মান্দায় আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় সমবায় সমিতির মালিককে পিটুনি
মোহাম্মদ আককাস আলী :
নওগাঁর মান্দায় আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় সোনালী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির মালিক আবদুল মান্নানকে পিটুনি দিয়েছেন গ্রাহকেরা।
রোববার দুপুরে উপজেলার সতিহাট বাজার এলাকায় তাকে পিটুনি দিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে তাকে উপজেলার মৈনম এলাকায় নিয়ে নিজেদের কবজায় রাখেন বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা।
আবদুল মান্নান সোনালী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এবং মৈনম ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা।
জানতে চাইলে আবদুল মান্নান বলেন, ‘গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত হিসেবে নেওয়া টাকা ক্ষুদ্রঋণ হিসেবে সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। সেই টাকা মাঠেই পড়ে আছে। যারা সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নিয়েছেন, বিভিন্ন অজুহাতে তারা টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। মাঠ থেকে টাকা ওঠানোর চেষ্টা চলছে। টাকাগুলো উঠে এলে গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। আমার টাকা ফেরত দেওয়ার ইচ্ছা আছে। কিন্তু এরপরও সমিতির কিছু সদস্য আমাকে হেনস্তা করলেন। এ বিষয়ে আমি আইনি পদক্ষেপ নেব।’গ্রাহকদের অভিযোগ, বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে মাসিক ও বার্ষিক এবং স্থায়ী আমানত হিসেবে গ্রাহকদের কাছে টাকা সংগ্রহ করেন সমিতির সভাপতি আবদুল মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক শাহিন আক্তার। শুরুর দিকে মুনাফার টাকা দিলেও বেশ কয়েক দিন ধরে মুনাফা ও আমানতের টাকা ফেরত দিতে তারা টালবাহানা করছেন। এ অবস্থায় আমানতের টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিলে সমিতির সাইনবোর্ড গুটিয়ে নিয়ে সটকে পড়ার পাঁয়তারা করছিলেন তারা দুজন। বেশ কয়েক দিন ধরে আবদুল মান্নান ও সমিতির অন্য কর্মকর্তারা আত্মগোপনে ছিলেন। রোববার সতিহাট বাজারে তাকে দেখতে পেয়ে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা তাকে আটকে রাখেন।
সূত্রে প্রকাশ,গত পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করেছে সমিতিটি। সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে আমানতের নামে টাকা সংগ্রহ করেন। পাঁচ বছরে আড়াই শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা সংগ্রহ করেন। প্রতি এক লাখ টাকায় মাসে দুই হাজার টাকা করে মুনাফার দেওয়ার শর্তে গ্রাহকেরা সেখানে টাকা রাখতেন। প্রথম দিকে সঠিকভাবে মুনাফার টাকা পরিশোধ করা হলেও ছয় মাস ধরে টালবাহানা শুরু করেন সমিতির কর্মকর্তারা।
মান্দা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আবদুর রশীদ জানান, বেশ কয়েক দিন ধরে সোনালী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের কার্যক্রম বন্ধ আছে। এ অবস্থায় গ্রাহকের টাকা আটকে রাখা সঠিক হয়নি। আমানতের টাকা ফেরত পাওয়া গ্রাহকের ন্যায্য অধিকার। তবে টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়াও সঠিক হয়নি।
মান্দা থানার ওসি মনসুর রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।