুর। গ্রামটি বেশ বড় ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ছিল। পদ্মার করাল গ্রাসে এ গ্রামের দুই- তৃতীয়াংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। আগে গ্রামটিতে অনেক সুন্দর ও মনোরম বসার জায়গা ছিল। দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ, নদীর পাড়, চায়ের দোকান, ক্লাব ঘর, কৃষ্ণচূড়া গাছের শান বাঁধানো বেদী, স্কুলের খোলা মাঠ, পাড়ার দোকান, বৈঠকখানা বা বাহির ঘর, বড় গাছের নিচে মাচা বেঁধে বসা হতো। বাড়ি গেলে সবার সাথে চলতে মজার আড্ডা। আমাদের গ্রামে একসাথে বসার ক্ষেত্রে ছোট-বড়, ধনী-দরিদ্র ও শিক্ষিত-নিরক্ষর কোনো ভেদাভেদ নেই। আলোচনায় যে যখন খুশি আসতে পারে, বসতে পারে, মতামত দিতে পারে এতে কোন পক্ষের কোন অসুবিা নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সবাই একসাথে বসে পুরাতন দিনের স্মৃতিচারণ করা হতো। আমরা সবাই ফিরে যেতাম সেই দুরন্ত শৈশব কৈশরে।
এখন গ্রামে বসার তেমন কোন মনোরম ও নিরিবিলি জায়গা নেই। বেশিরভাগ মানুষ যাত্রী ছাউনি, জিরো পয়েন্ট ও মেম্বার এর অফিস (ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদ, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের একমাত্র মেম্বার, যার নিজস্ব ভাড়া করা অফিস আছে) এই তিন জায়গাতেই বসার চেষ্টা করে। বাড়ি গেলে বেশিরভাগ সময় কাটাই মেম্বার অফিসে। দেখা হয়,কথা হয়, মত বিনিময় হয় নানান মতের ও নানান পেশার মানুষের সাথে। গ্রামের অনেক কিছুই জানার সুযোগ হয় এ বসাকে কেন্দ্র করে।
এবার ঈদে বাড়ি গিয়ে আমাদের আলোচনা চলছিল কেন অনেকে গ্রামে ঈদ না করে, বছরের পর বছর শহরে কিংবা শ্বশুরবাড়িতে ঈদ করে ? কেন একজন মানুষ , নিজের শিকড় ছেড়ে, বাপ-মা আত্মীয়-স্বজন, ভাই-বোন ও বন্ধুবান্ধব ছেড়ে দূর দেশে ঈদ করে? এসব মানুষকে কিভাবে আরও গ্রামমুখী করা যায়? এসব মানুষকে কিভাবে শিকড়ের সাথে বেশি বেশি সম্পৃক্ত করা যায়?
আমাদের একজন বন্ধু (বিশিষ্ট চিন্তাবিদ) বলল এ বিষয়টা নিয়ে আমাদের নিবিড় গবেষণা করা প্রয়োজন। এ গবেষক দল প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করবে এবং এই কারণগুলো বিশ্লেষণ করে আমরা আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।
আমাদের গবেষক দল স্থানান্তর তত্ত্বকে (Migration Theory) সামনে রেখে ঠেলা দেয়া বা ধাক্কা দেয়া উপাদান (push factor) ও টেনে ধরা বা আকর্ষণ করা উপাদান (pull factor) বিশ্লেষণ করে কতগুলো কারণ বের করেন। নিচে কারণগুলোকে তুলে ধরা হলো। আপনাদের মূল্যবান মতামত দিয়ে এটাকে আরও সমৃদ্ধ করবেন আশা করি।
ঠেলা দেয়া বা ধাক্কা দেয়া উপাদান (push factor) হিসেবে নিচের কারণগুলোকে তুলে ধরা যেতে পারে:
১. নদী ভাঙ্গনের ফলে স্থায়ী বসটভিটা ও ঘর,-বাড়ি না থাকে।
২. বাবা-মা উভয়ে না থাকা।
৩. ভাই বোনদের সাথে যোগাযোগ কম থাকা বা না থাকা।
৪. আত্মীয়স্বজনের সাথে যোগাযোগ কম থাকা।
৫. গ্রামীন পরিবেশে স্ত্রী ও সন্তানদের খাপ খাওয়াতে না পারা।
৬. বন্ধুর সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাওয়া।
৭. জমা-জমিও ভাগবাটোরা নিয়ে বিরোধ থাকা।
৮. সময় কাটানো, বিনোদন ও বসার জায়গার অপ্রতুলতা।
৯. ছোটদের সাথে বা নতুন প্রজন্মের সাথে যোগাযোগ কম থাকা কিংবা না থাকা।
১০. সন্তান মাদকের করাল গ্রাসে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকা।
১১. দীর্ঘদিন গ্রামে না থাকার কারণে সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশ বুঝতে না পারা।
১২. পরিবারের প্রত্যাশিত চাহিদা পূরণ করতে না পারা ও দ্বন্দ্ব।
১৩. আর্থিক অসচ্ছলতা বা ব্যয় বহনের ক্ষমতা না থাকে
১৪. গ্রামীণ চাঁদাবাজি কিংবা সামাজিক তহবিলে আর্থিক সহায়তার অক্ষমতা কিংবা কম থাকা।
১৫. সন্তানদের নিয়ে অতিমাত্রায় সতর্কতা এবং বেশি বেশি চিন্তা করা।
১৬. সন্তানদের খেলার সাথী ও বন্ধু কম থাকা কিংবা না থাকা
১৭. স্ত্রী সন্তানদের সাথে নিয়ে পরিবেশ সম্মত বসবাস করার জায়গা না থাকা।
১৮. স্ত্রীদের প্রত্যাশার চেয়ে গ্রামের বাড়িতে কাজের চাপ বেশি হওয়া।
১৯. পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের প্রত্যাশা অনুযায়ী দাওয়াত খাওয়াতে না পারা।
টেনে ধরা বা আকর্ষণ করা উপাদান (pull factor ) এসবের নিচের কারণগুলোকে তুলে ধরা হয়েছে
১. শহরে স্থায়ী বসবাস ও শহরের পরিবেশের সাথে অভিযোজিত হওয়া।
২. শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে যোগাযোগ ভাল বা সম্পর্ক ভাল থাকা।
৩. চাচা ফুফুদের চেয়ে মামা খালাদের বেশি চেনা
৪. শহরের নাগরিক সুবিধা বেশি পাওয়া যেমন বিদ্যুৎ, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র।
৫. সন্তানদের বন্ধু-বান্ধব খেলার সাথী শহর ভিত্তিক
৬. মানুষটি, স্ত্রী ও সন্তানের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়া। এদের বাইরে কোন মতামত প্রদানের ক্ষমতা না থাকা
৭. সঞ্চয় ও সম্পদ বাড়াতে সচেষ্ট হওয়া
৮. সন্তানদের স্থায়ী লেখাপড়া ও স্বাস্থ্য সুবিধার কত বিবেচনা করা
৯. পরিবারের সবাই একসাথে ছুটি না পাওয়া কিংবা আসার পরিবেশ না থাকা
আপনাদের মূল্যবান মতামত দিয়ে লেখাটাকে আরো সমৃদ্ধ করবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ