1. zillu.akash@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@dailynewsbangla.com : Daily NewsBangla : Daily NewsBangla
আন্দোলন নয়, জমি নিয়ে মারামারি—তবুও জুলাই যোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন বাঘার জাহিদ! - dailynewsbangla
সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ১০:০৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
ভেড়ামারায় বিজিবির অভিযানে ৩০ লাখ টাকার কারেন্ট জাল আটক ও ধ্বংস আন্দোলন নয়, জমি নিয়ে মারামারি—তবুও জুলাই যোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন বাঘার জাহিদ! ঘোড়াঘাটে মাদকবিরোধী অভিযানে নারী সহ ২ জন আটক ভেড়ামারায় বিএনপির উঠান বৈঠক নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ মামলায় এক আসামির যাবজ্জীবন ঘোড়াঘাটে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৫ইং মূল্যায়ন ও সমাপনী আলোচনা সভা বোয়ালমারীতে ধর্ষণ মামলায় ইমাম গ্রেপ্তার লালপুরে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র জলাবদ্ধতায় অচল, চিকিৎসা সেবায় হতাশ রোগীরা  ঘোড়াঘাটে সেনাবাহিনী ও ট্রাফিক বিভাগের যৌথ চেকপোস্ট অভিযান নির্বাচন নিয়ে বাঁকা পথে গেলে দাঁতভাঙা জবাব দেবে যুবদল: শরীফ উদ্দিন জুয়েল

আন্দোলন নয়, জমি নিয়ে মারামারি—তবুও জুলাই যোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন বাঘার জাহিদ!

ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

পারিবারিক দ্বন্দ্বে আহত হয়েও ‘জুলাই যোদ্ধা’ গেজেটে নাম পেলেন বাঘার জাহিদ! আন্দোলন নয়, জমি নিয়ে মারামারি—তবুও জুলাই যোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন জাহিদ!

রাজশাহী ব্যুরো: সরকার পতনের আন্দোলনে নয়, পারিবারিক বিরোধের জেরে আহত হয়েছিলেন বাঘার ছেলে জাহিদ হাসান (২২)। অথচ সরকার পতনের আন্দোলনে অংশগ্রহণের দাবি করে ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়েছেন তিনি। এমন ঘটনায় প্রকৃত আন্দোলনকারীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। জাহিদ রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চন্ডিপুর এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে।

সুত্র বলছে, ঢাকায় চাকরি করতেন জাহিদ। গত বছরের ১ আগস্ট ঢাকার চাকরি ছেড়ে নিজ গ্রামে ফেরেন। তখন দেশে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন চলছিল। গ্রামে ফেরার পর জাহিদ সেই আন্দোলনকে পুজি করে পূর্বের পারিবারিক শত্রু মুস্তাক আহমেদ নামের এক স্কুলে শিক্ষককে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। কারন তার পরিবারের সাথে মুস্তাক পরিবারের দীর্ঘদিনের জমি সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব ছিল। পরে অর্থাৎ ২৪ সালের ৫ আগষ্ট সেই স্কুল শিক্ষকের পরিবারের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান জাহিদ। এতে পাল্টা হামলার শিকার হয়ে সামান্য আহতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন জাহিদ। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।

পরবর্তীতে জাহিদের বাবা রবিউল ইসলাম এঘটনায় পূর্বশত্রুতার জের উল্লেখ করে বাঘা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যেখানে ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। পরবর্তীতে এই ঘটনার রেস ধরে জাহিদপক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালায়। এমন পরিস্থিতিতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ রঞ্জুর সমঝোতায় ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আপোষে মিমাংসা করে দেন। অথচ সেই চিকিৎসার কাগজপত্র উপস্থাপন করে জাহিদ নিজেকে সরকার পতনের আন্দোলনে আহত হিসেবে ‘জুলাই যোদ্ধা’ তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেন এবং গেজেটপ্রাপ্ত হন। তার গেজেট নম্বর ৮৩৪। মেডিকেল কেস নাম্বার ৫৯৯০। এঘটনায় হাসপাতালের রিলিজপত্রের কপি, ঐ ঘটনার মামলার কপি এবং ৬ লক্ষ টাকার আপোষ মিমাংসার কপি গণমাধ্যমের নিকট সংরক্ষিত রয়েছে।

এ বিষয়ে মামলার বাদী ও জাহিদের বাবা রবিউল ইসলামের সাথে কথা বললে প্রথমে তিনি দ্বিধাদ্বন্দে পড়েন। পরে স্বীকার করেন, “জাহিদকে স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগ সমর্থক লোকজন মেরেছিল। তবে আন্দোলনে সে অংশ নিয়েছিল কিনা তিনি জানেন না।” পরে তিনি জাহিদের সাথে কথা বলতে বলেন। তারপর কথা হয় জাহিদের সাথে। শুরুতে তিনি প্রতিবেদকের উপর চড়াও হন। এরপর দীর্ঘক্ষণ কথা হয় জাহিদের সাথে। তিনি আন্দোলনে অংশগ্রহণের দাবি করলেও তেমন কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। পরে জাহিদের হামলার ঘটনা নিয়ে কথা হয় বিবাদী নয়নের সাথে। তিনি জানান, জাহিদের পরিবারের সাথে জমি নিয়ে তাদের দীর্ঘদিনের শত্রুতা রয়েছে। ৫ আগষ্টে জাহিদ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের মারতে এসেছিলেন। কিন্তু উল্টো সে আহত হয়ে ফিরে যায়। এঘটনায়তাদের বাপ চাচাদের উপর মামলা করেছে জাহিদ পরিবার। পরে রঞ্জু চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে মিমাংসা করে নিয়েছে। তারপরও জাহিদ দলবল নিয়ে তেদের বাড়িতে হামলা চালিছে বলে দাবি করেছেন। নয়নের দাবি, জাহিদ সাবেক প্রতিমন্ত্রী সাহরিয়ার আলম এমপির আস্থাভাজন আওয়ামী নেতা ও বাঘা পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান পিন্টু ক্যাডার হিসেবে কাজ করত। সেই ক্ষমতা এখনও দেখাতে চাই। সে এখন ছাত্রদলের রাজনীতির পরিচয় দিচ্ছে।

এঘটনায় চন্ডিপুর গ্রামের একজন বাসিন্দা বলেন: “আমরা সবাই জানি ৫ আগস্ট দুপুরের পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা এলাকায় ছিল না। তাই ওই দিন রাতে আওয়ামী সমর্থকরা কাউকে মারতে পারে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। প্রতারণার মাধ্যমে কেউ আন্দোলনকারীর স্বীকৃতি পেলে প্রকৃত যোদ্ধাদের প্রতি বড় অবিচার হবে।” কৃষক রহিম নামের এক কৃষক বলেন: “যারা সত্যিকারের আন্দোলন করেছে, তারা এখনও গেজেট পায়নি। অথচ কিছু মানুষ মিথ্যা কাগজপত্র দিয়ে গেজেট পাচ্ছে। এটা শুধু দুর্নীতি নয়, জনগণের সাথে রীতিমত প্রতারণা।”

স্থানীয় এক শিক্ষক বলেন: “জুলাই আন্দোলন একটি ঐতিহাসিক অধ্যায়। সেখানে অংশগ্রহণ না করেও কেউ যদি ভুয়া প্রমাণ দেখিয়ে গেজেট পায়, তবে আন্দোলনের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে। প্রশাসনকে অবশ্যই বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। এই ধরনের মিথ্যা দাবির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সুবিধা নেওয়া মানে জনগণের টাকা চুরি করা।”

বিষয়টি নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহীর জেলা প্রশাসনের এক সিনিয়র সহকারি কমিশনার এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, “এমন অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তদন্তও করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। আপনার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। আমরা জাহিদের ব্যাপারে রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি, সিদ্ধান্ত সেখান থেকে আসবে। এমন প্রতারণার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রাহন করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় গেজেট বাতিল করলে পরবর্তীতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এমন ন্যক্কারজনক ঘটনায় প্রকৃত আন্দোলনকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, “যারা সত্যিকারের আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, তারা এখনও স্বীকৃতি পাননি। অথচ ভুয়া পরিচয় দিয়ে অনেকে সুবিধা নিচ্ছে। এর উৎকৃষ্ট উদাহরন আজকের এই জাহিদ হাসান।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ