রাজশাহী ব্যুরো: আমি নেশার গন্ধে স্কুলে যেতে পারিনা, গন্ধে বাড়ি থেকে বেরও হতে পারিনা। কান্না ভরা কন্ঠে চরম আকুতি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলছিল রাজশাহী নগরীর কয়েরদাঁড়া (১৬ নং ওয়ার্ড) এলাকার শরিফুল ইসলামের ছেলে আফিক ইসলাম৷ আফিক আটরশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেনীর ছাত্র।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে তিনটায় কয়েরদাঁড়া বটতলা মোড়ে শত শত নারী পুরুষ মিলে মাদক ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে এক মধ্যবয়সি নারী সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য বলেন, আমরা মাদকমুক্ত সমাজ চাই। পুলিশ এই মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারছেনা! মাঝে মধ্যে দু-এক জনকে গ্রেফতার করলেও জামিনে ছাড়া পেয়ে আবারও তারা একই পেশায় লিপ্ত। তাদের (মাদক ব্যবসায়ীদের) চিৎকার চেঁচামেচিতে অতিষ্ঠ আমরা। সকাল নাই, দুপুর নাই, রাত নাই, যেকোন সময় এলাকার সাধারণ মানুষের সাথে মারামারি করছে। আমরা তাদের থেকে মুক্তি চাই, আমরা মাদকমুক্ত এলাকা চাই।
এলাকাবাসির থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বাড়ির পাশে কয়েরদাঁড়া বটতলা মোড়। সকাল হলেই সেখানে মাদক কারবারিদের আনাগোনা শুরু হয়। মাঝে মধ্যেই তাদের হট্টগোলে কান ভারি হয় এলাকাবাসির। মোড়ে একটি চেম্বারও খোলা হয়েছে। চেম্বারের সামনে সরকার দলীয় নেতাদের ব্যানার ফেষ্টুন ঝোলানো রয়েছে। এই ব্যানারের ছায়াতলে চলে মাদকের রমরমা ব্যবসা। এই ব্যবসার সাথে জড়িত ঐ এলাকার খোদাবক্সের ছেলে নাসিম ও আওয়াল, আওয়ালের ছেলে সানাউল্লাহ, মালদা কলোনীর বাবলু শেখের ছেলে (নাসিমের জামাই) বাবু। তবে বাবু এলাকার মাদক সম্রাট হিসেবে বেশ পরিচিত মুখ বলে সকলের দাবি।
মানববন্ধনকারিরা জানান, এলাকায় কেউ জমি কিনলে দিতে হয় চাঁদা, বাড়ি করলে দিতে হয় চাঁদা, বাসাবাড়িতে কেউ অনুষ্ঠান করলেও দিতে হয় চাঁদা। আমরা তাদের এমন কার্যকলাপে অতিষ্ঠি। আমরা তাদের থেকে বাঁচতে চাই, আমরা শান্তি চাই। উল্লেখ্য, গত ১৫ জানুয়ারি রাতে সামান্য কবুতর কবুতর করে হট্টগোল করে আওয়াল গংরা। এলাকাবাসিরা প্রতিবাদ করলে নেশা খেয়ে এসে মারামারি করে আওয়াল, নাসিম, বাবু, সানাউল্লাহ’রা।
বিষয়টি নিয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবির এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, গত দুই দিন আগে জমিজামা ও কবুতর সংক্রান্ত একটি মারামারি হয়েছে। কিন্তু আজকে মানববন্ধন করেছে এটা জানি না। মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ সব সময় সোচ্চার ছিল, আছে, থাকবে। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। মাদকের সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিব