রাজশাহী ব্যুরোঃ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে( রুয়েট) আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে সারাদেশ যখন শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া মাহফিল ও গরীবদের মাঝে খাবার বিতরণ নিয়ে ব্যস্ত ঠিক তখন রুয়েটে ক্ষমতার দাপট দেখাতে ব্যস্ত ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, ৩ নভেম্বর ( বুধবার) দুপুর আনুমানিক দেড়টা থেকে দুইটার দিকে এই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা সূত্রে জানাযায়, জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে ভোর থেকে বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়ে কাজ শুরু করে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তানভির আহমেদ আবির ও বর্তমান কমিটির কৃষি বিষয়ক সম্পদক মোঃ সামিউর রহমান আল নাহিয়ান।
তাদের নেতৃত্বে প্রথম প্রহরে ফুলের ডালা সাজিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে যায় জাতীয় চার নেতার অন্যতম নেতা শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান হেনার মাজারে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে অন্যান প্রোগ্রাম শেষে রুয়েট সিসিআর এর পাশে চায়ের দোকানে কর্মীদের নিয়ে আলোচনা করে আবির ও নাহিয়ান।
আলোচনার এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসফাক ইয়াসির ইপু ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান তপুর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু হলের দিক থেকে ডাইরেক একশান শ্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে সিসিআর এর সামনে আসে এবং আবির ও নাহিয়ানকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। পরিবেশ বেগতিক হলে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার আলী তুহিন ও সঙ্গীয়ফোর্স এসে উপস্থিত হয়। এরপর ওসি সাহেব পরিবেশ স্বাভাবিক করতে আবির ও নাহিয়ানকে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যেতে বলে।
আবির ও নাহিয়ান জাতীয় শোক দিবসের যথাযথ মর্যাদা অক্ষুন্য রাখতে ও ওসিকে সম্মান জানিয়ে সেখানে থেকে চলে যায়। তাতে ইপু ও তপু আনন্দে বাজে ও সম্মাহানীকর ভাষা ব্যবহার করে শ্লোগান দিতে থাকে। পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আবির ও নাহিয়ান গ্রুপের তিনজনকে পেয়ে ইপু ও তপুর নেতৃত্বে বেধড়ক মারধর করে।
উল্লেখ্য যে, ইসিই বিভাগের সোহানুর রহমান ও আহমেদ হাসান বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্দ্যোগে ড. ওয়াজেদ মিয়া সায়েন্স একাডেমিতে বিনামুল্যে শিক্ষাদান করেন।
পরে বিষয়টি নিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তানভির আহমেদ আবির ও বর্তমান কমিটির কৃষি বিষয়ক সম্পদক মোঃ সামিউর রহমান আল নাহিয়ান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, বর্তমান কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসফাক ইয়াসির ইপু ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল রহমান তপুর নেতৃত্বে মেকানিক্যাল বিভাগের উসমান হায়দার তমাল, আরেফিন রিয়াদ, সিভিল বিভাগের ফাহমিদ লতিফ লিয়ন, ইলেক্ট্রিক এন্ড ইলেকট্রনিক বিভাগের রাকিব শাহরিয়ার, লাশিউর রহমান নাহিদ সহ বিশ থেকে পঁচিশ জন সংঘবদ্ধ হয়ে ইসি বিভাগের সোহানুর রহমান সোহান, আহমেদ হাসান, মেকানিক্যাল বিভাগের সৌভিক ঘটককে মারধর করে। কিন্তু আজকে আমাদের শোকের দিন তাই আমরা মার খেলেও কোন ধরনের পদক্ষেপ বা কোন অভিযোগ করিনি।
তারা (ইপু ও তপু) জানে আগামীতে বিতর্কিতদের কোন জায়গা নেই। এই ভেবে তারা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ক্যম্পাসে কাউকে থাকতে দিবেনা ভেবে হট্টোগোল করার চেষ্টা করছে। আমরা রুয়েটের মুল ফটকে শোক দিবসের ব্যানার টানিয়ে ছিলাম, সেটাকে ভাংচুর করেছে ইপু’র গ্রুপ। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বিশ্বাস করি, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ভালবাসি। আমরা নগরপিতার নেতৃত্বে ছাত্রলীগের হাত ধরে আগামী দিনের যেকোন আন্দোলনে পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ।
পরে বর্তমান কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসফাক ইয়াসির ইপু’র সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, এখানে ছাত্রলীগের মধ্যে কোন ধরনের ঘটনা ঘটেনি। রুয়েট ক্যম্পাসে বহিরাগতরা এসে হট্টোগোল করছিল। পরে প্রশাসন তাদের বেরিয়ে যেতে বলে। তাদের কোন মারধর করা হয়নি। এবিষয়ে রুয়েট প্রশাসানের ছাত্রপরিচালক (ডিএসডাবলু) ড. রবিউল আওয়াল এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।